কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বহু বছর ধরে চলমান সংকট নিরসনে মধ্যস্থতা করার জোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাজার বছর ধরে চলা এই সংকট সমাধানের পথ তিনি বের করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি তিনি সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা মেনে নেওয়ার জন্য দুই দেশের প্রশংসা করেন। বুধবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। 

ট্যামি ব্রুস বলেন, ট্রাম্পই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি বিশ্বের বড় বড় সংকট সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আলোচনার টেবিলে বসাতে সক্ষম হয়েছেন। এর আগে এটা কেউ ভাবতেও পারেনি। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের ব্যাপারেও তিনি আশাবাদী। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় এই আঞ্চলিক সংকটের সমাধান হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।     

পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছে। বর্তমানে দলটি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে। সফরে তারা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালিসন হুকারের সঙ্গে বৈঠক করেন। সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতাসহ পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয়-সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। হুকার চলমান যুদ্ধবিরতির প্রতি মার্কিন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

ডন জানায়, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পর থেকে পাকিস্তান ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে এখন আরও বেশি তৎপর। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নয়াদিল্লির ক্রমবর্ধমান লবিংয়ের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে আন্তর্জাতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় পাকিস্তান সায় দিলেও ভারত এই মধ্যস্থতায় রাজি নয়। দিল্লির বক্তব্য, কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। এ নিয়ে অন্য কেউ মাথা ঘামাক তা তারা চায় না।   

অন্যদিকে, ট্রাম্পের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পল কাপুর পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তিনি মার্কিন সিনেটে একটি শুনানি চলাকালে বলেন, নিরাপত্তা, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায় ওয়াশিংটন। 
জিও টিভি জানায়, পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে পল কাপুরের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, পল কাপুর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন।  


 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র পরর ষ ট র সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

হোটেল ডোরচেস্টারে ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক দুপুরে

যুক্তরাজ্য সফররত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। 

আজ ১৩ জুন (শুক্রবার) লন্ডন সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা থেকে ৪টা) তাদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকের বিষয়ে দুদিন আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, এই বৈঠকের কোনো ফরমেট নেই। যেহেতু তারেক রহমান বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতা, তাই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিংটি হবে।

শফিকুল আলম বলেন, “দুজনের আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের দিনক্ষণ, সংস্কার ও জুলাই চার্টারসহ যে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।”

এদিকে, মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ১৩ তারিখ ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টাইমে এই সময়টা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকের ভেন্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “লন্ডনে যে হোটেলটিতে (হোটেল ডোরচেস্টার) উনি (প্রধান উপদেষ্টা) আছেন সেটাই ভেন্যু। ওখানেই তার সঙ্গে ইংল্যান্ডে হাউজ অব কমন্সের ডেপুটি লিডার অব দ্য হাউজ দেখা করবেন তারেক রহমান সাহেবের বৈঠকের পরে। এরপরে অন্যান্য নেতা যারা আছেন তারা ওখানেই দেখা করবেন। ভেন্যু একটাই।”

চার দিনের সরকারি সফরে সোমবার (৯) সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময় কারামুক্ত হয়ে সপরিবারে লন্ডনে চলে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের সময়ে তার অনুপস্থিতিতে পাঁচ মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়। দায়ের করা হয় শতাধিক মামলা। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। 

যেসব মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল, একে একে তার সবগুলোতেই খালাস পান খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। মুক্ত খালেদা এ বছরই চিকিৎসার জন্য লন্ডন ঘুরে এসেছেন। সেখানে ছেলের বাসাতেই তিনি ছিলেন। তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানও ১৭ বছর পর গত মে মাসে ঢাকা ঘুরে যান।

তবে তারেক রহমান কবে ফিরবেন, তার উত্তর বিএনপি নেতাদের কাছে নেই। তারা বলে আসছেন, ‘সময় হলেই’ তারেক রহমান ফিরবেন। আর দেশে না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই দল চালাচ্ছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত বৈঠক করছেন।

ঢাকা/হাসান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ