দেশের ৫৮ জেলায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ, বেশি এক বিভাগে
Published: 13th, June 2025 GMT
ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের ৫৮টি জেলায় ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি রোগী দেখা যাচ্ছে বরিশাল বিভাগে এবং একই বিভাগের বরগুনা জেলায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ হিসাবে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আরও নতুন ১০৮ জন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তির তথ্য দিয়েছে কন্ট্রোল রুম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে। এই বিভাগে নতুন ৮৯ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরপর বেশি রোগী ঢাকা বিভাগে, নতুন মোট ১৪ জন। চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ভর্তি হয়েছেন যথাক্রমে চারজন ও একজন। খুলনা, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলায় গতকাল কোনো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হননি।
এ বছর গতকাল পর্যন্ত যে ছয় জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি, তার মধ্যে আছে চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও ও সুনামগঞ্জ।
গত মার্চ থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যার ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ওই মাসে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৩৬। এপ্রিলে ভর্তি হন ৭০১ জন। পরের মাসে অর্থাৎ মে মাসে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৭৩ জনে। আর জুনের প্রথম ১২ দিনে রোগী হয়েছে ১ হাজার ৬৬ জন।
বরিশাল-বরগুনায় রোগী বেশিদেশে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৪১১ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৩৬৪। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৪৪ শতাংশ এই বিভাগেই। আক্রান্ত সবচেয়ে কম রংপুর ও সিলেট বিভাগে। এই দুই বিভাগে এ পর্যন্ত ১৯ জন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
জেলাভিত্তিক হিসাবে রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলায়। এই জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ দেশের
মোট আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীর ২৭ শতাংশ উপকূলের এই জেলায়।
গত পাঁচ দিনের ব্যবধানে বরগুনায় তিনজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো। এ নিয়ে এই জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পাঁচজনে দাঁড়াল। এর মধ্যে তিনজনই নারী। বুধবার বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই রোগীর মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন চান মিয়া (৭৫) ও ঘোষাই দাস (৮৫)। চান মিয়া বুধবার দুপুরে মারা যান। এর সাত ঘণ্টা পর বরগুনা পৌর শহরের থানাপাড়া এলাকার ঘোষাই দাস মারা যান। এর আগে গত ২৫ মার্চ ও ২৬ এপ্রিল আরও দুজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাসকিয়া সিদ্দিকী বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় অন্য রোগীদের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আমরা ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতেই হিমশিম খাচ্ছি। তার ওপর এখানে চিকিৎসক-সংকট প্রকট।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মৃত্যু বেশিএ বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৩ জন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১৫ জন। বেশি মৃত্যু ঘটেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে, মোট ১৩ জন।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, বরগুনা]
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর শ ল ব ভ গ জন ড ঙ গ র বরগ ন হয় ছ ন সবচ য় গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
আরো একজনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র, আশঙ্কাজনক ৩
রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ আরো একজনকে ছাড়পত্র দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার নাম ফারজানা ইয়াসমিন (৪৫)। তিনি ওই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা। এ ঘটনায় এখনো আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২ জন।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসির উদ্দিন
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার আইসিইউতে ছিল ৩ জন। তবে তাদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় আজ তাকে এইচডিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন মোট ৩২ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ৩ জন ক্রিটিক্যাল ক্যাটাগরিতে আর তাদের চেয়ে কম গুরুতর ৭ জন রয়েছে সিভিয়ার ক্যাটাগরিতে। বাকিরা অন্যান্য ওয়ার্ড ও কেবিনে ভর্তি রয়েছে। গত তিন দিনে নতুন করে কোনো মৃত্যু নেই।”
আরো পড়ুন:
সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে বললেন ‘ভুল করিনি, মাথা গরম ছিল’
মাদ্রাসার মাঠ দখল করে ইউপি সদস্যের বীজতলা
ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, “৩২ জনের ১৪ জন শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। বাকিরা স্টেবল রয়েছে। ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত সব রোগীর একাধিকবারসহ সব মিলিয়ে ১৫৮টি ছোট-বড় অপারেশন করা হয়েছে।”
বার্ন ইনস্টিটিউটে আর আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করা হবে না। প্রেস রিলিজের মাধ্যমে প্রতিদিনের আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান ইনস্টিটিউটের পরিচালক।
ঢাকা/সাইফ