সাম্পদোরিয়ার মাঠে গতকাল রাতে সিরি ‘বি’ রেলিগেশন প্লে–অফ প্রথম লেগে ২-০ গোলে হেরেছে সালেরনিতানা। সেখান থেকে ফেরার পর আজ সালেরনিতানার পক্ষ থেকে জানানো হয়, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে তাঁদের খেলোয়াড় ও ক্লাবের স্টাফ মিলিয়ে মোট ২১ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ কারণে ইতালিয়ান ক্লাবটির অনুশীলনও বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুনবিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি১১ ঘণ্টা আগে

সালেরনিতানা জানিয়েছে, ইতালির উত্তরাঞ্চলের জেনোয়া শহরে সাম্পদোরিয়ার মাঠ লুইজি ফেরারিসে হারের পর দক্ষিণাঞ্চলের শহর সালের্নোয় ফেরার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন খেলোয়াড় ও স্টাফরা, যা ক্লাবটির ভাষায় ‘মারাত্মক বিষক্রিয়া’।

সালেরনিতানার বিবৃতিতে বলা হয়, পরিস্থিতি এতই খারাপ ছিল যে ‘সালের্নো বিমানবন্দরে অবতরণের পর অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হয় এবং বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ৮ জন স্কোয়াডের খেলোয়াড়। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই ম্যাচের আগে সালেরনিতানার খেলোয়াড়েরা যে হোটেলে উঠেছিলেন, পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়েছে। সালের্নোয় ফেরার পথে উড়োজাহাজে এই হোটেলের প্রস্তুত করার খাবার খেয়েছেন দলটির খেলোয়াড়েরা।

আরও পড়ুন১০–০ গোলের জয় ক্লাব বিশ্বকাপের রেকর্ড, কিন্তু বায়ার্নের ইতিহাসে নয়২১ ঘণ্টা আগে

সাবেক সিরি ‘আ’ চ্যাম্পিয়ন ও ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে খেলা সাম্পদোরিয়া তাদের ৭৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সিরি সি-তে (তৃতীয় বিভাগ) নেমে গিয়েছিল গত মাসে। তবে পয়েন্ট তালিকায় দলটির ওপরে থাকা ব্রেসিয়ার ৪ পয়েন্ট কেটে নেওয়ায় সিরি ‘বি’তে টিকে থাকার দ্বিতীয় আরেকটি সুযোগ পেয়ে যায় সাম্পদোরিয়া। সুযোগ পায় সালেরনিতানার সঙ্গে প্লে–অফ খেলে টিকে থাকার।

প্লে–অফের ফিরতি লেগ আগামী শুক্রবার, তবে সালেরনিতানার পক্ষ থেকে এই ম্যাচ পেছানোর অনুরোধ করা হয়েছে, ‘যা ঘটেছে তা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত এবং এই মৌসুমের চূড়ান্ত মিনিটগুলো স্বাভাবিক ও শান্ত থেকে খেলার বিষয়ে এটা ঝুঁকি তৈরি করেছে।’

সাম্পদোরিয়ার অধিকাংশ শেয়ারের মালিক সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী জোসেপ তে। পতন ঠেকাতে গত এপ্রিলে ক্লাবের আইকন আলবেরিকো ইভানি ও আত্তিলো লোমবার্দোকে কোচ বানিয়ে ফিরিয়েছে ক্লাবটি। লিওনার্দো সেমপ্লাইস, আন্দ্রেয়া সোত্তিল ও আন্দ্রেয়া পিরলোর পর এ মৌসুমে সাম্পদোরিয়ার চতুর্থ কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ইভানি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম পদ র য় র স ল রন ত ন র

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ