মোটরসাইকেলে দুই বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল কিশোর জুনায়েদ হোসেন (১৬)।

তাদের গন্তব্য ছিল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত। তবে সীতাকুণ্ড থানাধীন বায়েজিদ সংযোগ সড়কের জিরো পয়েন্টে এলাকায় লরির চাপায় মৃত্যু হয়েছে জুনায়েদের। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জুনায়েদ ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরহাট রফিক সওদাগর বাড়ির মরহুম মো.

জাফরের ছোট ছেলে। সে পেশায় টাইলস মিস্ত্রি ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সোহেল রানা জুনায়েদের মৃত্যুর খবরটি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জুনায়েদ মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। তারা বায়েজিদ সংযোগ সড়ক থেকে ফৌজদারহাট হয়ে পতেঙ্গার আউটার রিং রোডে আসছিল। তবে সংযোগ সড়কের জিরো পয়েন্ট পৌঁছালে একটি ব্যক্তিগত কার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। জুনায়েদ ছিটকে গিয়ে পড়ে পাশ দিয়ে যাওয়া একটি লরির নিচে। সেই লরির চাপায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। বাকি দুজন আহত হন।

সোহেল রানা জানান, জুনায়েদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি দুজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা তিনটার দিকে জুনায়েদ গ্রামের বাড়ি থেকে শহরে উদ্দেশে রওনা দেয়। একটি মোটরসাইকেলে তিনজন আর দুটিতে ছিল তিনজন।

জুনায়েদের মামা মো. রাশেদ বলেন, জুনায়েদরা তিন ভাইবোন। জুনায়েদ ছিল সবার ছোট। কয়েক বছর আগে তার বাবা প্রবাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এর পর থেকে জুনায়েদের মা দুঃখকষ্টে তাদের মানুষ করছেন। এখন মায়ের কান্না থামছে না।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ