এক টনের বেশি কোকেন চোরাচালানে জড়িয়ে ডাচ ফুটবলার গ্রেপ্তার
Published: 21st, June 2025 GMT
আয়াক্সের সাবেক উইঙ্গার কুইন্সি প্রোমেসকে আরব আমিরাত থেকে নেদারল্যান্ডসে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে। মাদক চোরাচালান ও মারাত্মকভাবে আক্রমণের অভিযোগে নেদারল্যান্ডসে সাড়ে সাত বছর জেল খাটতে হবে দেশটির জাতীয় দলের হয়ে ৫০ ম্যাচ খেলা সাবেক এই ফুটবলারকে।
আরও পড়ুনসবকিছু জিততেই রেকর্ডভাঙা দামে লিভারপুলে যোগ দিলেন জার্মান তরুণ ভির্টৎস১ ঘণ্টা আগেবিবিসি জানিয়েছে, নেদারল্যান্ডস পুলিশের অনুরোধে দুবাইয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দুবাই পুলিশ। ২০২০ সালে বেলজিয়াম থেকে নেদারল্যান্ডসে এক টনের বেশি কোকেন চোরাচালানে কুইন্সির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ার পর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ডাচ আদালত তাঁকে ছয় বছর কারাবাসের সাজা দেন। ডাচ সংবাদমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, দুবাই পুলিশ চলতি মাসের শুরুতে কুইন্সিকে গ্রেপ্তার করে। ডাচ বিচার বিভাগের অধীনে ভাড়া করা বিমানে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
তবে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, ২০২০ সালে ব্রাজিল থেকে ১ হাজার ৩৬৩ কেজি কোকেন চোরাচালানে সংশ্লিষ্টতার জন্য কুইন্সি দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। একই দেশের সংবাদমাধ্যম ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প বন্দর ব্যবহার করে নেদারল্যান্ডসে কোকেন নিয়ে যান কুইন্সি।
নেদারল্যান্ডসে কৌঁসুলিদের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, ৩৩ বছর বয়সী কুইন্সিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি দুটি অভিযোগই অস্বীকার করে আপিল করেছেন।
আরও পড়ুনএবার চেলসিকে ধরাশায়ী করে ইতিহাস গড়ল আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ২ ঘণ্টা আগে২০২৩ সালের জুনে আরেকটি মামলায় কুইন্সিকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেন নেদারল্যান্ডসের আদালত। এই মামলার ঘটনা ২০২০ সালের জুলাইয়ে পারিবারিক পার্টিতে। চুরি যাওয়া গয়না নিয়ে বিবাদের সময় নিজের এক আত্মীয়র হাঁটুতে ছুরি মারেন কুইন্সি। কারাবাসের পাশাপাশি তাঁকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
২০১১ সালে ডাচ ক্লাব টুয়েন্টে দিয়ে সিনিয়র ফুটবলে অভিষেক কুইন্সির। এরপর ২০১৪ সালে তিনি পাড়ি জমান রাশিয়ান ক্লাব স্পাতার্ক মস্কোয়। চার বছর সেখানে থেকে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সেভিয়া ও আয়াক্স ঘুরে আবারও স্পাতার্ক মস্কোয় ফিরে যান কুইন্সি। সেখানে তিন বছর থেকে গত বছর দুবাই ইউনাইটেডে যোগ দেন।
নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলে কুইন্সির অভিষেক ২০১৪ সালে। ২০২১ সালে ইউরোর শেষ ষোলোয় চেক প্রজাতন্ত্রের কাছে ডাচদের হারের পর জাতীয় দলে আর ফিরতে পারেননি কুইন্সি।
নেদারল্যান্ডসে কোন কারাগারে কুইন্সি সাজা খাটবেন, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক