কূটনীতির নামে ‘প্রতারণা’র কঠোর জবাব দেবে ইরান
Published: 23rd, June 2025 GMT
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার কথা জানিয়েছে তেহরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রভাবশালী একজন উপদেষ্টা মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই প্রণালি বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেল পরিবহনের প্রধান রুটগুলোর একটি। খবর সিএনএনের।
খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ও কট্টরপন্থি কেহান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক হোসেইন শরিয়তমাদারি আগে নিজেকে দেশটির সর্বোচ্চ নেতার ‘প্রতিনিধি’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
টেলিগ্রামে কেহান পত্রিকার একটি বার্তায় শরিয়তমাদারিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এখন আমাদের পালা। এক মুহূর্ত দেরি না করে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমাদের উচিত বাহরাইনে অবস্থিত আমেরিকার নৌবহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো। একই সঙ্গে হরমুজ প্রণালিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মূলত হরমুজ প্রণালি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ, যেখান দিয়ে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জ্বালানি তেল রপ্তানি হয়। সেটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ বিপর্যস্ত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে এখনও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তাঁর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যটি আবারও শেয়ার করা হয়েছে। যেখানে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়ায়, তাহলে তা হবে তাদের নিজেদের ক্ষতির জন্য।
ওই ভিডিও বার্তায় খামেনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে ক্ষতির মুখে পড়বে, তা ইরানের যে কোনো ক্ষতির চেয়ে বহু গুণ বেশি হবে।’
কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র: আরাগচি
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইরান নয়। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
টেলিভিশনে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে আরাগচিকে প্রশ্ন করা হয়, সাম্প্রতিক মার্কিন হামলার পর ইরান আবার কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরবে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নটাই অবান্তর। আমরা তো আলোচনার মাঝখানেই ছিলাম, যখন ইসরায়েল হামলা চালাল। আমরা তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। আবার দু’দিন আগেই জেনেভায় ইউরোপীয়দের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আর এই মুহূর্তেই আমেরিকানরাই সামরিক হামলা চালিয়ে পুরো আলোচনা ভণ্ডুল করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটি ছিল কূটনীতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। ইরান নয়, যুক্তরাষ্ট্রই প্রমাণ করেছে তারা কূটনীতির লোক নয়। তারা কেবল হুমকি ও শক্তির ভাষা বোঝে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান ও মার্কিন জনগণ উভয়ের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলেও মন্তব্য করেন আরাগচি। তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল যুদ্ধে জড়ানো বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচিত হয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি উল্টো আমাদের (ইরান) সঙ্গে কূটনীতির নামে প্রতারণা করেছেন এবং একজন ওয়ান্টেড যুদ্ধাপরাধীর (নেতানিয়াহু) মিশনে জড়িয়ে নিজ দেশের ভোটারদেরও ঠকিয়েছেন।’
শেষে আরাগচি বলেন, ‘ইরানি জনগণ সরকারকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ। আমরা যে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে রুখে দাঁড়াব।’ তিনি তাঁর দেশে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাব দেওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর হুমকি
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) বলেছে, তারা ওয়াশিংটনকে এমনভাবে পাল্টা জবাব দেবে, তারা অনুশোচনা করতে বাধ্য হবে। তারা দাবি করেছে, আমেরিকার ওই হামলা প্রকাশ্য অপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
একটি বিবৃতিতে এই বাহিনীটি বলেছে, সন্ত্রাসী আমেরিকা কর্তৃক আজকের আগ্রাসী আচরণ ইরানকে বিকল্প পথে ঠেলে দিয়েছে। ফলে ইরানকে বৈধ আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে অন্যদের চিন্তা ও আক্রমণকারীদের হিসাবের বাইরে বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। এই ভূমিতে হামলার এমন জবাব দেওয়া হবে, যাতে তারা অনুশোচনা করতে বাধ্য হবে। মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটি ও সেখানকার সদস্যরা ‘নাজুক’ অবস্থায় রয়েছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়েছে, তাদের সামরিক পদক্ষেপ আপাতত শেষ হয়েছে এবং তারা তেহরানের শাসন ব্যবস্থা উৎখাত করতে চায় না। এমন বার্তা হয়তো ইরানকে আরও সংযত প্রতিক্রিয়া জানাতে উৎসাহিত করতে পারে।
এখন ইরান চাইলে উপসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ অথবা ঘাঁটিতে আক্রমণ করতে পারে। এ পদক্ষেপ উপসাগর থেকে তেলের প্রবাহ ব্যাহত করতে পারে এবং তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে। আবার তারা আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে এমনভাবে আক্রমণ করা পারে, যাতে উল্লেখযোগ্য হতাহতের ঘটনা না ঘটে।
এখানে লক্ষণীয়, ট্রাম্প আবারও হুমকি দিয়েছেন, ইরান যদি প্রতিশোধ নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী জবাব দেবে। যে কারণে এখন মধ্যপ্রাচ্যে একটাই আলোচনা, ইরানে মার্কিন হামলা কি এই সংঘাতের সমাপ্তির সূচনা, নাকি যুদ্ধের আরও রক্তাক্ত পর্বের অপেক্ষা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোঁফওয়ালা শাকিবকে দেখে ভক্তদের উল্লাস
একটি সুপারশপের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে পাকা রাস্তা। তার ওপরে দাঁড়িয়ে অগণিত মানুষ। কখনো শিস বাজাচ্ছেন, কখনো ‘উই লাভ শাকিব খান’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শো রুমের শাটার ধীরে ধীরে উঠছে, অপর প্রান্তে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছেন। সময়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে পুরোপুরি দেখা যায়, আর তাকে দেখেই উল্লাস করতে থাকেন উৎসুক জনতা। কারণ দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি অন্য কেউ নেন, ঢালিউড কিং শাকিব খান।
আরো পড়ুন:
শাকিবের নায়িকা হতে ইধিকার ৩৮ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দাবি?
‘রাক্ষস’ ছেড়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’-এ সাবিলা নূর
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। তবে শাকিব খানকে একদম নয়া লুকে দেখা যায়। গোঁফওয়ালা শাকিব খানকে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন নেটিজেনরাও। দেলোয়ার নামে একজন লেখেন, “কিরে বাবা বয়স খালি কমে, বাড়ে না।” মুন্না লেখেন, “বস।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে নেট দুনিয়ায়।
কিছু দিন আগে প্রকাশিত হয়েছে শাকিব খানের পরবর্তী সিনেমা ‘সোলজার’ এর লুক; যা বিশেষভাবে নজর কাড়ে। সেই লুকেই শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বনানীতে একটি সুপারশপের আউটলেট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হন শাকিব খান। তার যাওয়ার খবরে বনানীতে ভিড় করেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
নিঃসন্দেহে বলা যায়, ক্যারিয়ারে দারুণ সময় পার করছেন শাকিব খান। বাংলা চলচ্চিত্রের শীর্ষ এই নায়ককে নিয়ে নির্মাতা সাকিব ফাহাদ নির্মাণ করছেন ‘সোলজার’ সিনেমা। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর সিনেমাটি মুক্তি পাবে।
ঢাকা/শান্ত