এবার কি ইরানে সরকার পরিবর্তনের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
Published: 23rd, June 2025 GMT
ইরানের একাধিক পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এবার ‘সরকার পরিবর্তন’ নিয়ে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরোক্ষে তিনি তেহরানে ‘সরকার পরিবর্তন’ করার হুমকি দিলেন। তাঁর বক্তব্য দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের পূর্বঘোষিত অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লেখেন, ‘সরকার পরিবর্তন (রেজিম চেঞ্জ) শব্দটি রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়। কিন্তু ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থা যদি দেশটিকে আবার মহান করতে না পারে, তাহলে কেনইবা সরকার পরিবর্তন হবে না? মিগা!’ এখানে মিগা বলতে ‘মেক ইরান গ্রেট এগেইন’ বুঝিয়েছেন ট্রাম্প।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা, সরকার পরিবর্তন নয়। কিন্তু ট্রাম্পের সর্বশেষ মন্তব্য হেগসেথের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আলাদা একটি পোস্টে ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, ইরানে হামলা চালানো বি-২ বোমারু বিমানগুলো মিসৌরিতে নিরাপদে ফিরে এসেছে।
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া আরেক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, ইরানের সব পারমাণবিক স্থাপনাতেই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে “পুরোপুরি ধ্বংস” কথাটিই যথাযথ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভূগর্ভের অনেক গভীরে। একেবারে লক্ষ্যভেদ!’
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে আকাশপথের লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েল বলছে, তারা নতুন করে ইরানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে ভ্রমণরত ও অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি করেছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উপদেষ্টা আলী আকবর ভেলায়েতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মার্কিন সেনাদের ব্যবহৃত ঘাঁটিগুলোতে প্রতিশোধমূলক হামলা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা মুসলিম বিশ্বের হৃদয়ে আঘাত করেছে এবং এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতির জন্য তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৯০ কোটি বাজেটের ‘সিতারে জমিন পার’ তিন দিনেই ৬০ কোটির ঘরে
এক যুগ আগে ‘তারে জমিন পার’এর মাধ্যমে দর্শকের চোখে জল এনে দিয়েছিলেন আমির খান। শিশুদের মনোজগৎ, সামাজিক বাস্তবতা ও মমতার গল্পে গড়া সেই সিনেমা হয়ে উঠেছিল যুগান্তকারী। দীর্ঘ অপেক্ষার পর আবারও এমন এক হৃদয়ছোঁয়া গল্প নিয়ে পর্দায় ফিরলেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট। নতুন সিনেমার নাম ‘সিতারে জমিন পার’।
মুক্তির আগেই সিনেমাটি ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ট্রেলার ও প্রোমোতেও আবেগের সুর বাজিয়ে দিয়েছিলেন আমির। তবে সব আশার মাঝেই মুক্তির প্রথম দিন ছিল কিছুটা হতাশাজনক। ১১ কোটির মতো সংগ্রহ করে শুরুটা করেছিল বেশ নরমভাবে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ফিরবেন কি আমির খান সেই চেনা জাদুতে?
কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই ছবিটা বদলে গেল। বক্স অফিসে দেখা গেল গতি। দ্বিতীয় দিনে আয় দাঁড়ায় ২১.৫০ কোটিতে। তৃতীয় দিনে তা আরও বেড়ে গিয়ে ছুঁয়ে ফেলে ২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ মুক্তির প্রথম তিন দিনেই ভারতের বক্স অফিসে ছবিটির মোট আয় দাঁড়ায় ৫৮.৯০ কোটি টাকা, যা ৯০ কোটি টাকার বাজেটের তুলনায় এক বিশাল সাফল্যের ইঙ্গিত দেয়।
এই গতি অব্যাহত থাকলে প্রথম সপ্তাহেই ছবিটি লাভের মুখ দেখতে পারে বলে ধারণা বক্স অফিস বিশ্লেষকদের।
শুধু আয়ের দিকেই নয়, দর্শক উপস্থিতির পরিসংখ্যানেও ধরা পড়ছে সিনেমাটির জনপ্রিয়তা। প্রথম দিনের সন্ধ্যা ও রাতের শোতে যেখানে দর্শক উপস্থিতি ছিল ৪৩ ও ৫৬ শতাংশ, সেখানে তৃতীয় দিনে তা গিয়ে ঠেকেছে ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। সিনেমাটির মানবিক বার্তা, আবেগঘন মুহূর্ত ও নিখুঁত নির্মাণ দর্শকদের মন জয় করতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে।
‘সিতারে জমিন পার’ পরিচালনা করেছেন আর. এস. প্রসন্ন। এটি একটি স্প্যানিশ সিনেমার অফিসিয়াল হিন্দি রিমেক। গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কিছু বিশেষ শিশুর জীবন। যারা নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও খুঁজে পায় স্বপ্ন দেখার সাহস, আর সেই স্বপ্নের সঙ্গী হয়ে ওঠেন আমির খান। শিশুদের জীবনে বাস্কেটবল হয়ে ওঠে আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। আর একজন সহমর্মী প্রশিক্ষকের ভূমিকায় আমির যেন সেই আগের ‘ইশান’দের পৃথিবীতে নতুন আলো ছড়ান।
গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে আছেন জেনেলিয়া ডিসুজা। যিনি নিজেও এই গল্পে নিয়ে এসেছেন আবেগ ও সংবেদনশীলতার পরশ। সমালোচকরা বলছেন, সিনেমাটির সবচেয়ে বড় শক্তি এর হৃদয়ছোঁয়া কাহিনি এবং মানবিক বার্তা।