বিনা ভোটে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) নতুন সভাপতি ও মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ও কম্পিউটার সিটি টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। গত শনিবার কোনো পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায় সাত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক নির্বাচিত হন। গতকাল রোববার বিজয়ীদের মধ্যে পদ বণ্টনের পর আজ সোমবার ২০২৫–২৭ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন বোর্ড। নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো.

ওয়াহিদুল হাসান (ল্যান্ডমার্ক কম্পিউটারস)। যুগ্ম মহাসচিব ও কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন যথাক্রমে মো. আহসানুল ইসলাম (পিসি গার্ডেন) ও আবুল হাসান (এইচ এম কম্পিউটারস)। পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম (ওয়েলকিন কম্পিউটারস) ও মো. ইকবাল হোসাইন (জ্যাজি)।

নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগামীকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় দায়িত্ব নেব। আসলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচতি হয়েছি, কারণ সবাই চেয়েছে। আমরা কাউকেই বারণ করিনি। কিন্তু বিসিএসের যে অবস্থা, সেখানে আসলে সেভাবে কেউ দায়িত্বে আসতে চাননি। আপনি জানেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। সবাই মিলে চাইল আমাকে, তাই দায়িত্বে এসেছি। এখন আমার জায়গা থেকে যে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, সেটা আমরা সবাইকে নিয়েই করব।’

বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ আফরোজ বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শিগগিরই তিনি নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। নাহিদ আফরোজ আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনের বাইরে আমরা কিছুই করিনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতেই পারে। তাঁরা যদি অন্য সদস্যদের বুঝিয়ে কিছু করে থাকেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। নির্বাচন বোর্ডে যাঁরা ছিলেন, এটা তাঁরা ভালো বলতে পারবেন।’

কম্পিউটার সমিতির নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শরীফ রায়হান কবির। তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর আমরা একটা দিনও নষ্ট করিনি। একদম সময়মতো সংগঠনের বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচনের সবকিছু হয়েছে। এখন সাত পদের জন্য সাত প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলে তাঁদেরকেই নির্বাচিত ঘোষণা করতে হবে। আমরা সেটাই করেছি।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০ আগস্ট বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর এক তলবি সভার মাধ্যমে স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে অন্তর্বর্তীকালীন আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। এ সভায় বিসিএসের বেশ কয়েকজন সাবেক সভাপতিসহ সদস্যদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সমিতির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য পরিচালক, বাণিজ্য সংগঠনে (ডিটিও) পাঠানো হয়। তবে ডিটিও বিষয়টি অনুমোদন করেনি। পরে সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগের অফিস আদেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিসিএসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ আফরোজকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই প্রশাসকের দায়িত্ব ছিল ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু জানুয়ারির ২৪ তারিখ সময়সীমা অতিক্রম করলেও তখন পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম ম হ ম মদ হয় ছ ন ব স এস কম ট র সদস য স গঠন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের লাশ নিয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধের পর প্রশাসনের আশ্বাসে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দেন।

গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় রুপলাল দাসসহ (৪০) দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রুপলালের বাড়ি উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকায়। নিহত অন্যজন হলেন মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ লাল (৩৫)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের বেলতলী এলাকায় রুপলালের লাশ রেখে এলাকাবাসী অবরোধ শুরু করেন। এতে সড়কের দুই দিকেই শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে সরে যান।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী দুপুরে তারাগঞ্জ থানায় ৫০০ থেকে ৭০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত শনিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে ভাতিজি জামাই প্রদীপ লালকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরই একপর্যায়ে প্রদীপ লালের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় ও কিছু ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে লোকজন উত্তেজিত হয়ে রুপলাল ও প্রদীপ লালকে বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের কান দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তাঁদের তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রুপলালকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ লালকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রদীপ লাল ভোর ৪টায় মারা যান।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ ফারুক বলেন, ‘রুপলালের লাশ নিয়ে স্থানীয়রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। আমরা তাঁদের আশ্বাস করেছি। তাঁরা লাশ নিয়ে ফিরে গেছেন।’

আরও পড়ুনস্বজন রাস্তা না চেনায় গেলেন এগিয়ে আনতে, পথে দুজনকেই পিটিয়ে হত্যা১২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনদুজনকে পিটিয়ে হত্যা : ‘এ্যালা মুই কেমন করি বাঁচিম, কার কাছোত বিচার চাইম’১০ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ