নিক হল্ট ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’–এর প্রধান ক্রিকেট সংবাদদাতা। হেডিংলিতে কাল ইংল্যান্ডের জয়ের পর ম্যাচ প্রতিবেদনের একটি অংশে তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্বের সেরা, সম্ভবত সর্বকালের সেরা বোলারকে ভোঁতা করে জিতেছে ইংল্যান্ড।’

খেলা হয়েছে ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে, যেখানে ৫ উইকেটে জিতেছে স্বাগতিকেরা। এই ম্যাচে নিক হল্ট কাকে এত বড় প্রশংসায় সিক্ত করলেন তা না বললেও চলে। যশপ্রীত বুমরা! ‘দ্য টেলিগ্রাফ’–এর প্রধান ক্রিকেট লেখক ও উইজডেনের সাবেক সম্পাদক শিল্ড বেরি গত রোববার তাঁকে নিয়ে একটি লেখা প্রকাশ করেন, যার শিরোনাম বাংলা করলে হয়, ‘লাল বলের ক্রিকেটে এ গ্রহে জন্মানো সেরা ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরা।’

আরও পড়ুনএক ম্যাচে ৭ ক্যাচ মিস, গিলদের গাভাস্কার বললেন—ওসব ঐচ্ছিক অনুশীলন বাদ দাও৮ ঘণ্টা আগে

বুমরা সর্বকালের সেরা কি না, তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। দিস্তা দিস্তা পরিসংখ্যান নিয়েও কথার লড়াই হতে পারে। তবে একটি পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে বুমরা–কীর্তির প্রতি বিশ্বাস যে কারও শক্ত হতে পারে। বুমরা তাঁর ৪৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৮৮ ইনিংসে বোলিং করেছেন। এর মধ্যে ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসে বোলিং করেছেন ২৪ ইনিংসে। এর মধ্যে ৬ বার চতুর্থ ইনিংসে বোলিং করে উইকেটশূন্য ছিলেন বুমরা। এই ৬ বারই ভারত হেরেছে।

সর্বশেষ টেস্ট থেকেই দেখা যাক। হেডিংলিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ৩৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ইংল্যান্ড। ১৯ ওভার বোলিং করেও বুমরা উইকেট পাননি। ফলটা তো প্রায় সবারই জানা এবং লেখায় আগেই তা জানানো হয়েছে। একটি বিষয় এখানে মোটামুটি পরিষ্কার—টেস্ট জিততে হলে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে হবে। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন বুমরা, স্বাগতিকেরা অলআউট হয়েছিল ৪৬৫ রানে। তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে এই বুমরাকে প্রয়োজন ছিল ভারতের।

কিন্তু ক্রিকেটে সবাই সব সময় জ্বলে উঠতে পারেন না, বুমরাও পারেননি। আর তাই তাঁকে ছাড়া নখদন্তহীন মনে হয়েছে ভারতের বোলিং। এককথায়, বুমরা জ্বলে উঠতে না পারলে বোলিং নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তার জায়গা আছে ভারতের।

আরও পড়ুনস্টোকসের ইংল্যান্ড যেখানে অনন্য, ভারত যেখানে পাঁচ সেঞ্চুরিতে ‘প্রথম’১২ ঘণ্টা আগে

পরিসংখ্যানের গল্পে ফেরা যাক। হেডিংলি টেস্টের আগে গত বছর সর্বশেষ বোর্ডার–গাভাস্কার সিরিজে অ্যাডিলেডে দ্বিতীয় টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে উইকেটশূন্য ছিলেন বুমরা। তবে সে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের জন্য মাত্র ১৯ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল ভারত। এত অল্প পুঁজি নিয়ে কারও আসলে জেতার কথা নয়। বুমরা ১ ওভার বোলিং করে ছিলেন উইকেটশূন্য, ভারত হারে ১০ উইকেটে। অ্যাডিলেডের পর হেডিংলিতে চতুর্থ ইনিংসে বোলিং করলেন বুমরা।

অ্যাডিলেডের আগে বুমরা চতুর্থ ইনিংসে বোলিং করেছেন তিন বছর আগে (২০২২ সালের জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জোহানেসবার্গ টেস্টে। সেই টেস্টে জয়ের জন্য ২৪০ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল প্রোটিয়ারা। ১৭ ওভারে ৭০ রান দেওয়া বুমরাকে উইকেটশূন্য রেখে সেই টেস্ট ৭ উইকেটে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

জোহানেসবার্গের আগে ২০২১ সালের জুনে সাউদাম্পটনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডকে ১৩৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ভারত। বুমরা ১০.

৪ ওভার বোলিং করে ছিলেন উইকেটশূন্য। নিউজিল্যান্ডও ৮ উইকেটে জয় পায়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সেই অ্যাডিলেডেই অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের জন্য মাত্র ৯০ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল ভারত। ৭ ওভারে ২৭ রান দেওয়া বুমরাকে উইকেটশূন্য রেখে ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ২০২০ সালে ওয়েলিংটন টেস্টেও একই ঘটনা দেখা গেছে। চতুর্থ ইনিংসে মাত্র ৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডের ১০ উইকেটের জয়ে বুমরা বল করেছিলেন মাত্র ৪টি।

২০২০–এর ওয়েলিংটন কিংবা ২০২০ ও ২০২৪–এর অ্যাডিলেডে বুমরা চতুর্থ ইনিংসে উইকেট না পাওয়ায় ভারত হেরেছে—এ কথাটা সরাসরি বলার সুযোগ নেই। কারণ, ভারতের পুঁজিই ছিল খুব কম। কিন্তু বুমরা চতুর্থ ইনিংসে উইকেট না পেলে ভারত যে ভোগান্তিতে পড়ে সেটাও তো তিন বছর আগের জোহানেসবার্গ কিংবা কালকের হেডিংলির ঘটনায় পরিষ্কার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ন র লক ষ য পর স খ য ন উইক ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ বছরে ৩৯.৬১ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি

বাংলাদেশে ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ৬১ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ২০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব তুলা আমদানির মাধ্যমে তৈরী পোশাক শিল্পে কাঁচামালের চাহিদা পূরণ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশে তুলা সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে আছে— যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ব্রাজিল, চীন এবং কয়েকটি আফ্রিকান দেশ। এ দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫ বছরে বাংলাদেশ ২ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি করেছে, যার দাম ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আরো পড়ুন:

দেশে দেশে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকর

‘আলোকিত স্বার্থবোধের’ ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি নিয়েছি আমরা: তৌহিদ হোসেন

বছরওয়ারি তুলা আমদানির পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৫২ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি করেছে, যার মূল্য ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের আমদানি করেছে ১০ দশমিক শূন্য ৮ মিলিয়ন বেল, বাজারমূল্য ছিল ৪ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে ৮ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি করা হয়েছে বাংলাদেশে, যার দাম ৫ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে তুলা আমদানির পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ২৬ মিলিয়ন বেল, যার দাম ৩ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪ সালে তুলা আমদানির পরিমাণ ৮ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন বেল, যার বাজারমূল্য ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২২ সালে সর্বোচ্চ তুলা আমদানি করা হয়েছিল। সবচেয়ে কম আমদানি করা হয়েছিল ২০২৩ সালে। ২০২৪ সাল থেকে আবার তুলা আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজিএমইএ জানিয়েছে, মার্কিন ‍যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশ হচ্ছে তুলাভিত্তিক পোশাক। অপরদিকে, মার্কিন শুল্ক সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে বলা আছে, যদি ন্যূনতম ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল (যেমন: তুলা) ব্যবহার করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামালের মূল্যের ওপর এই অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করলে আমরা বাড়তি কিছু শুল্ক ছাড় পাব। অর্থাৎ বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি শুল্কের হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক হার কার্যকর হয়েছে।  

ঢাকা/নাজমুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাঁচ বছরে ৩৯.৬১ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি