ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, থ্রেডস, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেটাকে সামাজিক সম্প্রীতি ব্যাহত করে এবং ঘৃণা ছড়ায়, এমন অপতথ্যের মোকাবিলায় আরও কার্যকর উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এটি (অপতথ্য) একটি বড় সমস্যা। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনাদের অবশ্যই কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মেটার এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের (দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) পাবলিক পলিসি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন মিলনার এবং পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রুজান সারওয়ার।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। একটি ভুল শব্দ পুরো দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে। কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটি করে।’
এ সময় মেটার কর্মকর্তা মিলনার বলেন, মিথ্যা তথ্য প্রতিরোধে তারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, বিশেষ করে আগামী বছর আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে। গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার কর্তৃপক্ষ এবং মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করেছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের জন্য আমাদের একটি ডেডিকেটেড টিম রয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা জানান, মেটা প্ল্যাটফর্মগুলোর বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি প্রচারের সম্ভাবনা রয়েছে; কিন্তু একই সঙ্গে এটি বিপজ্জনকও হতে পারে যদি নৈতিক মানদণ্ড না মানা হয়।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ‘মেটা এলএলএম এআই ইংরেজি ভাষার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল, যা সহায়ক নয়’ উল্লেখ করে প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে গত মঙ্গলবার মেটার কর্মকর্তারা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে মেটাকে বাংলা ভাষায় এলএলএম এবং এআইভিত্তিক অনুভূতি বিশ্লেষণে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি ভুয়া খবর এবং মিথ্যা তথ্য মোকাবিলায় আরও বেশি পর্যালোচক নিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।

এ ছাড়া স্থানীয় ভাষা, সংস্কৃতি ও সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা রাখেন, এমন আরও বাংলাদেশি কনটেন্ট (আধেয়) পর্যালোচক নিয়োগের মাধ্যমে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কমিউনিটি মান প্রয়োগকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মেটাকে দেশের অভ্যন্তরে ক্যাশ সার্ভার এবং এজ রাউটার স্থাপনের অনুরোধও জানানো হয়েছে। যাতে পরিষেবার মান উন্নত হয়, ব্যান্ডউইথড অপটিমাইজ করা যায় এবং ব্যক্তিগতভাবে শনাক্তকরণযোগ্য তথ্য (পিআইআই) সুরক্ষিত করা যায়।

মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ এবং বিটিআরসির প্রতিনিধিরা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেকোনো ক্ষতিকর পোস্ট সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত সময়ে করার জন্য মেটাকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

হুমকি ও অপরাধ শনাক্তকরণ, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সতর্কতা, মব সন্ত্রাস তৈরিতে উসকানিবিষয়ক সতর্কতা এবং আত্মহত্যার সতর্কতা বিষয়ে যাতে আরও সক্রিয় ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়, এ বিষয়ে মেটার সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আহ ব ন জ ন প ল য টফর ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনেস্কোর যৌথ আয়োজনে মিডিয়া লিটারেসি নেটওয়ার্কের উদ্বোধনী সভা ও কর্মশালা

রাজধানীতে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনেস্কোর যৌথ আয়োজনে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গঠনের লক্ষ্যে মিডিয়া লিটারেসি নেটওয়ার্কের উদ্বোধনী সভা ও ‘একটি সুন্দর ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এই সভা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. সুসান ভাইজ ‘মিডিয়া অ্যান্ড ইনফরমেশন লিটারেসি’ প্রসারে ইউনেস্কোর ভূমিকা তুলে ধরেন। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইনফরমেশন স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. দিলারা বেগম একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন এবং নেটওয়ার্কের উদ্দেশ্যগুলো ব্যাখ্যা করেন। ইউনেনেস্কো ঢাকা অফিসের নূরে জান্নাত প্রমা নেটওয়ার্কের মূল কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান সেশনের সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন, যেখানে তিনি ‘মিডিয়া অ্যান্ড ইনফরমেশন লিটারেসি’ উদ্যোগে পারস্পারিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

বিকেলে কর্মশালায় একটি স্বস্তিদায়ক ডিজিটাল ইকোসিস্টেম কিভাবে গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। অধ্যাপক ড. সাইফুল আলম ‘ডিজিটাল গোলকধাঁধা নেভিগেট করা: ভুল তথ্য, অপতথ্য এবং ভুয়া খবর বোঝা’ বিষয়ে আলোচনা করেন, অধ্যাপক ড. দিলারা বেগম ‘ডিজিটাল যুগে তথ্য যাচাই: অপরিহার্য সরঞ্জাম এবং কৌশল’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে দেশের ১৬টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা ভুল তথ্য, অপতথ্য এবং ভুয়া খবর ঠেকাতে ভূমিকা রাখবে বলে তারা প্রতাশ্যা করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য মোকাবিলার উপায় খুঁজতে মেটাকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনেস্কোর আয়োজনে মিডিয়া লিটারেসি নেটওয়ার্কের কর্মশালা
  • ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনেস্কোর আয়োজনে মিডিয়া লিটারেসি নেটওয়ার্কের সভা ও কর্মশালা
  • ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনেস্কোর যৌথ আয়োজনে মিডিয়া লিটারেসি নেটওয়ার্কের উদ্বোধনী সভা ও কর্মশালা