বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে বুধবার শুরু হয়েছে বিষয়ভিত্তিক তিনটি প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী। একাডেমির প্রশিক্ষণ ও চারুকলা বিভাগ এর আয়োজন করেছে।

এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মধ্য রয়েছ ১০ দিনব্যাপী ‘মৃৎশিল্প কর্মশালা’, ১৬ দিনব্যাপী ‘বাঁশশিল্পে সৃষ্টিশীলতা’–বিষয়ক কর্মশালা ও প্রদর্শনী এবং সপ্তাহব্যাপী ‘আর্ট অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স’। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হবে।

বুধবার বেলা তিনটায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে মৃৎশিল্প কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিল্পী আব্দুস সাত্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কর্মশালার কোর্স সমন্বয়কারী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষক আইরিন পারভীন, চারুকলা বিভাগের উপপরিচালক প্রদ্যোত কুমার দাস, কর্মশালার প্রশিক্ষক দেবাশীষ পাল ও অসীম হালদার।

কর্মশালায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
বাঁশশিল্পে সৃষ্টিশীলতা–বিষয়ক কর্মশালা ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল বিকেল চারটায়। কর্মশালার মূল প্রশিক্ষক হচ্ছেন মো.

সাইফুজ্জামান ও সহযোগী প্রশিক্ষক মো. মফিদুল আলম খান।

এ কর্মশালায় বিভিন্ন জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
আর্ট অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্সের উদ্বোধনী চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়। কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পী আব্দুস সাত্তার। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান। উপস্থিত ছিলেন কর্মশালার প্রশিক্ষক রশীদ আমিন।

আয়োজকেরা জানান, মূলত আর্ট, শিল্পের পরিভাষা, নান্দনিক বোধ, শিল্পভাবনা ও লেখার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে এ অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স আয়োজন করা হয়েছে। সপ্তাহব্যাপী এ কর্মশালায় ইউরোপীয় শিল্পকলা ও আধুনিক শিল্পের বিবর্তনশীল ধারাসমূহ, গ্রিস ও রোমের শিল্পকলার ধ্রুপদি চর্চা, মধ্যযুগের খ্রিষ্টীয় শিল্পধারা, রেনেসাঁশিল্পের বহুবিধ মাত্রা, রোমান্টিক ধারার উত্থান ও শিল্পে জাতীয় চরিত্র, আধুনিক শিল্পের নৈর্ব্যক্তিক ও আত্মবিশ্লেষণী ধারাসমূহ, সমাজ চেতনা ও মনোবিকলনের প্রভাবে গড়ে ওঠা শিল্প ধারাসমূহ এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর শিল্পচর্চার বিবিধ মাত্রাবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।

কোর্সে ১০০ প্রশিক্ষণার্থী সরাসরি ও ৫০ প্রশিক্ষণার্থী অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। কোর্সের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের প্রশিক্ষক সাইফুল ইসলাম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ শ ল পকল এক ড ম র চ র কল করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ডায়াবেটিসে ভোগা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া কঠিন হলো

ডায়াবেটিসে ভুগছেন যাঁরা, বসবাসের জন্য তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠল। এমন নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে তাঁদের ভিসার আবেদন বাতিল করা যাবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এই নির্দেশনা গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তাদের কাছে এমন নির্দেশনা পাঠিয়েছে। তাতে যুক্তি দেখানো হয়েছে, এ ধরনের ব্যক্তিরা তাঁদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা বয়সের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের খরচের বোঝা বাড়িয়ে দিতে পারেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে ভিসা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় এমন নতুন কিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে তাঁরা ভিসার আবেদনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য ঘোষণা করতে পারবেন। এর মধ্যে আছে বেশি বয়স বা এমন কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা, যার জন্য ওই ব্যক্তিরা সরকারি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল থাকবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নির্দেশনায় আবেদনকারীর স্বাস্থ্যগত দিকের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেসব স্বাস্থ্যগত অবস্থায় ভিসার আবেদন বাতিল করা যাবে, সে তালিকাটি আরও দীর্ঘ হয়েছে। ভিসা কর্মকর্তাদের আবেদনকারীর স্বাস্থ্যগত অবস্থার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অনেক বছর ধরেই সম্ভাব্য অভিবাসীদের স্বাস্থ্যগত তথ্য যাচাই–বাছাই করে আসছে। যেমন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষা করা ও টিকার ইতিহাস যাচাই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নির্দেশনায় আবেদনকারীর স্বাস্থ্যগত দিকের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেসব স্বাস্থ্যগত অবস্থায় ভিসার আবেদন বাতিল করা যাবে, সে তালিকাটি আরও দীর্ঘ হয়েছে। ভিসা কর্মকর্তাদের আবেদনকারীর স্বাস্থ্যগত অবস্থার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী এক বিতর্কিত অভিযানের অংশ হিসেবে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানের লক্ষ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রে অননুমোদিতভাবে বসবাস করা অভিবাসীদের বিতাড়িত করা ও নতুন অভিবাসীদের ঠেকানো। এই অভিযানের অংশ হিসেবে নিয়মিত গণগ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং অভিবাসীর প্রবেশ সীমিত করার মতো পরিকল্পনাও করা হয়েছে।

আইনি সহায়তাবিষয়ক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চার্লস হুইলার বলেন, নতুন নির্দেশনায় ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় অভিবাসীদের স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশনা প্রায় সব ভিসা আবেদনকারীর জন্য প্রযোজ্য হলেও খুব সম্ভবত যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করছেন, শুধু তাঁদের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিসা কর্মকর্তাদের অবশ্যই আবেদনকারীর স্বাস্থ্যগত অবস্থা যাচাই করতে হবে। যেমন হৃদ্‌রোগ, শ্বাসনালির রোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, বিপাকজনিত রোগ, স্নায়ুবিষয়ক সমস্যা এবং মানসিক সমস্যাসহ যেসব স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে লাখ লাখ ডলার মূল্যের সুরক্ষা দিতে হবে, সেগুলো বিবেচনা করতে হবে।

বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। হৃদ্‌রোগও খুব দেখা যায়। বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি এটি।

নির্দেশনায় আবেদনকারীদের স্থূলতার বিষয়টিও বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। কারণ, এটি হাঁপানি, নিদ্রাহীনতা এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। অভিবাসীদের কারও এসব সমস্যা থাকলে তিনি সরকারের জন্য অতিরিক্ত খরচের বোঝা তৈরি করবেন। আর তা মাথায় রেখে ওই ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে দেওয়া যেতে পারে।

নির্দেশনায় আবেদনকারীদের স্থূলতার বিষয়টিও বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। কারণ, এটি হাঁপানি, নিদ্রাহীনতা ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। অভিবাসীদের কারও এসব সমস্যা থাকলে তিনি সরকারের জন্য অতিরিক্ত খরচের বোঝা তৈরি করবেন। আর তা মাথায় রেখে ওই ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে দেওয়া যেতে পারে।

এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।

আবেদনকারী ব্যক্তি সরকারি সহায়তা ছাড়া নিজেই নিজের চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারবেন কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনা করতে ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে আইনজীবী চার্লস হুইলার বলেছেন, নির্দেশনাটি পররাষ্ট্র দপ্তরের নিজস্ব হ্যান্ডবুক ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যানুয়ালের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হচ্ছে। কারণ সেখানে বলা হয়েছে, ‘এটা হতে পারে’ এমন অনুমানের ভিত্তিতে ভিসা কর্মকর্তারা কোনো আবেদন বাতিল করতে পারেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ