সিলেটে দেড় মাস বয়সী এক শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শিশুটির বাবাকেও আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর গলায়ও রক্তাক্ত ক্ষত আছে। গতকাল বুধবার নগরে মেজরটিলা এলাকার ইসলামপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিশুর নাম ইনায়া রহমান। সে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের টংঘর গ্রামের আতিকুর রহমানের (৪০) মেয়ে। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে মেজরটিলা এলাকার ইসলামপুরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন আতিকুর। বর্তমানে তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ওই বাসায় থেকে আতিকুর নগরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। গতকাল দুপুরে তিনি কাজ শেষে বাসায় ফেরেন। বিকেলে হঠাৎ প্রতিবেশীরা আতিকুরের বাসায় চিৎকার শুনতে পান। সেখানে গিয়ে শিশুটিকে গলাকাটা অবস্থায় এবং আতিকুর রহমানের গলায় রক্তাক্ত ক্ষত দেখতে পান। পরে তাঁদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন। সেখানে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গতকাল রাতে আতিকুরের অস্ত্রোপচার হয়েছে।

গতকাল রাতে হাসপাতালে অবস্থানের সময় ঝুমা জানান, বিকেলের দিকে তিনি কিছু সময়ের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এর আগে তাঁর স্বামীর কাছেই ইনায়া ছিল। আতিকুর বাচ্চাটির খেয়াল রাখবেন বলে তাঁকে ঘুমাতে বলেছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে হঠাৎ তাঁকে হাত দিয়ে ঠেলে ঘুম থেকে জাগান আতিকুর। এ সময় তিনি স্বামীর গলায় রক্তাক্ত ক্ষত দেখতে পান। এতে ভয়ে তিনি চিৎকার দিয়ে আরেকটি কক্ষে গিয়ে দেখেন গলাকাটা অবস্থায় শিশুটি পড়ে আছে। পরে তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।

আহত আতিকুর রহমানের ভগ্নিপতি হুসেন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, আতিকুর কথা বলতে পারছেন না। তিনি সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত কী ঘটেছিল, সেটি সঠিকভাবে জানা সম্ভব নয়।

ঘটনার বিস্তারিত জানা যায়নি মন্তব্য করে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে ওই শিশু ও তাঁর বাবা-মা ছাড়া কেউ ছিলেন না। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে প্রতিবেশীরাও এ ঘটনা সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারছেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র গল য় গল ক ট অবস থ গতক ল রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ