চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বসতঘর থেকে মোহাম্মদ ফয়েজ আহমেদ (৮৫) নামের এক বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ফয়েজ আহমেদ উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বদ্ধভবানী এলাকার বাসিন্দা। খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন জোরারগঞ্জ থানা-পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের ধারণা, গতকাল বুধবার রাতে নিজ ঘরে হাত-পা বেঁধে তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, নিহত ফয়েজ আহমেদ পাঁচ বিয়ে করেছেন। ঘটনার দিন রাতে তিনি সবার ছোট স্ত্রী ফিরোজা আক্তারের বাড়িতে ছিলেন। ফিরোজা আক্তার এলাকায় ধাত্রীর কাজ করেন। বুধবার রাতেও তিনি ঘরে স্বামীকে একা রেখে বাচ্চা প্রসব করানোর কাজে গিয়েছিলেন। কাজ শেষে ঘরে এসে তিনি স্বামীর হাত–পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জোরারগঞ্জ থানা-পুলিশকে জানালে সকালে গিয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকালে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বদ্ধভবানী এলাকায় নিজের ঘরে এক বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে, এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। তার শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যা রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছি আমরা।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ