চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী। পাশাপাশি সম্মিলিতভাবে অ্যালামনাইকে এগিয়ে নিতে আগামী ৪ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ঈদ পুনর্মিলনীতে সবাইকে অংশ নিতে উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসলাম চৌধুরী এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সর্বসম্মতিক্রমে আহ্বায়কের দায়িত্ব নেওয়ার পর সবাই ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বললে, আমিও তাতে একাত্মতা পোষণ করি। আমি বিশ্বাস করি, এই পুনর্মিলনীর মাধ্যমে সবার সংযোগ হবে এবং একটা যৌক্তিক ঐক্যমতে পৌঁছে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে পারব।’

তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ, অশোভন বক্তব্য ও বিভাজনের ভাষা ব্যবহার করায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি মনে করি, সদস্যদের লেখালেখিতে তৈরি হওয়া এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতির অবসান হওয়া উচিত।’

বিবৃতিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রজ এসএম ফজলুল হক এবং অনুজ মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা ঈদ পুনর্মিলনীতে অতিথি হয়ে অংশ নিন, মতামত দিন। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যদি আপনাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, তাহলে আমার আহ্বায়ক থাকার প্রয়োজন নেই।’ 

তিনি মাহমুদুর রহমান মান্না, মাজহারুল হক শাহ, জসিম উদ্দীন সরকারসহ সব প্রাক্তন ভিপি এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ৪ জুলাই জিইসি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠেয় ঈদ পুনর্মিলনীতে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান।

এদিকে ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে প্রচার, প্রকাশনা ও মিডিয়া উপকমিটির এক সভায় অনুষ্ঠান আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ঈদ পুনর্মিলনীকে ঘিরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছাস দেখা যাচ্ছে।  আমরা অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে  ইতোমধ্যে আমরা প্রশাসনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। অনুষ্ঠান সফল করতে প্রশাসনের সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (সিটিএসবি) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন থেকে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কেউ উপস্থিত থাকবে না, এই শর্তে আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন আছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আসল ম চ ধ র অ য ল মন ই আহ ব ন জ ন অন ষ ঠ ন র আহ ব

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ