ব্যায়াম করতে গিয়ে এমন সমস্যা আপনারও হয়?
Published: 26th, June 2025 GMT
ব্যায়ামের সময় ছোটখাটো আঘাত লাগতে পারে। অভ্যাস না থাকলে খানিক শ্রমেই হাঁপিয়ে উঠতে পারেন। সঠিক নিয়মে ব্যায়ামের অভ্যাস করলে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো সহজ। তবে এর বাইরেও ব্যায়ামের সময় এমন কিছু ব্যাপার ঘটতে পারে, যেসবের কারণে অস্বস্তি বা অসুবিধায় পড়তে পারেন আপনি। এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর গ্রিনলাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা.
সাকিব-আল-নাহিয়ান।
যেসব ব্যায়াম করতে পরিশ্রম বেশি, সেসব ব্যায়ামের সময় হঠাৎ করে পাঁজরের নিচে ব্যথা অনুভব করতে পারেন আপনি। পেশিতে টান লাগার জন্য এ রকম ব্যথা হয়। এমনও মনে হতে পারে, পেশির টানের জন্য আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নড়াচড়া করতেও অসুবিধা হতে পারে। কেন হয় এমন, জানেন? মূলত ওয়ার্মআপে অবহেলার জন্যই এ ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে।
ব্যায়ামের শুরুতে ওয়ার্মআপ এবং ব্যায়ামের শেষে কুলডাউন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্মআপের সময়ের পেশি স্ট্রেচিং এবং অন্যান্য হালকা শরীরচর্চা আপনাকে এমন ব্যথা থেকে বাঁচাবে। তবে কারও যদি এ রকম ব্যথা হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম থামিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস আপনার পেশিকে শিথিল করতে সহায়তা করবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পায়ের পেশিতে টানব্যায়াম করতে গিয়ে পায়ের পেছনের পেশিতে টান লাগে অনেকেরই। কাফ মাসল অর্থাৎ হাঁটু থেকে গোড়ালির মাঝের অংশে পায়ের পেছন দিকে যে পেশি থাকে, তাতে টান লাগতে পারে নানান কারণেই। অনেক ক্ষেত্রে এমন সমস্যার জন্য পানিশূন্যতা কিংবা পটাশিয়াম বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দায়ী হয়ে থাকে। তাই সারা দিনে আপনাকে পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাবার খেতে হবে।
দুধ বা দুধের তৈরি খাবার কিংবা ক্যালসিয়ামজাতীয় অন্যান্য খাবার এবং ফলমূলও খাওয়া চাই। তরল দুধ ও ফলের রসে আপনার পানির চাহিদাও মিটবে। কাফ মাসলে টান লাগলে এই পেশিকে স্ট্রেচ করতে চেষ্টা করুন। পা সামনে ছড়িয়ে বসে পায়ের আঙুলগুলোকে হাত দিয়ে টানলে কাফ মাসলের স্ট্রেচিং হয়।
বমি ভাব কিংবা বমিব্যায়াম করতে গিয়ে বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে কারও কারও। এমন সমস্যা এড়াতে হলে খাওয়ার পরপরই ব্যায়াম করা যাবে না। তবে একেবারে খালি পেটে ব্যায়াম করাও ঠিক নয়। তাতেও নানা রকম অস্বস্তি দেখা দেবে। ব্যায়ামের অন্তত এক ঘণ্টা আগে হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন। ভারী খাবার খাওয়ার অন্তত তিন ঘণ্টা পর ব্যায়াম করা যাবে। ভরপেট পানি খেয়েও ব্যায়াম করতে নেই।
মুখের ত্বকে লালচে ভাবব্যায়ামের সময় দেহের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। তাই এ সময় মুখ লাল হয়ে যেতে পারে কারও কারও। এটি আদতে কোনো সমস্যাই নয়। ব্যায়াম শেষে কিছু সময় পর মুখের ত্বক স্বাভাবিক রং ফিরে পায়। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যাঁদের গায়ের রং ফরসা, তাঁদের ক্ষেত্রে এই লালচে ভাব একটু প্রকট হয়ে ওঠে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য য় ম র সময় ব য য় ম করত ব য য় ম কর র জন য আপন র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
সন্ত্রাসীর পা কেটে আনলে লাখ টাকার পুরস্কার
যশোরের চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। সেখানে এক বক্তা হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী লিটনের পা কেটে আনলে ১ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যশোর-চৌগাছা সড়কের ফুলসারা নিমতলা বাজারে শুরু হয় এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই বিক্ষোভ। শুরুতে সড়ক অবরোধ করা হলেও পরে রাস্তার পাশেই সমাবেশ করেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিক্ষোভ চলাকালে মাইকে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নানা স্লোগান ও বক্তব্য দেওয়া হয়। এরই মধ্যে ইকবাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি তাঁর বক্তব্যের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী লিটনের পা কেটে আনতে পারলে ১ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত জনতা করতালি দিয়ে বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানায়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ফুলসারা গ্রামের আবদুল লতিফ বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ঢালি এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। চাঁদা না পেয়ে পিটিয়ে তাঁর হাত-পা ভেঙে দিয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী লিটন, মামুন, টিটো ও তাদের সহযোগীরা। এদের শাস্তির দাবিতে দলমত নির্বিশেষে মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইকবাল হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ক্ষোভে পড়ে হয়তো উনি (ইকবাল) পায়ের মূল্য ঘোষণা করেছেন। তবে এলাকার সব মানুষ সন্ত্রাসী লিটন ও তার লোকজনের ওপর চরম ক্ষুব্ধ। চেয়ারম্যানের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনা কেউ মেনে নিতে পারছেন না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ফুলসারা ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে যান তিনি। চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি জিয়াউর রহমান ঢালি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।
জিয়াউর রহমান ঢালির স্বজনের ভাষ্য, দায়িত্ব পাওয়ার পর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামি লিটনসহ পাঁচ-ছয়জন জিয়াউর রহমানের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। তিনি এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন লিটন। বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন জিয়াউর। পথে লিটন সহযোগীদের নিয়ে গতিরোধ করে। পরে অস্ত্র ঠেকিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। হকিস্টিক দিয়ে জিয়াউরের দুই পা ও হাত ভেঙে তারা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিবুর রহমান বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হলেও এখন জিয়াউর রহমান শঙ্কামুক্ত।
চিকিৎসাধীন জিয়াউর ঢালি জানান, ‘চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একটি পক্ষ আমাকে মেনে নিতে পারছে না। তারা আমাকে হত্যার চেষ্টা শুরু করে। সন্ত্রাসী লিটন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই টাকা না দেওয়ায় হামলা চালিয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলির চেষ্টা করছিল; কিন্তু লোকজন চলে আসায় তারা পালিয়ে যায়।’
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আটকে পুলিশি অভিযান চলছে। এখনও কেউ মামলা করেননি।