ব্যায়ামের সময় ছোটখাটো আঘাত লাগতে পারে। অভ্যাস না থাকলে খানিক শ্রমেই হাঁপিয়ে উঠতে পারেন। সঠিক নিয়মে ব্যায়ামের অভ্যাস করলে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো সহজ। তবে এর বাইরেও ব্যায়ামের সময় এমন কিছু ব্যাপার ঘটতে পারে, যেসবের কারণে অস্বস্তি বা অসুবিধায় পড়তে পারেন আপনি। এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর গ্রিনলাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা.

সাকিব-আল-নাহিয়ান

পাঁজরের নিচে ব্যথা

যেসব ব্যায়াম করতে পরিশ্রম বেশি, সেসব ব্যায়ামের সময় হঠাৎ করে পাঁজরের নিচে ব্যথা অনুভব করতে পারেন আপনি। পেশিতে টান লাগার জন্য এ রকম ব্যথা হয়। এমনও মনে হতে পারে, পেশির টানের জন্য আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নড়াচড়া করতেও অসুবিধা হতে পারে। কেন হয় এমন, জানেন? মূলত ওয়ার্মআপে অবহেলার জন্যই এ ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে।

ব্যায়ামের শুরুতে ওয়ার্মআপ এবং ব্যায়ামের শেষে কুলডাউন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্মআপের সময়ের পেশি স্ট্রেচিং এবং অন্যান্য হালকা শরীরচর্চা আপনাকে এমন ব্যথা থেকে বাঁচাবে। তবে কারও যদি এ রকম ব্যথা হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম থামিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস আপনার পেশিকে শিথিল করতে সহায়তা করবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পায়ের পেশিতে টান

ব্যায়াম করতে গিয়ে পায়ের পেছনের পেশিতে টান লাগে অনেকেরই। কাফ মাসল অর্থাৎ হাঁটু থেকে গোড়ালির মাঝের অংশে পায়ের পেছন দিকে যে পেশি থাকে, তাতে টান লাগতে পারে নানান কারণেই। অনেক ক্ষেত্রে এমন সমস্যার জন্য পানিশূন্যতা কিংবা পটাশিয়াম বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দায়ী হয়ে থাকে। তাই সারা দিনে আপনাকে পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাবার খেতে হবে।

দুধ বা দুধের তৈরি খাবার কিংবা ক্যালসিয়ামজাতীয় অন্যান্য খাবার এবং ফলমূলও খাওয়া চাই। তরল দুধ ও ফলের রসে আপনার পানির চাহিদাও মিটবে। কাফ মাসলে টান লাগলে এই পেশিকে স্ট্রেচ করতে চেষ্টা করুন। পা সামনে ছড়িয়ে বসে পায়ের আঙুলগুলোকে হাত দিয়ে টানলে কাফ মাসলের স্ট্রেচিং হয়।

বমি ভাব কিংবা বমি

ব্যায়াম করতে গিয়ে বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে কারও কারও। এমন সমস্যা এড়াতে হলে খাওয়ার পরপরই ব্যায়াম করা যাবে না। তবে একেবারে খালি পেটে ব্যায়াম করাও ঠিক নয়। তাতেও নানা রকম অস্বস্তি দেখা দেবে। ব্যায়ামের অন্তত এক ঘণ্টা আগে হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন। ভারী খাবার খাওয়ার অন্তত তিন ঘণ্টা পর ব্যায়াম করা যাবে। ভরপেট পানি খেয়েও ব্যায়াম করতে নেই।

মুখের ত্বকে লালচে ভাব

ব্যায়ামের সময় দেহের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। তাই এ সময় মুখ লাল হয়ে যেতে পারে কারও কারও। এটি আদতে কোনো সমস্যাই নয়। ব্যায়াম শেষে কিছু সময় পর মুখের ত্বক স্বাভাবিক রং ফিরে পায়। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যাঁদের গায়ের রং ফরসা, তাঁদের ক্ষেত্রে এই লালচে ভাব একটু প্রকট হয়ে ওঠে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য য় ম র সময় ব য য় ম করত ব য য় ম কর র জন য আপন র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ