যশোরের চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। সেখানে এক বক্তা হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী লিটনের পা কেটে আনলে ১ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যশোর-চৌগাছা সড়কের ফুলসারা নিমতলা বাজারে শুরু হয় এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই বিক্ষোভ। শুরুতে সড়ক অবরোধ করা হলেও পরে রাস্তার পাশেই সমাবেশ করেন তারা। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিক্ষোভ চলাকালে মাইকে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নানা স্লোগান ও বক্তব্য দেওয়া হয়। এরই মধ্যে ইকবাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি তাঁর বক্তব্যের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী লিটনের পা কেটে আনতে পারলে ১ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত জনতা করতালি দিয়ে বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানায়।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ফুলসারা গ্রামের আবদুল লতিফ বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ঢালি এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। চাঁদা না পেয়ে পিটিয়ে তাঁর হাত-পা ভেঙে দিয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী লিটন, মামুন, টিটো ও তাদের সহযোগীরা। এদের শাস্তির দাবিতে দলমত নির্বিশেষে মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইকবাল হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ক্ষোভে পড়ে হয়তো উনি (ইকবাল) পায়ের মূল্য ঘোষণা করেছেন। তবে এলাকার সব মানুষ সন্ত্রাসী লিটন ও তার লোকজনের ওপর চরম ক্ষুব্ধ। চেয়ারম্যানের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনা কেউ মেনে নিতে পারছেন না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ফুলসারা ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে যান তিনি। চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি জিয়াউর রহমান ঢালি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।

জিয়াউর রহমান ঢালির স্বজনের ভাষ্য, দায়িত্ব পাওয়ার পর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামি লিটনসহ পাঁচ-ছয়জন জিয়াউর রহমানের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। তিনি এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন লিটন। বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন জিয়াউর। পথে লিটন সহযোগীদের নিয়ে গতিরোধ করে। পরে অস্ত্র ঠেকিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। হকিস্টিক দিয়ে জিয়াউরের দুই পা ও হাত ভেঙে তারা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিবুর রহমান বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হলেও এখন জিয়াউর রহমান শঙ্কামুক্ত।

চিকিৎসাধীন জিয়াউর ঢালি জানান, ‘চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একটি পক্ষ আমাকে মেনে নিতে পারছে না। তারা আমাকে হত্যার চেষ্টা শুরু করে। সন্ত্রাসী লিটন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই টাকা না দেওয়ায় হামলা চালিয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলির চেষ্টা করছিল; কিন্তু লোকজন চলে আসায় তারা পালিয়ে যায়।’

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আটকে পুলিশি অভিযান চলছে। এখনও কেউ মামলা করেননি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র র রহম ন ফ লস র

এছাড়াও পড়ুন:

গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের

চেয়ারম্যানসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের জড়িয়ে ভুয়া মোবাইল স্ক্রিনশট দিয়ে তৈরি করা গুজবে কান না দেওয়ার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর )। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন শেখ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ জানায় এনবিআর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, ডিজি-সিআইসি, কর গোয়েন্দা ইউনিট এর কমিশনার এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জড়িয়ে ভুয়া মোবাইল স্ক্রিনশট তৈরি করে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য সম্বলিত গুজব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরীর চেষ্টা রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, বিদেশে নিবন্ধনকৃত একটি ফোন নাম্বার এবং একটি এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভুয়া স্ক্রিনশট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এ ধরনের মিথ্যা গুজব ছড়ানো মারাত্মক ফৌজদারি অপরাধ। যে বা যারা এ কাজের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আইনগত ব্যবস্থা নিবে। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে এইসব ভুয়া মোবাইল স্ক্রিনশট দ্বারা সৃষ্ট গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিল সহ বেশ কিছু দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন এনবিআর   সংস্কার ঐক্য পরিষদ। চলতি সপ্তাহেও কলম বিরতি পালন করেছে এনবিআর   সংস্কার ঐক্য পরিষদ। 

এর মধ্যে চেয়ারম্যানসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের ছবিসহ কার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে এইসব ভুয়া মোবাইল স্ক্রিনশট দ্বারা সৃষ্ট গুজবে কান না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

ঢাকা/এনএফ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ