গর্জন নয়, রাশমিকা আসছেন ভয় দেখানোর জন্য
Published: 27th, June 2025 GMT
দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা এখন তরুণ মনের ক্রাশ। একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে হচ্ছেন শিরোনাম। বিশেষ করে ‘পুষ্পা’ সিনেমায় অভিনয় করে পরিচিত পেয়েছেন বিশ্ব জুড়ে। এবার তিনি আসছেন ‘মাইসা’ নামের নতুন সিনেমা নিয়ে। সিনেমাটির মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক নিচ্ছেন তিনি। এ ছবির মধ্য দিয়েই তিনি প্রথমবার একক কেন্দ্রীয় চরিত্রে হাজির হচ্ছেন। ২৭ জুন প্রকাশ পেয়েছে ছবির প্রথম লুক, যেখানে একেবারে নতুন রূপে দেখা গেছে তাঁকে-একজন তীব্র, রুক্ষ, আহত কিন্তু অদম্য নারীরূপে।
প্রকাশিত পোস্টারে রাশমিকার মুখ রক্তমাখা, চুল এলোমেলো, হাতে তলোয়ার-আর চোখে জ্বলছে যুদ্ধের আগুন। যেন গর্জে উঠছেন প্রতিপক্ষকে ছিন্নভিন্ন করতে। প্রযোজনা সংস্থা ইনস্টাগ্রামে ছবিটি প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, দৃঢ়তায় গড়া, অটল ইচ্ছাশক্তিতে ভরপুর, সে গর্জে ওঠে। এটা কেবল শোনার জন্য নয়, ভয় জাগানোর জন্য।
রাশমিকা নিজেও ফার্স্ট লুক শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আমি সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের নতুন কিছু উপহার দিতে—ভিন্ন কিছু, দারুণ কিছু। আর ‘মাইসা’ ঠিক তেমনই এক প্রজেক্ট। এমন একটি চরিত্র, যা আগে কখনও করিনি। এমন এক জগৎ, যেটা আমিও আগে দেখিনি। এই চরিত্রটা তীব্র, রুক্ষ। আমি একদিকে নার্ভাস, অন্যদিকে অসম্ভব রোমাঞ্চিত। এটা কেবল শুরু…”
এই প্রথম লুক প্রকাশের একদিন আগে নির্মাতারা টিজার পোস্টার প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে লেখা ছিল, “Hunted.
ছবিটি পরিচালনা করছেন রাওয়িনদ্রা পুল্লে। নির্মাতার ভাষ্য মতে, এটি হবে রাশমিকার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভিন্নধর্মী চরিত্রগুলোর একটি। আর এই প্রথমবার তিনি এককভাবে একটি ছবির প্রধান মুখ হিসেবে পর্দায় হাজির হচ্ছেন-যা তাঁকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
রাশমিকাকে সর্বশেষ দেখা গেছে সালমান খানের বিপরীতে অ্যাকশনধর্মী ছবি ‘সিকান্দার’-এ। এ আর মুরুগাদোস পরিচালিত সেই ছবি বক্স অফিসে আশানুরূপ সাড়া ফেলতে পারেনি। তবে ‘মাইসা’-তে তাঁর নতুন রূপ দেখে দর্শকের প্রত্যাশা আবারও উঁচুতে উঠেছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মরুর খেজুর চাষে সফলতা, বছরে আয় ৩০ লাখ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সৌদি আরবের খেজুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কুয়েত প্রবাসী জাকির হোসেন। তার বাগানে ছয় প্রজাতির খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। বর্তমানে খেজুর ও চারা বিক্রিকরে বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা উপার্জন করছেন প্রাক্তন এই প্রবাসী।
ফুলবাড়ীর স্বজনপুকুর এলাকায় তিন বিঘা জমি নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে জাকির হোসেনের খেজুর বাগান। তার বাগানে বর্তমান প্রায় ৮০টি গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি গাছে পর্যাপ্ত ফল ধরেছে। মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজুল, বাহির ও আম্বার জাতের গাছ আছে। প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত ফল এসেছে। এসব খেজুর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পাক ধরবে। সুস্বাদু এই খেজুর প্রতিকেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
বাগানের পাশে আরও এক একর জমিতে জাকির হোসেন তৈরি করেছেন খেজুর গাছের নার্সারি। নার্সারিতে তৈরি করেছেন প্রায় ১২ হাজার চারা। এখান থেকে সাধারণ চারা বিক্রি করছেন তিনি ১০০০ টাকা করে এবং কলমি চারা বিক্রি করছেন প্রতিটি ১৫ হাজার টাকা করে।
খেজুর চারার নার্সারি
১৯৯৯ সালে কাজের উদ্দেশ্যে কুয়েতে যান জাকির হোসেন। প্রায় ২০ বছর থাকেন তিনি প্রবাসে। সেখানে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুরের বাগান দেখে উৎসাহিত হন তিনি। ২০১৭ সালে তিনি ১২ কেজি পাকা খেজুর দেশে আনেন। সেই খেজুর থেকে চারা তৈরিতে সফল হন জাকির। প্রথমে ১৯টি চারা তৈরি করে তার পরিচর্যা করেন। চার বছর ধরে গাছগুলোর যত্ন নেওয়ার পর ২০২২ সালে তিনটি গাছে প্রথমবারের মতো ফল আসে। পরের বছর আরও নয়টি গাছে ফল আসে।
প্রথম তিনটি গাছে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি করে খেজুর ধরেছিল। পরে নয়টি গাছে গড়ে ৮০-৯০ কেজি করে খেজুর ধরে। বর্তমান প্রতিটি গাছে ১৫০ থেকে ২০০ কেজি খেজুর ধরেছে। বর্তমানে বাগানটিতে তিন জন শ্রমিক কাজ করেন।
এলাকাবাসী জিল্লুর রহমান বলেন, “আমাদের এলাকায় এই প্রথম সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। আমি জাকির ভাইয়ের কাছ থেকে কয়েকটি চারা সংগ্রহ করেছি। গাছগুলো অনেকটা বড় হয়েছে। আশা করছি খেজুর চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারব।”
কাঁদি ভরা খেজুর
বাগানশ্রমিক রেজাউল করিম বলেন, “জাকির ভাইয়ের খেজুর বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি কাজ করছি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি খেজুর ধরেছে। খেজুর খুবই সুস্বাদু এবং মিষ্টি। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এই বাগান দেখতে। আমরা এই বাগানে তিন জন কাজ করি। এখান থেকে যা দিন হাজরা পাই তা দিয়ে সংসার ভালই চলে।”
খেজুর বাগানমালিক জাকির হোসেন বলেন, “আমি ১৯৯৯ সাল থেকে কুয়েতে ছিলাম। সেখানে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুর চাষ করতে দেখেছি। অনেক বাগান আছে। তখন চিন্তা করি, কেন আমার দেশে এই খেজুর হবে না? দেশে ফিরে প্রথমে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে চারা তৈরি করে আবাদ শুরু করি। ভাল ফলনও হয়। বর্তমান তিন বিঘা জমিতে বাগান করেছি। আমি এখানে খেজুরের চারার নার্সারি তৈরি করছি। সাধারণ চারা এক হাজার টাকা এবং কলমি চারা ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। বর্তমান আমি বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার খেজুর ও চারা বিক্রি করছি।”
ফুলবাড়ী উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. শাহানুর রহমান বলেন, “ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রথমবারের মতো জাকির হোসেন নামে একজন কুয়েত ফিরত ব্যক্তি সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর চাষ করছেন। এটা এলাকাবাসীর জন্য গৌরবের। এই জেলা ধান ও লিচুর জন্য বিখ্যাত। আশা করছি, খেজুরের জন্যও বিখ্যাত হবে। আমরা নিয়মিত ওই খেজুরের বাগান পরিদর্শন করছি এবং মালিককে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।”
ঢাকা/এস