ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ে দুই পক্ষের শুনানির সময় অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান ও অভিযোগকারীর ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

আটক অন্যরা হলেন, অভিযুক্ত টাইলস ব্যবসায়ী পাংশার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মো.

রুহুল আমিন মুকুল, পাংশা উপজেলা বিএনপির সদস্য শেখ পাড়া গ্রামের মো. বাচ্চু বিশ্বাস, রাজবাড়ী শহরের ভবানিপুর এলাকার মামুন শিকদার, মো. ফরিদ হোসেন ও শিশির করীম। এ ঘটনায় ভোক্তার সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেছেন।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান জানান, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ভোক্তার সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। শুক্রবার আসামিদের রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলার একজন তরুণী পাংশার কলেজ রোডে অবস্থিত রুহুল আমিন মুকুলের মালিকানাধীন মেসার্স মুকুল ট্রেডার্স থেকে টাইলস কেনেন। যে মানের টাইলস দেওয়ার কথা তা না দেওয়ায় ওই তরুণী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বলেন, ‘২ জুন বালিয়াকান্দির বাসিন্দা জেসমিন সুলতানা পাংশার টাইলস ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুকুল ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে তাদের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে শুনানির সময় ধার্য করা হয়। তার অফিসটি তিন তলায়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান দুই মাইক্রোবাসে লোকজন নিয়ে আসে। তার কক্ষে ছয়টি চেয়ার আছে। এ কারণে দুই পক্ষকে বলেন, তিনজন করে থাকতে। নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে তিনি অভিযোগকারীর বক্তব্য শোনেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্যে বিঘ্ন সৃষ্টির অজুহাতে অভিযোগকারীর ওপর চড়াও হয় অভিযুক্ত পক্ষ। ওই সময় অভিযুক্তরা ওই নারীকে বলেন, ‌তোকে আগেই বলেছিলাম সমাধান করে নিতে। তা না করে এখানে অভিযোগ করেছিস। এ কথা বলেই ওই নারীর গায়ে হাত তোলে। এতে ওই নারী পড়ে যান। তিনি তখন চেয়ার থেকে উঠে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বাইরে যেতে বলেন। তিনি মোবাইল হাতে নিয়ে ফোন করতে গেলে তার ওপর চড়াও হয়। তাকে ধমকের সুরে তুই তোকারি করে কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নেয়। ওই সময় বাইরে অপেক্ষমান অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন শোরগোল শুরু করলে তাদের ভবনে দ্বিতীয় তলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা এগিয়ে আসে। অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকদের ওপরও চড়াও হয়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা অভিযুক্ত পক্ষের কয়েকজনকে আটকে রাখে। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানালে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছয়জনকে আটক করে নিয়ে যায়। রাতেই তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। অভিযোগকারী ওই নারীকে নিরাপদে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক রক ব ল হ স ন ওই ন র র ওপর সহক র ল কজন সদস য ট ইলস

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ

যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫

সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।

যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।

খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫

ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।

মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।

আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।

আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮

সম্পর্কিত নিবন্ধ