নাইক্ষ্যংছড়িতে মাইন বিস্ফোরণে উড়ে গেল যুবকের পা
Published: 27th, June 2025 GMT
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক যুবকের পা উড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবকের নাম মো. ইউনুছ (২৭)। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ২-পূর্ব ক্যাম্পের ১-বি ব্লকের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, রাত সাড়ে নয়টার দিকে সীমান্তের কাছাকাছি পশ্চিম তুমব্রু গ্রামের লোকজন বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। এরপর শূন্যরেখায় গিয়ে দেখেন কাঁটাতারের বেড়ার ওপর আহত অবস্থায় ইউনুছ পড়ে রয়েছেন। তাঁর ডান পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ইউনুছকে উদ্ধারের পর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে থাকা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক বলেন, সীমান্ত থেকে ২০০ মিটার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন ওই রোহিঙ্গা যুবক। সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের ওই অংশটিতে সে দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দখলে থাকা তুমব্রু রাইট ক্যাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, চোরাচালানের উদ্দেশ্যে ইউনুছ সেখানে গিয়েছিলেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গত পাঁচ দিনে তিনটি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় এক কিশোরসহ তিনজনের পা উড়ে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত ছয় মাসে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও সদর ইউনিয়নের সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ৯ জন কিশোর-তরুণ পা হারিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ছ
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে
প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।
সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।
আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।
একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে