Prothomalo:
2025-08-15@14:23:09 GMT

সাত দশকের শিল্পসম্ভার

Published: 28th, June 2025 GMT

টুকরো টুকরো মেঘ ভাসছে আকাশে। নিচে নিবিড় সবুজ গাছপালার সারি। তার ভেতর দিয়ে এঁকে-বেঁকে বয়ে গেছে নদীটি। এক পাশে সিঁড়ি বাঁধানো ঘাট। সেখানে বজরা নোঙর করে আছে। অন্য তীরে নৌকা বেয়ে যাচ্ছে মাঝি। ‘ধানসিঁড়ি নদী’।

কবি জীবনানন্দ দাশ বরিশালের ঝালকাঠির এই ধানসিঁড়ি নদীর সৌন্দর্য চিরকালীন করে রেখেছেন তাঁর কবিতায়। সেই ধানসিঁড়ি নদীকে রঙে রেখায় রঙিন করে তুলে এনেছিলেন বাংলার প্রকৃতির আরেক নান্দনিক রূপকার বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। ঝালকাঠিতে কোনো এক আর্টক্যাম্পে গিয়ে ২০০২ সালে জলরঙে নয়নাভিরাম করে এঁকেছিলেন ধানসিঁড়ি নদীটিকে। সেই ছবি এখন চিত্রকলা বা কবিতার অনুরাগীরা দেখতে পাবেন উত্তরার গ্যালারি কায়ায়।

বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে যাত্রার ২১তম বছর পেরিয়ে এল গ্যালারি কায়া। সে উপলক্ষে ‘২১তম বর্ষপূতির প্রদর্শনী’ নামে এক বিশেষ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার। শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর ধানসিঁড়ি নদীর ছবিসহ দেশবরেণ্য শিল্পীদের বিভিন্ন মাধ্যমের ৭০টি শিল্পকর্মের এই প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে দেশের চারুকলা চর্চার সাত দশকের প্রতিচ্ছবি। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনী খোলা থাকবে ১২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা অবধি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্যালারি কায়ার পরিচালক শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী জানালেন, ২০০৪ সালের ২৮ মে গ্যালারি কায়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল। শুরু থেকেই কায়া শুদ্ধ সৃজনশীলতা শিল্পকলার বিভিন্ন মাধ্যমগত উপাদানকে উপস্থাপনের চেষ্টা করে আসছে। এই দুই দশকে কায়া নবীন, প্রবীণ শিল্পীদের একক ও দলীয় শিল্পকর্মের ১৫২টি প্রদর্শনী করেছে। এ ছাড়া দেশে ও দেশের বাইরে ৯টি আর্ট ক্যাম্প, ৩৯টি আর্ট ট্রিপ ও ৭টি কর্মশালা আয়োজন করেছে। ভবিষ্যতেও শিল্পকর্ম নিয়ে কায়া তার কর্মোদ্যোগ অব্যাহত রাখবে।

মতিউর রহমান তাঁর বক্তৃতায় চারুশিল্পীদের প্রতি ব্যক্তিগত অনুরাগ ও শিল্পীদের সান্নিধ্যের স্মৃতিচারণা করেন। তিনি গত শতকের পঞ্চাশের দশকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, রশিদ চৌধুরী, আনোয়ারুল হক, মোহাম্মদ কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর, কাজী আবদুল বাসেত, দেবদাস চক্রবর্তী, প্রাণেশ মণ্ডল, নিতুন কুন্ডু, কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবীসহ অগ্রণী শিল্পীদের নেতৃত্বে চারুকলাচর্চা ও বিকাশ, সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শিল্পীদের অংশগ্রহণের বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেন। স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, পুরান ঢাকার নবাবপুর স্কুলের ছাত্র থাকাকালে চারুকলার শিক্ষক হিসেবে শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর ও কাজী আবদুল বাসেতকে পেয়েছিলেন। এই প্রথিতযশা শিল্পী শিক্ষকেরাই শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে রুচি ও সৌন্দর্যের বীজ বপন করেছিলেন। সেই শিল্পচেতনা থেকেই শিল্পকলার প্রতি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর অনুরাগ ও শিল্পকলা সংগ্রহের সূচনা। এই আলোচনায় তিনি দেশের শিল্পকলার বিকাশ, ষাট-সত্তরের দশকে ছাত্র ইউনিয়ন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের কর্মসূচি, প্রগতিশীল আন্দোলনে বিভিন্নভাবে শিল্পীদের যুক্ততার বিভিন্ন ঘটনা স্মৃতির আলোয় তুলে আনেন।

এর পাশাপাশি কলকাতার শিল্পীদের সাহচর্য এবং বিশ্বখ্যাত শিল্পী পাবলো পিকাসোর কাজের কথাও উঠে আসে মতিউর রহমানের আলোচনায়। উপসংহারে তিনি বলেন, প্রথম আলো অতীতের সব সরকারের আমলেই নানামুখী দমন, ভয়ভীতির ভেতর দিয়ে গেছে। এই ভীতি ও চাপ সামলে ওঠার ক্ষেত্রে সাহস ও ধৈর্য ধরতে প্রেরণা দিয়েছে হৃদয়ে থাকা গান, কবিতা, শিল্পকলার প্রতি ভালোবাসা। তিনি বলেন, শিল্প ছাড়া আনন্দ নেই, স্বপ্ন নেই, জীবন নেই। এই শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই চিরতর চলে গেছেন, অনেকে আছেন। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

প্রদর্শনীতে দর্শকেরা শিল্পী কামরুল হাসানের ছাপচিত্র, মোহাম্মদ কিবরিয়ার একটি বড় আকারের বিমূর্ত রীতির লিথোপ্রিন্ট, মুর্তজা বশীরের মহান ভাষা আন্দোলনের সময় করা বিখ্যাত লিনোকাট, ঈদমেলা থেকে ফেরা দুই কিশোর–কিশোরীর ড্রয়িং, কাজী আবদুল বাসেতের সন্তান কোলে মা, হাশেম খানের অ্যাক্রিলিকে আঁকা বিশালাকার বকপাখি, রফিকুন নবীর জলরঙে আঁকা ফুলদানি, চারকোলের করা বনভূমিতে সন্ধ্যা, কাকের ড্রয়িং, দেবদাস চক্রবতীর আঁকা দম্পতির রেখাচিত্র দেখতে পাবেন।

প্রদর্শনীতে ৩৫ জন শিল্পীর শিল্পকর্ম রয়েছে। শিল্পীদের মধ্যে আরও রয়েছেন আবদুশ শাকুর, আবুল বারক আলভী, আহমেদ শামসুদ্দোহা, আলপ্তগীন তুষার, আনিসুজ্জামান, আশরাফুল হক, চন্দ্রশেখর দে, ফরিদা জামান, গৌতম চক্রবর্তী, হামিদুজ্জামান খান, জামাল আহমেদ, কামালউদ্দিন, কামরুজ্জামান সাগর, কনকচাঁপা চাকমা, মাহমুদুল হক, মাকসুদা ইকবাল, মোহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ ইকবাল, মোস্তাফিজুল হক, নগরবাসী বর্মণ, রণজিৎ দাস, রতন মজুমদার, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, শাহানুর মামুন, শেখ আফজাল হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য্য ও সোহাগ পারভেজ।

এই শিল্পকর্মগুলো ১৯৫২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ের। এসব কাজে দেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য, ভাষা আন্দোলন, নাচোলের সাঁওতাল আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে মানুষের জীবনসংগ্রাম, প্রেম, সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা, ব্যক্তিগত অনুভব শিল্পীরা তুলে ধরেছেন তাঁদের নিজস্ব শৈল্পিক বাকভঙ্গিতে।

ফলে শিল্পকলার সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি গত সাত দশকের দেশের চারুশিল্পের বিকাশের গতিপ্রকৃতির একটা ধারণা পেতে পারেন আগ্রহী দর্শকেরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল পকর ম শ ল পকল র ম হ ম মদ স ন দর য

এছাড়াও পড়ুন:

বাঙালি মুসলিমদের নিশানা করেই কি আসামে আদিবাসীদের অস্ত্র দিচ্ছে রাজ্য সরকার

ভারতের আসাম রাজ্যের বিজেপি সরকার তীব্র বিতর্ক সত্ত্বেও গতকাল বৃহস্পতিবার আদিবাসীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ওই দিনই জানানো হয়েছে, অনলাইনে আবেদন করে রাজ্যের ‘অরক্ষিত ও প্রত্যন্ত’ এলাকায় বসবাসকারী ‘মূল নিবাসী উপজাতি গোষ্ঠীর’ মানুষ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

ভারতের সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ স্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়, বিজেপিশাসিত রাজ্যের বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার অতীতের একাধিক ভাষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে ‘অরক্ষিত’ এলাকা বলতে এমন অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে, যেখানে বাঙালি-বংশোদ্ভূত মুসলিমরা বসবাস করেন।

রাজ্যের একাংশের মানুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে শুক্রবার বলেন, এর ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতে সহিংসতা বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিল।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নাগরিকের হাতে অস্ত্র থাকা প্রয়োজন: মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত

অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বৃহস্পতিবার পোর্টাল চালু করার সময় মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি আমি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বা আন্তরাষ্ট্রীয় সীমানা অঞ্চলের কাছাকাছি থাকি, অথবা আমি এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করি, যেখানে আমার সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা খুবই কম। যদি সেখানে একটি সম্প্রদায়ের হার ৯০-৯৫ শতাংশ হয় এবং অপর সম্প্রদায় ৫ শতাংশ হয়, তবে সেখানে উত্তেজনা থাকবে। ঐতিহাসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক—সব স্তরেই উত্তেজনা থাকবে। একটি ছোট ঘটনা এমন পরিস্থিতিও সৃষ্টি করতে পারে যেখানে ৯৫ শতাংশের সম্প্রদায় ৫ শতাংশকে আক্রমণ করে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে পারে।’

আসামের আদিবাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর আরও যুক্তি, সাধারণভাবে একটি থানায় ৬ থেকে ১২ জন কনস্টেবল থাকেন। কোনো সংঘাত হলে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠাতে দুই-তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

বিজেপির এই উগ্রবাদী মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই দুই-তিন ঘণ্টা আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে। এবং যদি লোকেরা (আক্রমণকারীরা) এটা জানে, আক্রান্ত ব্যক্তি বা আক্রান্ত বাড়িতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তাহলে এটিই একটি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের ‘প্রথম প্রতিরক্ষক’ বলেও উল্লেখ করেন হিমন্ত।

কারা পেতে পারেন আগ্নেয়াস্ত্র

আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের জন্য ‘সেবা সেতু’ নামে একটি পোর্টালে আবেদন করা যাবে। সেবা সেতু ওয়েবসাইটে এত দিন আসাম সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক পরিষেবার ঘোষণা দেওয়া হতো। সেসবের পাশাপাশি এখন জানানো হয়েছে, কারা আগ্নেয়াস্ত্র পেতে পারেন।

ওয়েবসাইটে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আবেদনকারীকে আসামের আদিবাসী হতে হবে, তার বয়স কমপক্ষে ২১ হতে হবে এবং ‘অরক্ষিত ও প্রত্যন্ত’ অঞ্চলে বসবাস করতে হবে। আবেদনকারীর অপরাধমূলক কোনো ব্যক্তিগত ইতিহাস থাকা চলবে না এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও থাকা চলবে না।

সেবা সেতু ওয়েবসাইটে শর্তে আরও বলা হয়, আবেদনকারীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। ২০১৬ সালের অস্ত্র আইন মোতাবেক উপযুক্ত প্রশিক্ষণও থাকতে হবে।

তবে প্রচারমাধ্যমের বক্তব্য অনুসারে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী ‘অরক্ষিত অঞ্চল’ বলতে বাঙালি মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলকে বোঝালেও সেবা সেতুতে অরক্ষিত অঞ্চলের কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। বন্দুক সংগ্রহ করার আগে আরও একাধিক বিষয়—যেমন কেন তার আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োজন—এ বিষয়ে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে তার বক্তব্য রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে।

ভারতের বর্তমান অস্ত্র আইন অনুসারে একজন সাধারণ বেসামরিক নাগরিকের পক্ষে আইনগতভাবে অস্ত্র কেনা বা সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব। আসাম সরকারের এই নতুন নির্দেশনা অস্ত্র সংগ্রহ করাকে অনেক সহজ করে দেবে বলে আসামের সাধারণ মানুষই মনে করছেন।

নাগরিক সমাজের বিরোধিতা

আজ শুক্রবার প্রথম আলোর সঙ্গে এই বিষয়ে আসামের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক কথা বলেন। তাঁদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি আসামে তৈরি হতে চলেছে।’

ওই ব্যবসায়ী বলেন, এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই যে আসামে এই মুহূর্তে প্রায় ৪০ শতাংশ মুসলিম রয়েছেন, যাঁদের বড় অংশই বাঙালি মুসলমান। আসামে যে জনবিন্যাসের একটা পরিবর্তন হচ্ছে তা–ও অনস্বীকার্য। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, সমাজের একটি বৃহৎ অংশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়ে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।

আসামের ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, যে রাজ্যে বা দেশে সাধারণ মানুষের হাতে বেশি অস্ত্র থাকে, সেখানে সাধারণভাবেই বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মাঝেমধ্যেই স্কুল-কলেজে গুলি চলে। আসামে সুকৌশলে পরিস্থিতিকে সেই দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনআসামে কাদের লক্ষ্য করে আদিবাসী, মূল নিবাসীদের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দিল হিমান্তের সরকার৩০ মে ২০২৫

উত্তর-পূর্ব ভারতে একসময় কর্মরত এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তার মতে, এর ফলে আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশেও সহিংসতা বাড়বে।

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দুক এমন এক জিনিস, যা এক জায়গায় থেমে থাকে না। একেকটি বন্দুকের বিরাট আয়ু হয়, যত্নে রাখলে একেকটি বন্দুক দীর্ঘদিন কাজ করে। ফলে এই আগ্নেয়াস্ত্র ধীরে ধীরে কালোবাজারে বিক্রি হবে এবং তা গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পড়বে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও ঢুকে পড়বে। আসামের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত রয়েছে।’

সাবেক ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গা, যার সীমান্তের মাত্র ২ শতাংশ রয়েছে ভারতের সঙ্গে। বাকি ৯৮ শতাংশ অন্যান্য দেশের সঙ্গে।

অবসরপ্রাপ্ত ওই পুলিশ কর্তা বলছিলেন, ‘সেসব দেশের সঙ্গে নানা কারণে ভারতের সম্পর্ক বেশ খানিকটা নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, তা ঈশ্বরই জানেন।’

উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের কথায়, এর ফলে শুধু আসামে নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যে সহিংসতা বাড়বে। কারণ, এই বন্দুক সেখানেও পৌঁছবে।

ওই গবেষক বলেন, ‘আমার মনে হয় এই কাজটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হলো। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হয়তো এভাবে নিজেকে জাতীয় রাজনীতিতে তুলে ধরতে চাইছেন। কারণ, তিনি দেখেছেন, মুসলিম সমাজের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক নেতারা তাঁদের রাজনৈতিক জীবনে চরম উন্নতি করেছেন।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে হিমন্তের বিতর্কিত মন্তব্য, নিন্দা জানাল বিরোধীরা১৮ মে ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ