স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে ‘স্পার্ককিটি’ নামের ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে একদল হ্যাকার। ম্যালওয়্যারটি বিভিন্ন ভুয়া অ্যাপের মাধ্যমে স্মার্টফোনে প্রবেশ করেই ফোনের গ্যালারিতে থাকা বিভিন্ন ছবি ও স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে হ্যাকারদের সার্ভারে পাঠাতে থাকে। এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের সাইবার হামলা চালানোর পাশাপাশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরি করছে হ্যাকাররা। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা ক্যাসপারস্কি এ ম্যালওয়্যার শনাক্ত করেছে।

ক্যাসপারস্কির তথ্যমতে, অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস দুই অপারেটিং সিস্টেমেই স্পার্ককিটি ম্যালওয়্যার সক্রিয় রয়েছে। স্পার্ককিটি মূলত ‘ট্রোজান’ ধরনের ভাইরাস। ক্রিপ্টোকারেন্সি কনভারটার, মেসেজিং অ্যাপ এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের অনানুষ্ঠানিক সংস্করণসহ বিভিন্ন ভুয়া অ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ম্যালওয়্যারটি।

আরও পড়ুনস্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার থাকার ৬ লক্ষণ১১ নভেম্বর ২০২৪

ব্যবহারকারী যখন স্পার্ককিটিযুক্ত কোনো অ্যাপ ফোনে ইনস্টল করেন, তখন অ্যাপটি ছবি দেখার অনুমতি চায়। অনুমতি পেলে ম্যালওয়্যারটি ফোনের গ্যালারিতে থাকা সব ছবি স্ক্যান করার পাশাপাশি সেখানে থাকা স্ক্রিনশটের লেখাও শনাক্ত করে। অনেকেই নিজেদের ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটের রিকভারি ফ্রেজ বা ব্যক্তিগত তথ্য স্ক্রিনশট আকারে ফোনে সংরক্ষণ করেন। ফলে সেই স্ক্রিনশটের তথ্য কাজে লাগিয়ে সহজেই ব্যবহারকারীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট থেকে অর্থ চুরি করতে পারে হ্যাকাররা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরে থাকা সব অ্যাপ নিরাপদ এমনটি ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্বাসযোগ্য নাম, পরিচিত আইকন ও ভুয়া ব্যবহারকারীর রিভিউ দিয়ে ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপকে সত্যিকারের অ্যাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

আরও পড়ুনঅ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের তথ্য নতুন যে কৌশলে চুরি করছে ম্যালওয়্যার২৩ জুন ২০২৫

সাইবার হামলা থেকে নিরাপদে থাকতে অ্যাপ নামানোর সময় বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অ্যাপ নামানোর আগে নির্মাতাদের পরিচয় ভালোভাবে যাচাই করার পাশাপাশি অন্য ব্যবহারকারীদের মন্তব্যও ভালোভাবে পড়তে হবে। এর পাশাপাশি যেসব অ্যাপ ফোনের গ্যালারি ব্যবহারের অনুমতি চায়, সেগুলো নামানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য লওয় য র স ক র নশট ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ