আগামী নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক: শফিকুল আলম
Published: 28th, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেছেন, “আগামী নির্বাচন হবে, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠুু, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক। নির্বাচনকে ঘিরে যে উৎসবমুখর পরিবেশে দেখা যেতো, সেই পরিবেশকে ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। নির্বাচনে দেশের জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিতে পারবেন।”
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ ও যোগ্য ব্যক্তি যাতে প্রার্থী হতে পারেন সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, “এজন্য নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটি প্রস্তাবনা পেশ করেছে। আশা করছি, দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় ও উৎসবমুখর ভোট আপনারা দেখতে পাবেন।”
আরো পড়ুন:
ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী: নাজমুল হাসান
এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ায় কেএমপি ঘেরাও, প্রধান ফটকে তালা
শফিকুল আলম বলেন, “খুলনার উন্নয়নে অন্তবর্তী সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আছে। এই শহরের উন্নয়নের সঙ্গে মোংলা বন্দরের ব্যবহার বাড়ানোর সম্পর্ক আছে। মোংলা বন্দরের উন্নয়নের জন্য সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মোংলা বন্দরের পাশে অর্থনৈতিক জোনে শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে চীন। এজন্য বিডা কাজ করছে।”
বেসরকারি খাতে খুলনায় নতুন নতুন পাট শিল্প কারখানা স্থাপনে উদ্যোগী হলে সরকার তাদের সহায়তা দেবে বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, “সরকারি অনুদানে আর ইন্ডাষ্ট্রি চালানো সম্ভব না। এখানে বেসরকারি উদ্যাগে নিতে হবে। সেজন্য বিডা, কমার্স মিনিস্ট্রি, এডুকেশন মিনিস্ট্রি, ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে। শিক্ষা শহর হিসেবেও বেড়ে ওঠার সুযোগ আছে খুলনার। অনেকগুলো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এখানে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় খুলনা শহরে অনেক ক্লাইমেট রিফুজি আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। তারা যাতে নিরাপদ আবাসন পান সে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শ্যামনগর গাবুয়ায় এলজিইডির উদ্যোগে নিরাপদ পানি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এখন সেটা সমস্ত উপকূল এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
শফিকুল আলম জানান, সরকারের নানা উদ্যোগ এখন দৃশ্যমান না হলেও এক সময় তা দেখা যাবে এবং আগামী এক দশকে খুলনা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
খুলনার বন্ধ হয়ে যাওয়া জুট মিলগুলোতে যেসব স্কুল আছে, সবগুলোকে সরকারিকরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, “গত ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি জানতে চেয়েছে। বৈঠকটি শুধুই সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। তাই সামনে আনার মতো কোনো কারণ নেই।”
সভায় ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র জন য স
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী