৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।
তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।
আরো পড়ুন:
গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি
চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।
ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”
সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো.
২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গকস শপথ গ রহণ ব শ বব দ য অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী