রাজধানীর মালিবাগে হাফিজুর রহমান (৬২) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে তার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তার বাসার সামনের এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। তাতে দেখা যায়, হেলমেট মাথায় এক ব্যক্তি চাপাতি দিয়ে হাফিজুর রহমানকে কোপ মারছে। 

এ ঘটনায় শনিবার শাহজাহানপুর থানায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।   

ভুক্তভোগী হাফিজুর মালিবাগ রেলগেট সংলগ্ন মাধবীলতা ভবনে বাস করেন। তিনি সমকালকে জানান, ব্যবসার কাজে বুধবার বন্ধু ইতেমাদ হোসেনকে নিয়ে পটুয়াখালী গিয়েছিলেন। কাজ শেষে বৃহস্পতিবার রাতে ফিরে আসেন ঢাকায়। রাত পৌনে ৩ টায় মালিবাগ রেলগেটের পাশে বাস থেকে নামেন তারা। বন্ধুকে বিদায় দেওয়ার পর হাফিজুর বাসার দিকে হাঁটছিলেন। রেলগেটের পাশে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন বসেছিলেন। এ সময় ওই তিনজন তার কাছে প্রধান সড়ক কোন দিকে জানতে চায়। তিনি তাদের যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে বাসার উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন। একটি ভবনের পরই তার বাসা। ভবনের সামনে দারোয়ানের গেট খোলার অপেক্ষা করছিলেন। তখন রাত ১০টা ৫২ মিনিট। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা সেই তিন ব্যক্তি এসে তার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে চাপাতি দিয়ে তার হাতে কোপ মেরে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাতে পাঁচ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল। 

হাফিজুর বলেন, ঘটনার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। বাম হাতের হাড় ভেঙে গেছে। 

শাহজাহানপুর থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় গতকাল রাতে হাফিজুর বাদি হয়ে মামলা করেছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে নতুন করে সংশয়ে বিএনপি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল লন্ডন বৈঠকের পর সেটা কেটেছে বলে মনে করা হচ্ছিল; কিন্তু দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই নতুন করে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংশয় তৈরি হয়েছে বিএনপিতে। বিশেষ করে ভোটের বিষয়ে সরকারের দিক থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে স্পষ্ট কোনো বার্তা না দেওয়ায় এ নিয়ে জল্পনাকল্পনা বাড়ছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, লন্ডন বৈঠকের কোনো প্রতিফলন নির্বাচনের কমিশনের কার্যক্রম তারা দেখছেন না। পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচনসহ কিছু বিষয় নতুন করে সামনে আনার চেষ্টা হচ্ছে। এটাকে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার উপাদান বলে মনে করছে বিএনপি।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তাঁরা দীর্ঘ সময় একান্তে কথা বলেন। বিএনপির নীতি–নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা ধারণা করেছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার যমুনায় এই বৈঠকে সিইসিকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর কথা বলবেন; কিন্তু সরকারের দিক থেকে এই বৈঠককে শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ বলা হয়েছে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনও কোনো বক্তব্য দেয়নি। ফলে বিএনপি মনে করছে, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের বিষয়ে সিইসিকে স্পষ্ট কোনো বার্তা দেননি। যার ফলে প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির সাক্ষাতে কী আলাপ হয়েছে, তা পরিষ্কার করার আহ্বান জানায় বিএনপি। এ বিষয়ে গত শুক্রবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যদি উভয় পক্ষ থেকে জাতির সামনে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়, তাহলে আমরা আশ্বস্ত হই।’

আরও পড়ুননির্বাচন বিলম্বিত বা না হওয়ার জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাওয়া হচ্ছে: সালাহউদ্দিন আহমদ৯ ঘণ্টা আগেযারা স্থানীয় নির্বাচন ও আনুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি তুলছে, তাদের একটা উদ্দেশ্য থাকতে পারে; হয় নির্বাচন বিলম্বিত করা অথবা নির্বাচন না হওয়া।সালাহউদ্দিন আহমদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপি

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবারের ওই সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন বিষয়ে কথোপকথনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংস্কারপ্রক্রিয়া কতটা এগিয়েছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে সিইসির কাছে জানতে চেয়েছেন। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো আলোচনার কথা জানা যায়নি।

১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি শেষ করা গেলে ২০২৬ সালে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে বলে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। সে ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, তাঁদের কাছে এখন পর্যন্ত সরকারের দিক থেকে লন্ডন বৈঠকের ওই ঘোষণার কোনো প্রতিফলন নেই; বরং রাজনীতিতে নতুন নতুন কিছু ইস্যু তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, যা জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার উপাদান বলে মনে করছেন। এর মধ্যে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা এবং আগামী নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি জোরদার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টা-সিইসির কী আলাপ হলো, পরিষ্কার করার আহ্বান সালাহউদ্দিনের২৭ জুন ২০২৫প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ