Samakal:
2025-06-29@02:14:49 GMT

‘অনলাইন সচেতনতা বাড়াতে হবে’

Published: 28th, June 2025 GMT

‘অনলাইন সচেতনতা বাড়াতে হবে’

নারী ও শিশু বিশেষত, তাদের প্রতি অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি, নানা ধরনের পর্নোগ্রাফিক ছবি ছাপানো এবং সেগুলো দিয়ে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করা, ব্ল্যাকমেইল করা– এগুলো মোটামুটি পুরোনো রোগে পরিণত হয়েছে। যদিও আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। 
তবুও বিভিন্নভাবে এর মাধ্যমে নারী ভয়াবহ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
অন্যান্য সম্পর্কের মতো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও ঘটছে এগুলো। স্ত্রীকে হয়তো স্বামী ক্রমাগত ভয় দেখাচ্ছেন– তাঁর সঙ্গে না থাকলে বা তাঁর কথা না শুনলে নিজেদের অন্তরঙ্গ ছবিগুলো প্রকাশ করে দেবেন। কিংবা প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতার কারণে এগুলো একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আমাদের পূর্ববর্তী কোনো আইনে নারী ও শিশুকে এ ধরনের নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো বিধান ছিল না। ২০২৩ সালের সাইবার সুরক্ষা আইন অধ্যাদেশেও বিষয়টি খুব পরিষ্কার না। যৌন হয়রানি, ব্ল্যাকমেইলিংসহ বিভিন্ন হয়রানিকে একসঙ্গে করে একটি ধারাতে যুক্ত করা হয়েছে। এটি স্বীকৃতির দিক থেকে খুব  ছোট আকারে হলেও একটি পথ উন্মুক্ত হলো। এ আইনে অন্যায়কারীকে আগে থেকেই চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে এই কাজ করা বেশ জটিল এবং ভার্চুয়াল জগতের অপরাধগুলো অত্যন্ত আকস্মিকভাবেই হয়ে থাকে। কে, কার সঙ্গে ব্যক্তিগত মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করছে এবং সেই যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কে, কার সঙ্গে কেমন সম্পর্কে আবদ্ধ হচ্ছে– সেটি কোনোভাবেই মনিটর করা সম্ভব নয়। যদি তা মনিটর করার জন্য আইন করা হয়, সেটি আবার ব্যক্তিগত জায়গা লঙ্ঘন করবে।
ফলে অনলাইন নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ার পরিবর্তে আমাদের অনলাইন সচেতনতা বাড়াতে হবে। ভার্চুয়াল জগৎ ব্যবহার করতে গিয়ে নিপীড়িত বা বিপদের মধ্যে পড়তে হতে পারে, সে জন্য নয় শুধু; সারা পৃথিবীর বৃহৎ অর্থনৈতিক লেনদেন ও ব্যক্তিগত তথ্যের ভান্ডার জমা থাকে এই ভার্চুয়াল জগতে। পশ্চিমা দেশগুলোতে অনলাইনে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক অপরাধ ঘটে। এসব অপরাধ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্যও দরকার সচেতনতা বাড়ানো। 
ব্যক্তিকেন্দ্রিক অপরাধ ছাড়াও অনলাইনে যে কোনো ধরনের তথ্য চুরি, তা ফাঁস করা কিংবা অন্য কাজে ব্যবহার করা– এগুলো সবচেয়ে 
বড় বিপদের জায়গা।
আসলে কীভাবে সচেতন ও সতর্কতার সঙ্গে অনলাইন ব্যবহার করা যায়, নিজের ক্ষতি যাতে না হয় কিংবা প্রলোভনের ফাঁদে না পড়া– রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এই শিক্ষাগুলোর সঙ্গে প্রচার-প্রচারণাও বাড়ানো দরকার। তাহলে তরুণ প্রজন্মও বুঝতে পারবে যে কোনটা আসল বিষয়।
এর মধ্যেও যে সম্পর্কে বন্ধন আসলেই তৈরি হচ্ছে না, তাও কিন্তু না। আমি পেশাগত জীবনে বেশ কয়েকজনকে পেয়েছি, যাদের পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে তাদের প্রণয় ও পরিণতি ঘটেছে। তাই অনলাইনের বিপদ কী, সেসব নিয়ে শিক্ষাদীক্ষা প্রচার-প্রচারণা যেমন দরকার, তেমনি শিক্ষা কার্যক্রমের মাঝেও এ বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্তি দরকার। প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হতে পারে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাদা করে এসব বিষয়ে কথা বলা এবং প্রচার-প্রচারণা চালানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। 
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ দায়িত্ব নিতে পারে। তাদের অবকাঠামো ও লোকবল সবকিছুই আছে। তাদের অতিরিক্ত একটি দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। যখনই এসব ইস্যু তৈরি হবে, তখন এবং তার আগে থেকেই মানুষের সঙ্গে হৃদ্যতা বাড়িয়ে সতর্ক করা। যখনই কেউ একজন বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে, কোনোকিছু না জানিয়ে বা তাকে কেউ অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে– সে তথ্য জানার পর দ্রুততর সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা। ভিকটিমের অ্যাকাউন্ট অ্যাকসেস করার মাধ্যমে মূল ঘটনা বের করা। অ্যাকাউন্ট অ্যাকসেস বর্তমানে খুব কঠিন বিষয় না। তাহলে পরিস্থিতি অনেক বেশি খারাপের দিকে যাওয়ার আগে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করি। v
গ্রন্থনা : দ্রোহী তারা
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অনল ইন ব যবহ র অপর ধ ধরন র দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে নতুন করে সংশয়ে বিএনপি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল লন্ডন বৈঠকের পর সেটা কেটেছে বলে মনে করা হচ্ছিল; কিন্তু দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই নতুন করে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংশয় তৈরি হয়েছে বিএনপিতে। বিশেষ করে ভোটের বিষয়ে সরকারের দিক থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে স্পষ্ট কোনো বার্তা না দেওয়ায় এ নিয়ে জল্পনাকল্পনা বাড়ছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, লন্ডন বৈঠকের কোনো প্রতিফলন নির্বাচনের কমিশনের কার্যক্রম তারা দেখছেন না। পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচনসহ কিছু বিষয় নতুন করে সামনে আনার চেষ্টা হচ্ছে। এটাকে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার উপাদান বলে মনে করছে বিএনপি।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তাঁরা দীর্ঘ সময় একান্তে কথা বলেন। বিএনপির নীতি–নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা ধারণা করেছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার যমুনায় এই বৈঠকে সিইসিকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর কথা বলবেন; কিন্তু সরকারের দিক থেকে এই বৈঠককে শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ বলা হয়েছে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনও কোনো বক্তব্য দেয়নি। ফলে বিএনপি মনে করছে, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের বিষয়ে সিইসিকে স্পষ্ট কোনো বার্তা দেননি। যার ফলে প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির সাক্ষাতে কী আলাপ হয়েছে, তা পরিষ্কার করার আহ্বান জানায় বিএনপি। এ বিষয়ে গত শুক্রবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যদি উভয় পক্ষ থেকে জাতির সামনে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়, তাহলে আমরা আশ্বস্ত হই।’

আরও পড়ুননির্বাচন বিলম্বিত বা না হওয়ার জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাওয়া হচ্ছে: সালাহউদ্দিন আহমদ৯ ঘণ্টা আগেযারা স্থানীয় নির্বাচন ও আনুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি তুলছে, তাদের একটা উদ্দেশ্য থাকতে পারে; হয় নির্বাচন বিলম্বিত করা অথবা নির্বাচন না হওয়া।সালাহউদ্দিন আহমদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপি

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবারের ওই সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন বিষয়ে কথোপকথনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংস্কারপ্রক্রিয়া কতটা এগিয়েছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে সিইসির কাছে জানতে চেয়েছেন। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো আলোচনার কথা জানা যায়নি।

১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি শেষ করা গেলে ২০২৬ সালে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে বলে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। সে ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, তাঁদের কাছে এখন পর্যন্ত সরকারের দিক থেকে লন্ডন বৈঠকের ওই ঘোষণার কোনো প্রতিফলন নেই; বরং রাজনীতিতে নতুন নতুন কিছু ইস্যু তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, যা জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার উপাদান বলে মনে করছেন। এর মধ্যে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা এবং আগামী নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি জোরদার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টা-সিইসির কী আলাপ হলো, পরিষ্কার করার আহ্বান সালাহউদ্দিনের২৭ জুন ২০২৫প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ