গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চার শতাধিক। শনিবার দুপুর থেকে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। এ তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আল-শিফা হাসপাতালের কর্মীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজা নগরে একটি স্টেডিয়ামের অদূরে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় শিশুসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন। উদ্বাস্তু হাজারো ফিলিস্তিনি তাঁবু গেড়ে ওই স্টেডিয়ামে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিবিসির যাচাই করা ছবি ও ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, হামলার পর লোকজন খালি হাতে মাটি খুঁড়ে মরদেহ খুঁজছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাঁরা কয়েকজন মিলে সেখানে বসে ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ পাশের একটি সড়ক থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান।

আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত১১ ঘণ্টা আগে

আহমেদ কিশাউই নামের এই ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘এখানে পুরো এলাকা তাঁবুতে পূর্ণ। এখন সেসব তাঁবু বালুর নিচে তলিয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে তো কোনো সন্ত্রাসী নেই। কিন্ত শিশুসহ সাধারণ মানুষের প্রতি কোনো দয়া না দেখিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।’

আল–মাওয়াসি এলাকায় আবাসিক ভবন ও তাঁবুতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও অন্তত ১৪ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুও আছে। নিহত ব্যক্তিদের কয়েকজন স্বজন মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, হামলা যখন হয়, তখন শিশুদের নিয়ে মানুষগুলো ঘুমাচ্ছিল।

হামলায় নিহত শিশুদের দাদি সৌদ আবু তেইমা নামের প্রবীণ ওই নারী বলেন, ‘এই শিশুরা তাদের (ইসরায়েলের) কী ক্ষতি করেছে? তাঁদের কী অপরাধ ছিল?’

ইসরায়েলের হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনির মরদেহ নিয়ে যাচ্ছেন কিছু মানুষ। শনিবার গাজা নগরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ

যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫

সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।

যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।

খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫

ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।

মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।

আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।

আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮

সম্পর্কিত নিবন্ধ