বাড়ির উঠানে বড় টাবভর্তি উষ্ণ পানিতে গা ভিজিয়ে আরাম করে শুয়ে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের পেমব্রোকের বাসিন্দা কোলিন। তখন রাত ৯টা হবে, হঠাৎ দেখতে পান, আকাশে রহস্যময় একটি বস্তু ভেসে বেড়াচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন তিনি।

পরে স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে কোলিন বলেন, ‘আমি হট টাবে আরাম করছিলাম। হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি, ছোট্ট কিছু একটা ভেসে বেড়াচ্ছে। আমার মনে হলো, ওটা আসলে কী?’

বস্তুটি কেমন দেখতে ছিল—প্রশ্নের জবাবে কোলিন বলেন, ‘ওটা দেখে মনে হচ্ছিল, যেন আগুনে কিছু একটা জ্বলছিল বা এমন কিছু, আর খুব দ্রুত নিচে নেমে আসছিল। আমি সত্যিই বুঝতে পারছিলাম না, ওটা আসলে কী হতে পারে।’

নিজের চোখে যা দেখছেন, তা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কোলিন। সঙ্গে সঙ্গে নিজের মুঠোফোন বের করে সে দৃশ্য ধারণ করা শুরু করেন তিনি। কোলিনের মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) বলেছে, ওই এলাকায় কোনো ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। তবে সংস্থাটি ভিডিওটির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

কোলিন বলেন, ‘আমি হঠাৎ আকাশের দিকে তাকালাম, তখনই আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। ভাবলাম, ঈশ্বর, এখন কী ঘটতে চলেছে?’

কোলিন মনে মনে কোনো কিছু ছুটে আসার বিকট আওয়াজ পাওয়া বা বিস্ফোরণের শব্দের আশঙ্কা করছিলেন। কারণ, সেটি দ্রুত বেড়ে নিচে নেমে আসছিল। কিন্তু তাঁকে হতবাক করে দিয়ে বস্তুটি একসময় নীরবে চোখের আড়ালে চলে যায়।

কোনো শব্দই পাননি জানিয়ে কোলিন বলেন, ‘সবকিছু এতটাই শান্ত ছিল! কোনো শব্দই পাওয়া যায়নি। আর সেটাই আমাকে আরও বেশি বিভ্রান্ত করেছে। কারণ, সাধারণত যখন কিছু উড়ে যায়, তখন তার আওয়াজ শোনা যায়।’

রহস্যময় বস্তুটি কী ছিল, তা এখনো জানা যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ল ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা নগরীর পথে ইসরায়েলি ট্যাংক, পালাচ্ছেন বাসিন্দারা

ফিলিস্তিনের গাজায় অভিযানের পরিসর আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এবার গাজা নগরী দখলে নিতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এই নগরীর ১০ লাখ বাসিন্দার জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চল থেকে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে, তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে এগিয়ে আসছে ট্যাংক।

এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় নতুন অভিযানের রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছে। গাজার সবচেয়ে বড় নগরী দখলে নিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর সামরিক বাহিনী নতুন এ অভিযান অনুমোদন করল।

সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আভিযানিক পরিকল্পনার মূল রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির।

কবে নাগাদ ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে প্রবেশ করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা জানায়নি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার। তবে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-ছাওয়াবতা বুধবার বলেন, গাজা নগরীতে আগ্রাসী অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

২২ মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে সেখানকার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার বেশির ভাগই দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন গাজা নগরীতে।

স্থল অভিযানের বিষয়ে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, এসব হামলা পোড়া মাটি নীতি এবং বেসামরিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন পরিস্থিতি তৈরির মারাত্মক উসকানিরই অংশ।

গাজা নগরীর তাল আল-হাওয়া এলাকার বাসিন্দা সাবাহ ফাতোম (৫১) ওই এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ শুনতে পাওয়ার কথা টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান। এই নারী বলেন, অনেক বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে ট্যাংক এগিয়ে আসছে। আকাশে ড্রোন উড়ছে। বহু মানুষ বাড়িঘর ও তাঁবু ছেড়ে শহরের পশ্চিম দিকে ছুটছেন।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন ৪৩৭ জন।

ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে একই সময়ে অনাহারে মারা গেছেন আট ফিলিস্তিনি, তাঁদের মধ্যে তিনজন শিশু। এ নিয়ে অনাহারে ২৩৫ ফিলিস্তিনি মারা গেলেন, যাঁদের মধ্যে ১০৬টি শিশু। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৬১ হাজার ৭২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি।

আরও পড়ুনইসরায়েলি সেনাপ্রধানই কি নেতানিয়াহুর লাগাম টেনে ধরবেন৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ