মানিকগঞ্জ নামটি কীভাবে এল? এ প্রশ্নের সবচেয়ে জনপ্রিয় উত্তর হলো, মানিক শাহ নামের এক দরবেশ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই এলাকায় আসেন আর নিজের খানকাহ (ধর্মীয় স্থান) প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁকে স্মরণীয় করে রাখতে এ অঞ্চলের নাম হয় মানিকগঞ্জ। মানিকগঞ্জ শহরটিতে ঐতিহাসিকভাবেই সুফি, দরবেশ বা পীর প্রভাব বিস্তার করে এসেছেন। পেশায় কলেজশিক্ষক শাহ মোহাম্মদ মহসিন খানও তাঁদের মতোই একজন আলেম, যিনি ইসলামি দর্শনে উদ্বুদ্ধু করেছেন সেখানকার হাজারো মানুষকে।
মেট্রোপলিটনের কোলাহল থেকে বের হয়ে মানিকগঞ্জের শিববাড়ি-হিজুলী এলাকায় একটা ছোট্ট পুকুর, তার চারপাশে সবুজ গাছপালা। সেই গাছের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে লাল ইটের ২৪ ফুট উচ্চতার একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। এটিই শাহ মোহাম্মদ মহসিন খানের দরগাহ বা সমাধিসৌধ। স্থানীয়ভাবে এটি ‘ওয়াসি মহল’ নামে বেশি পরিচিত। এখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন শাহ মোহাম্মদ মহসিন খান, তাঁর স্ত্রী বেগম নূরজাহান ও বাবা মো.
এই সমাধিসৌধের নকশা করেছেন ‘স্থাপতিক’–এর প্রধান স্থপতি মো. শরীফ উদ্দিন আহমেদ। পাট দিয়ে প্লাস্টিক তৈরি করে আলোড়ন ফেলা বিজ্ঞানী মোবারক আহমদ খানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছোটবেলার এক বন্ধুর মাধ্যমে। এই বিজ্ঞানীই তাঁর বাবা মহসিন খানের স্মৃতি ও কর্মকে উজ্জীবিত রাখতে একটি পারিবারিক সমাধিসৌধ তৈরির ইচ্ছার কথা জানান। করোনা মহামারিকালে শুরু হয় কাজ।
সমাধিসৌধটি সুলতানি আমলের মসজিদ ও দরগাহ, যেমন বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ বা নয় গম্বুজ মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত। খান জাহান আলী নিজেই নিজের মাজারের নকশা করেছিলেন। সম্রাট শাহজাহানের পারিবারিক সমাধিসৌধের নাম তাজমহল। এই স্থাপনার নকশা করার সময় মো. শরীফ উদ্দিন আহমেদ এ রকম বিভিন্ন স্থাপনা নিয়ে প্রায় তিন মাস পড়াশোনা করেন। এই স্থপতি বলেন, ‘আমি এখানে আলো নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করতে চেয়েছি। সাম্প্রতিক কালে আলো নিয়ে সবচেয়ে ভালো কাজ করেছেন লুই আই কান। আমাদের সংসদ ভবনে যে আলোর খেল, এটা একটা অন্য মাত্রার কাজ। আমাদের দেশে মেরিনা তাবাশ্যুম, কাশেফ মাহবুব চৌধুরীর বানানো স্থাপত্যে চমৎকার আলোছায়ার খেলা দেখা যায়। এই সবকিছু থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার কাজটা করতে চেয়েছি।’
দরগাহর ভেতরে আলো আনা হয়েছে এভাবেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মহস ন খ ন ম ন কগঞ জ র নকশ স থপত
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফুড পয়জনে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল: পিন্টু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু বলেছেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাবন্দি অবস্থায় ছিলেন। তিনি কারাগারের অভ্যন্তরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছেন। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি। ডাক্তাররা বার বার তাকে বিদেশ পাঠানোর চেষ্টা করেছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য কিন্তু দেশের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। কারাগারে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফুড পয়জনে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র কাজ হয়নি। মহান আল্লাহ তাআলা এখনো উনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।”
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, “আমাদের নেত্রীকে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিদেশ যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নেত্রী বলেছিলেন, এই দেশ ছাড়া অন্য কোন জায়গায় আমাদের ঠিকানা নেই। তিনি দেশেই ছিলেন। শেখ হাসিনা তখন বিদেশে গিয়ে ষড়যন্ত্রের পর ষড়যন্ত্র করেছেন। দেশে ফিরে সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করে ক্ষমতায় বসেছিলেন। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অন্যের কাছে তুলে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। কিন্তু আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও জনগণের ইজ্জত অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতা চাননি।”
তিনি আরও বলেন, “এই ১৭ বছর আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা ও দেশ নায়ক তারেক রহমান সংগ্রাম করেছেন এদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, বিদেশি আগ্রাসন থেকে রক্ষা করার জন্য, এই দেশের মুসলমানদের মান ইজ্জত সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আজ সেই কাজের ফসল হিসেবে আমরা মুক্তি লাভ করেছি।”
সমাবেশে ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান গিয়াসসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/কাওছার/এস