বেসরকারি মসজিদকে নীতিমালায় আনা হচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা
Published: 29th, June 2025 GMT
দেশের বেসরকারি মসজিদকে নীতিমালায় আনা হচ্ছে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী যাতে ইমাম ও খতিবদের বেতন ভাতা দেওয়া হয় তা ভেটিং করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। ভেটিং হয়ে আসলে এটা আমরা উপদেষ্টা পরিষদে পাস করব। আসলে আমরা সরকারি গেজেট করে দেব।
রবিবার (২৯ জুন) বিকেলে জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সিরাত প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমাদের যে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ মসজিদ আছে সেগুলোর অধিকাংশ মসজিদই বেসরকারি। এ ছাড়া করপোরেটসহ অন্য মসজিদে যাতে ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা দেওয়া হয় সেজন্য আমরা চেষ্টা করবো। বেসরকারি মসজিদকে আমরা নীতিমালার আওতায় আনছি, জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর তদারকির মাধ্যমে মসজিদের আর্থিক অবস্থা যদি ভালো হয় তাহলে পে স্কেল অনুযায়ী বেতন দিতে বাধ্য থাকবে।’’
সরকারে আসার আগে ১৬ বছর মসজিদে খুতবা দিয়েছেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সেজন্য ইমাম ও খতিবদের ব্যথা-বেদনা বলতে হবে না। আমি নিজেই এটার সাক্ষী। আমরা দায়িত্বে থাকাকালীন ইমাম-খতিবদের জন্য যতটুকু করা প্রয়োজন করব।’’
তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘‘আমরা চাকরি করতে চাই কিন্তু উদ্যোক্তা হতে চাই না। এটা আমাদের মানসিকতা। আমরা ইনভেস্টর হই না কেন? ছোট দোকান দিয়ে আমরা তো ইনভেস্টর হতে পারি। চাকরি করলে তো চাকর। যে পর্যায়ে হোক আলেমরা এগিয়ে আসছেন এটা আমাদের দেশে আশার সঞ্চার করেছে।’’
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ব সরক সরক র মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
যেদিন সৃষ্টিকর্তার খুব কাছাকাছি ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স
আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স। ক্রিকেট বিশ্ব তাঁকে চেনে এবি ডি ভিলিয়ার্স নামে। নিজের প্রজন্মের তো বটেই, সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। আধুনিক ক্রিকেটে সময় উদ্ভাবনী শট খেলায় এগিয়ে ছিলেন অনেকের চেয়ে। অপ্রথাগত সব শট খেলার রেঞ্জ এত বেশি যে তাঁকে ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’ নামেও ডাকা হয়। ওয়ানডেতে দ্রুততম ফিফটি, দ্রুততম সেঞ্চুরি ও দ্রুততম ১৫০ রানের রেকর্ড তাঁর দখলে। ২০১৫ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর সেই ৪৪ বলে ১৪৯ রানের ইনিংসটি এখন ক্রিকেট–রূপকথার অংশ। আত্মজীবনী ‘এবি—দ্য অটোবায়োগ্রাফি’তে সেই ইনিংসটি নিয়ে একটি অধ্যায় লিখেছেন ডি ভিলিয়ার্স।কী লিখেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স
অন্য কারও ব্যাটিংয়ে নামা উচিত।
রোববার। ১৮ জানুয়ারি, ২০১৫। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে ওয়ানডে খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিল ধারণের ঠাঁই নেই গ্যালারিতে উষ্ণ রোদের সরব দর্শক। কারণ, মাঠে ব্যাটিংয়ে রাইলি রুশো ও হাশিম আমলা, অসাধারণ খেলছে। ভিত গড়ছে জয়ের।
স্কোর দুই শ পেরিয়ে গেল। ওরা ফেরেনি। ড্রেসিংরুমে রাসেল ডমিঙ্গোকে গিয়ে ধরলাম, উনি আমাদের কোচ, ‘মিলার এরপর যাক, কোচ। ওর জন্য একদম আদর্শ (ম্যাচের পরিস্থিতি)।’
‘না, এরপর তুমি’—ডমিঙ্গোর শক্ত কণ্ঠ।
কিন্তু আমার মাথায় ঢুকল না। সুলেমান বেনের এখনো দুই ওভার বাকি। কেউ আউট হলে মিলার নেমে এই বাঁহাতি স্পিনারকে একদম চালিয়ে খেলবে। কারণ, তার বল বাঁহাতির ভেতরে আসবে। পরিস্থিতিটা মিলারের জন্য একদম আদর্শ।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে আমরা ১-০ তে এগিয়ে। আমরাই সিরিজ জিতব, সবার ধারণা। কিন্তু সে জন্য কোনো সুযোগই হাতছাড়া করা যাবে না।
আমলা ও রুশো দাপটের সঙ্গে খেলছে। স্কোর ২২০ পেরিয়ে গেল।
এখন একটু অন্য রকম ভাবাই যায়।
‘কোচ, সিরিয়াসলি বলছি এরপর ডেভের যাওয়া উচিত।’
‘না, এই পরিস্থিতিতে তুমিই সেরা।’
এক্সট্রা কাভার দিয়ে হাশিম আমলার আরেকটি চার। স্কোর এগোচ্ছে ভালোই।
ড্রেসিংরুমে ফিজিওথেরাপি দেওয়ার বিছানায় গা-টা এলিয়ে দিই। ডেল স্টেইন, ফাফ ডু প্লেসিরা আশপাশেই। ওয়ান্ডারার্সে আরেকটি ‘গোলাপি’ রোববারে কোলাহল ভালোই লাগছিল সবার। বার্ষিক এ ম্যাচে গোলাপি জার্সি পরে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা, বেশির ভাগ দর্শকের গায়েও তাই; স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতন করতে তহবিল সংগ্রহ করা হয়।
এটা আমার ১৭৭তম ওয়ানডে। কিন্তু নার্ভাস লাগছিল। প্রথম ম্যাচে যেমন লেগেছিল।
‘আর ঠিক হলো না’, অস্ফুটে একটু জোরেই মুখ ফুটে বেরিয়ে গেল কথাটা। অন্য কাউকে উদ্দেশ করে বলিনি, কিন্তু ফাফ শুনল, ‘কী?’
‘স্নায়ুচাপ। ব্যাটিংয়ে নামার আগে খুব বাড়ে।’
কথা বলার ফাঁকেই ১২৮ করে রাইলি ডিপে ধরা পড়ল। আমাদের স্কোর ১ উইকেটে ২৪৭। নামতে হবে। ব্যাটটা নিয়ে সিঁড়ি ভাঙতে গিয়েই হোঁচট খেলাম। ডেল আর ফাফের সে কী হাসি।
আরও পড়ুন২৮০০ কোটি টাকাও কম! আইসিসির কাছ থেকে ভারতের জন্য আরও বেশি দাবি শাস্ত্রীর১২ ঘণ্টা আগেঅনন্তকালের পথ পেরিয়ে অবশেষে মাঠে। শরীরটা একটু আলগা করে নিলাম। হাত দুটোও। হঠাৎ করেই চারপাশটা খেয়াল হলো। হাইভেল্ডে সুন্দর রৌদ্রোজ্জ্বল একটা দিন। চারপাশে গোলাপির জয়জয়কার। প্রোটিয়ারা ভালো করছে। লোকে খুশি। উত্তেজিত। আবারও জীবিকার জন্য এই খেলাটি খেলতে পারায় নিজেকে ভাগ্যবান মনে হলো। দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, এখন ওয়ানডে দলের অধিনায়কও, এসব ভাবতে ভাবতে খেয়াল হলো, আবেগ নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। এখন কাজের সময়। একটা ছন্দ মেনে জোনে ফিরতে হবে। নিজের খেলাটা খেলতে হবে।
হ্যাশ (হাশিম আমলা) ১১৬ বলে ১১৪ করে আমার অপেক্ষায়। খুবই শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত। আমরা সেই কিশোরকাল থেকে একসঙ্গে কিংবা বিপক্ষে ক্রিকেট খেলছি। স্কুল, প্রদেশ হয়ে এখন দেশের জার্সিতে। সে খুবই উঁচুমানের মানুষ, উঁচুমানের খেলোয়াড়।
‘আমি এক বা দুই ওভার একটু দেখব। তারপর একসঙ্গে চালাব’ বললাম হাশিমকে। খুবই সরল পরিকল্পনা। হাশিম শেষ পর্যন্ত খেলবে। আমি যত দ্রুত সম্ভব সেট হয়ে মোমেন্টাম এনে দেওয়ার চেষ্টা করব। সব চালাব। ৩৫০ পেরিয়ে যেতে পারলে ম্যাচটা ওদের থেকে বের করে নেওয়া যাবে।
আর ৬৯ বল বাকি।
সেদিন অন্য মাত্রার ব্যাটিং করেছিলেন ডি ভিলিয়ার্স