সব ভালো কিছুই নাকি কখনো না কখনো শেষ হতে হয়। কথাটা অমোঘ হলেও এমন অনেক কিছুই আছে, যার শেষ মেনে নিতে কষ্ট হয়। শেষের পর তৈরি হওয়া শূন্যতা তাড়া করে বেড়ায় অনেক দিন। আনহেল দি মারিয়ার ইউরোপীয় অধ্যায় শেষ হওয়ার গল্পটাও তেমনই।

এই শেষ ফ্ল্যাশব্যাক মনে করিয়ে দিচ্ছে আনন্দ-বেদনার অনেক মুহূর্তকে। যে মুহূর্তগুলোর যোগফলেই রোজারিওর সাদামাটা দি মারিয়া রূপান্তরিত হন একজন কিংবদন্তিতে। যিনি ইউরোপে পরশু রাতে নিজের শেষটাও করেছেন কিংবদন্তির মতো মাথা উঁচু করে।

ক্লাব বিশ্বকাপ দিয়ে বেনফিকাকে বিদায় জানানোর কথাটা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন দি মারিয়া। পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে শৈশবের ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রালের সঙ্গে চুক্তিও সেরে রেখেছিলেন তিনি। যে কারণে ক্লাব বিশ্বকাপে বেনফিকার ম্যাচগুলোর দিকে আলাদাভাবে চোখ ছিল দি মারিয়ার ভক্তদের। গ্রুপ পর্বে তিন গোল করে শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় যৌথভাবে সবার ওপরেও ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন।

আরও পড়ুনদুর্বৃত্তদের হুমকির এক বছর পর শৈশবের ক্লাবে ফিরলেন দি মারিয়া৩০ মে ২০২৫

পাশাপাশি দি মারিয়ার নৈপুণ্যে বায়ার্ন মিউনিখকে টপকে নিজেদের গ্রুপে সবার ওপরেও ছিল বেনফিকা। আশা করা হচ্ছিল, বেনফিকার সঙ্গে দি মারিয়ার এ যাত্রাটা হয়তো আরেকটু দীর্ঘ হবে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। চেলসির কাছে ৪-১ গোলে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিয়েছে বেনফিকা। কিন্তু হারের আগে দলকে শেষ সুযোগটা এনে দিয়েছিলেন দি মারিয়াই।

চেলসির বিপক্ষে ৬৪ মিনিটে পিছিয়ে পড়া বেনফিকাকে যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে সমতায় ফেরান দি মারিয়া। পেনাল্টি থেকে করা তাঁর গোলেই ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যদিও অতিরিক্ত সময়ে আর পেরে ওঠেনি বেনফিকা। ক্লান্ত দি মারিয়াও শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে বদলাতে পারেননি দলের ভাগ্য। ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বেনফিকার বিদায় একই সঙ্গে ক্লাবটি থেকে দি মারিয়ার বিদায়ও নিশ্চিত করেছে। কান্নায় বিদায় নিলেও ইউরোপকে ১৮ বছরের স্বর্ণালি সব মুহূর্ত উপহার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আর নিজে নিয়ে যাচ্ছেন গর্ব করার মতো উজ্জ্বল সব স্মৃতি।

ইউরোপে শেষটা রাঙানো হলো না দি মারিয়ার.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বক প ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের ইন্টার্ন থেকে টিকটকের সিইও—যেভাবে শো জি চিউয়ের পথচলা

সারা বিশ্বের টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০ কোটিরও বেশি। এই প্ল্যাটফর্ম শুধু বিনোদন নয়, কোটি কোটি ছোট ব্যবসা, সৃষ্টিশীল তরুণ-তরুণীর জীবিকার উৎস। আর এই প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ আজ নির্ভর করছে একজন মানুষের কাঁধে—শো জি চিউ। তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি ফেসবুকে ইন্টার্নশিপ দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন এবং আজ টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে বিশ্বের অন্যতম বড় প্রযুক্তি যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সাদামাটা শুরু: ইন্টার্ন থেকে ব্যাংকার

সিঙ্গাপুরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শো জি চিউ প্রথমে দেশটির নিয়মানুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। এরপর লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো অধ্যায় শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে এমবিএ করার সময়।

হার্ভার্ডে পড়ার সময়, যখন ফেসবুক ছিল একেবারে নতুন একটি স্টার্টআপ, চিউ সেখানে ইন্টার্নশিপ করেন। তখন হয়তো তিনি কল্পনাও করতে পারেননি যে একদিন ফেসবুকের প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতৃত্ব দেবেন। ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা তাঁকে প্রযুক্তি খাতের প্রথম বাস্তব ধারণা দেয়।

হার্ভার্ডের পর তিনি দুই বছর গোল্ডম্যান স্যাকসে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে কাজ করেন। এ সময় তিনি প্রযুক্তি খাতে বড় বিনিয়োগের কাজের সঙ্গে জড়িত হন, যা তাঁর ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিনিয়োগ জগতে উত্থান এবং বাইটড্যান্সের সঙ্গে প্রথম সংযোগ

২০০৮ সালে চিউ যোগ দেন ডিএসটি গ্লোবাল নামের এক শীর্ষ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানে। সেখানে পাঁচ বছর কাজ করার সময় তিনি আলিবাবা, জেডি ডটকমসহ একাধিক প্রযুক্তি জায়ান্টে বিনিয়োগের সুযোগ পান।

২০১৩ সালে তিনি একটি দলকে নেতৃত্ব দেন, যারা প্রথম দিকে বাইটড্যান্সে বিনিয়োগ করেছিল। সেই সময় হয়তো চিউ ভাবতেও পারেননি, একদিন তিনিই সেই কোম্পানির প্রধান পণ্য টিকটকের সিইও হবেন।

আরও পড়ুনগণপূর্ত অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬৬৯২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫শাওমিতে বড় অর্জন

২০১৫ সালে চিউ চীনের স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) হিসেবে যোগ দেন। তাঁর আর্থিক কৌশলের দক্ষতায় শাওমি দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে।

২০১৮ সালে শাওমির আইপিও ইতিহাস সৃষ্টি করে, যা চীনের অন্যতম বড় প্রযুক্তি আইপিও ছিল। ২০১৯ সালে চিউ শাওমির আন্তর্জাতিক মার্কেটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং কোম্পানির বৈশ্বিক সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই সাফল্য তাঁকে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি জগতে পরিচিত করে তোলে এবং টিকটকের দরজায় নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনজাহাঙ্গীরনগরের সামিয়া ইসলাম চার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কেন অক্সফোর্ডকেই বেছে নিলেন০১ অক্টোবর ২০২৫টিকটকের নেতৃত্বে যেভাবে 

মার্চ ২০২১ সালে চিউ বাইটড্যান্সে প্রথম সিএফও হিসেবে যোগ দেন। মাত্র দুই মাস পর, মে ২০২১-এ তাঁকে টিকটকের সিইও করা হয়। তখন টিকটক রাজনৈতিক চাপে ছিল। তাঁর পূর্বসূরি কেভিন মেয়ার মাত্র তিন মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে চিউকে শুধু একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনা নয় বরং প্রযুক্তি ও রাজনীতির এক জটিল যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে হয়।

হার্ভার্ডে পড়াশোনার সময় ই-মেইল চালাচালির সময়ে পরিচিত হন স্ত্রী ভিভিয়ান কাওয়ের সঙ্গে পরিচয় শো জি চিউর

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেসবুকের ইন্টার্ন থেকে টিকটকের সিইও—যেভাবে শো জি চিউয়ের পথচলা