রাজশাহীতে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। আজ সোমবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত সাতজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এর মধ্যে রাজশাহীরই পাঁচজন। রোগীদের ভাষ্য, স্থানীয়ভাবে তাঁরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রাজশাহীর নতুন পাঁচ ডেঙ্গু রোগীর চারঘাট উপজেলার দুজন, বাঘার একজন এবং রাজশাহী নগরের দুজন রয়েছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বিগত বছর বিপুল পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে এ বছর এখন থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ব্যক্তিগতভাবেও সচেতনতা বাড়ানো দরকার। নয়তো পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে.

তাঁদের বেশির ভাগই রাজশাহীতে থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল রাজশাহীর চারঘাট থেকে ভর্তি হয়েছেন ৬০ বছর বয়সী নুরুন্নাহার। তাঁর এক স্বজন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বাড়িতে থেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। বয়স বেশি হওয়ায় তাঁর অবস্থা একটু নাজুক।

রাজশাহী নগর থেকে আক্রান্ত হওয়া এক রোগীর বাবা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে শহরের মধ্যেই ছিলেন। কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, জানেন না। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরা আরেকজন বলেন, রাজশাহী শহরে থেকেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেলে এ বছর এখন পর্যন্ত ৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন সাতজন। এ বছর চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছেন ৭৮ জন। মারা গেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা দুই রোগী। বর্তমানে ভর্তি আছেন ১৩ জন। এই ১৩ জনই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহীর রয়েছেন ৫ জন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ভালো থাকায় এখন পর্যন্ত সেভাবে ডেঙ্গু ছড়ায়নি। এটি যাতে না ছড়ায়, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। ইতিমধ্যে ১২টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। গতকাল রোববার ১৮ জনের পরীক্ষায় কারও ডেঙ্গু শনাক্ত হয়নি। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার তাঁরা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন। তাঁরা কয়েক দিনের মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচার চালাবেন।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, রাজশাহীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো রোগী ভর্তি হননি। উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া আছে। ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকলে যেন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁদের স্বাস্থ্যকর্মীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো আছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা

দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির তৃতীয় দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পর্যটকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি, চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চড়ে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। তাদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তাদের অনেকে সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভিজিয়ে এবং ওয়াটর বাইকে চড়ে আনন্দ করছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের কেউ কেউ মোটরসাইকেল কিংবা ঘোড়ায় চরে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছিলেন। সব মিলিয়ে সৈকতের উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। 

আরো পড়ুন:

চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন

১ অক্টোবর থেকেই কেওক্রাডং যেতে পারবেন পর্যটকরা, মানতে হবে ৬ নির্দেশনা

পাবনা থেকে আসা হোসেন শহীদ ও সোনিয়া দম্পতি জানান, পূজা ও সরকারি ছুটি থাকায় তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছেন তারা। এই দম্পতির অভিযোগ, হোটেল ভাড়া কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে।  

বরিশালের কাউনিয়া থেকে আসা সম্রাট বলেন, “কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি। বৃহস্পিতবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে লাল কাকড়ার চড়, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বন ঘুরেছি। দারুন এক অনুভূতি হয়েছে।”

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরপত্তা নিশ্চিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ