হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার খাগাউড়া গ্রামে খাগাউড়া ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবনটিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও নকশাবহির্ভূত কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি ধসের পর এর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি-৪) আওতায় খাগাউড়া ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ করছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
ভবনটি নির্মাণের শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে আসছিলেন ঠিকাদার। এমন অভিযোগ একাধিকবার দিয়েছেন স্থানীয়রা। এরই মধ্যে ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই শেষে দ্বিতীয় তলার ছাদের প্রস্তুতি চলছিল। ১৯ জুন দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ঢালাই করা হয়। মাত্র ছয় দিনের মাথায় ২৫ জুন রাতে পুরো সিঁড়ি ধসে পড়ে। এ ছাড়া সিঁড়ির ওপরের অ্যাপ্রোচ ও পিলারের ঢালাইও খসে পড়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়। তাদের অভিযোগ, পুরো ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নির্মাণশ্রমিকদের কাজে বাধা দেন গ্রামবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা শুভ মিয়া বলেন, একটি স্কুল ভবন নির্মাণেও নয়ছয় করছেন ঠিকাদার। এই স্কুলে খুদে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করবে। এই রকম নিম্নমানের সামগ্রী ও নকশাবহির্ভূত কাজ করা হলে এই শিক্ষার্থীদের জীবন থাকবে হুমকির মুখে।
স্থানীয় বিপুল সূত্রধর বলেন, এই বিদ্যালয়ে শিশুরা লেখাপড়া করে। ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তা হলে কীভাবে তাদের পাঠাবে এলাকার মানুষ?
অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ সেলিমের মালিক তুষার চৌধুরী বলেন, সিঁড়িতে যতগুলো ধাপ থাকার কথা, তার একটি কম রয়েছে। এতে ডিজাইনবহির্ভূত হয়েছে। ভুল মানুষেরই হয়। এলজিইডি এই সিঁড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিযুক্ত সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ডিজাইনবহির্ভূত হওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে। গত ২২ জুন ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। এর পরই শুনলাম সিঁড়ি ধসে পড়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।