বগুড়ার নন্দীগ্রামে যৌতুকের দাবিতে রুমকি বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মেরে গর্ভের সন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রুমকি বেগম রোববার নন্দীগ্রাম থানায় স্বামী আমিনুল ইসলামসহ শ্বশুরবাড়ির সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আমিনুল ইসলাম থালতা মাঝগ্রাম গ্রামের একরাম হোসেনের ছেলে।

রুমকি বেগম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও জাদুঘর গেটের নীহার পালের মেয়ে। মোবাইল ফোনে আমিনুলের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি আমিনুল ইসলামকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য রুমকিকে নির্যাতন করে আসছিল। নির্যাতন থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির লোকদের ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। তাতেও নির্যাতন থামেনি। গত ২৭ জুন স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে চুলের মুঠি ধরে পেটে লাথি মারে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমকি জানতে পারেন নির্যাতনে তাঁর গর্ভের সাড়ে তিন মাসের সন্তান মারা গেছে। 

রুমকি বেগম বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা জানা সত্ত্বেও স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে অমানবিক নির্যাতন করেছে। আগেও তারা মারধর করে। থানায় চারটি অভিযোগ করেছি। এবার গর্ভের সন্তানকে মেরে ফেলল। আমি কী অন্যায় করেছি? মা হিসেবে অবশ্যই সন্তানের অপমৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চাই।’ 

রুমকি বেগমের স্বামী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। বাদীর সঙ্গে মীমাংসার চেষ্টা চলছে।’ 

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। নির্যাতনের শিকার নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। মামলা রেকর্ড করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম ন ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ