নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: মির্জা ফখরুল
Published: 7th, July 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘‘নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে। বিনিয়োগ আসবে না, উন্নয়ন থমকে যাবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, এমন অবস্থা চলতে থাকলে মবোক্রেসি আরো বাড়বে। বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। নারীরা নিরাপত্তা হারাবে। এই অবস্থার উন্নতির জন্য প্রয়োজন নির্বাচিত সরকার। যাদের পেছনে জনসমর্থন আছে।’’
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় দোয় মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
সময় এসেছে ধ্বংস হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে গড়ে তোলার: ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘‘হাসিনা এমনি এমনি হঠাৎ করে পালায়নি। বহুদিনের সংগ্রাম, বহু মানুষের ত্যাগ; বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত হলাম ঠিক আছে। কিন্তু আমরা বলছি লড়াই তো গণতন্ত্রের লড়াই, আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে মানুষ ভোট দেবে, কথা বলার সুযোগ পাবে, তরুণরা কাজের ও লেখাপড়ার সুযোগ পাবে, নারীরা নিরাপত্তা পাবে, চিকিৎসার সুযোগ পাবে, এরকম একটি রাষ্ট্র। এজন্য আমরা নতুন করে সংগ্রাম শুরু করেছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘শেখ মুজিব বাকশাল করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। সেই অবস্থা থেকে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।’’
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডা.
ঢাকা/নূর/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ব এনপ ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
মত ও পথের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: আলী রীয়াজ
একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘আমাদের মতের পার্থক্য থাকবে। রাজনীতিতে মতপার্থক্য না থাকলে তা গণতান্ত্রিক হয় না। মতের পার্থক্য থাকবে, পথের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সেই অভীষ্ট জায়গা গণতন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। প্রত্যাশা জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘বহু স্রোত যেন মোহনায় এসে মেলে, যেন আমরা বলতে পারি যে আমাদের অনেক স্রোত, কিন্তু মোহনা একটি। সেটি হচ্ছে, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তৈরি করা। আমাদের বহু স্রোত, আমরা সকলে এক জায়গায় যে আমরা যেকোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই দাঁড়িয়ে থাকব।’
আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী-রীয়াজ। যিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি হিসেবে আট মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশের নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই দিন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অভূতপূর্ব এবং অনন্য সময়। একটি ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের জন্য এটি হচ্ছে আমাদের দীর্ঘ পথের যাত্রার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শের যে রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা তা, ৫৩ বছর ধরে বারবার হোঁচট খেয়েছে। এরপরও দেশের নাগরিকেরা গণতন্ত্র এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান, ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা স্মরণ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় আজকে এই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় এক বছর ধরে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এই জাতীয় সনদে উপনীত হয়েছে।
এই জুলাই জাতীয় সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি নয়, এটা নাগরিকের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ও রাষ্ট্রের একটি সামাজিক চুক্তি বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের অবদানের মধ্য দিয়ে এই সনদ তৈরি হয়েছে।
রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সবার যে চেষ্টা, তা এক দিনে সাফল্য অর্জন করবে না এবং একটি দলিল কেবল সেই নিশ্চয়তা দেবে না বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে জাতীয় দলিল তৈরি হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ঘটবে। দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিক দিশা নির্দেশক বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে।’