ঝালকাঠির নলছিটিতে ‎‎অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন এক মা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার তালতলা বাজার এলাকা থেকে ফরিদা বেগম (৫২) নামের ওই নারী নিজের ছেলে সোহাগ জোমাদ্দারকে (৩২) পুলিশের হাতে তুলে দেন।

নলছিটি থানায় ৪ আগস্ট একটি লিখিত অভিযোগ করেন ফরিদা বেগম। অভিযোগে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। কাজকর্ম না করে প্রায়ই টাকার জন্য তাঁকে চাপ দেন। টাকা না পেলে গালাগাল করেন, ঘরে অশান্তি সৃষ্টি করেন এবং হুমকি দেন। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় এক লাখ টাকা দাবি করে তাঁর বসতঘরের আসবাব ভাঙচুর করেন ও কাপড়চোপড় পুড়িয়ে দেন। এতে তাঁর প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

জানতে চাইলে ‎ফরিদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘‎আমি বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়ে নিজেই পুলিশকে দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছি। আমার সন্তানের বিরুদ্ধে পুলিশ যেন আইনগত ব্যবস্থা নেয় আর সে যেন ভালো হয়ে যায়, সে আশা রাখি।’

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, ‎‘অভিযুক্ত সোহাগকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকসেবন, হুমকি, ভাঙচুরসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মা নিজেই উপস্থিত থেকে ছেলেকে ধরিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ