বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, “শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ কৃষিবিদ হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের প্রত্যাশা ও লক্ষ্য। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর ১৫০ থেকে ২০০ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখতে বাকৃবির গবেষক ও শিক্ষার্থীদের অবদান অপরিসীম।”

শনিবার (৯ আগস্ট) বাকৃবির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে দুপুর ১২টায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তিনি বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো মানুষের সংস্পর্শে ভালো হতে পারো, আবার খারাপও হতে পারো। জুলাই-পূর্ববর্তী পরিস্থিতি যেন বাকৃবিতে আর ফিরে না আসে, সেজন্য শিক্ষার্থীদের সজাগ ও দেশপ্রেমিক হতে হবে। এখন থেকে প্রতি সেমিস্টারে তোমাদের ফলাফল ও উপস্থিতি অভিভাবকের কাছে পৌঁছে যাবে, যাতে তারা জানতে পারেন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কী করছে। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এলেও তা অভিভাবকের কাছে পাঠানো হবে।”

আরো পড়ুন:

খুবির আবাসন সংকট নিরসনে বাধা গল্লামারী মৎস্য খামার

না চেয়েও ঢাবি ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পাওয়ার দাবি শিক্ষার্থীর

নবীনবরণ অনুষ্ঠানে নবাগত ১ হাজার ১১৬ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত একটি বই এবং রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। সোমবার (১১ আগস্ট) থেকে তাদের ক্লাস শুরু হবে। এছাড়া রবিবার (১০ আগস্ট) বিভিন্ন অনুষদের উদ্যোগে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও নবীনবরণ কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড.

মো. শহীদুল হকের সভাপতিত্বে এবং সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস. এম. এ. ফায়েজ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীন, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন। এছাড়াও বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও শাখার পরিচালক, অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ, নবীন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক এ সময় উপস্থিত ছিলেন ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এস. এম. এ. ফায়েজ বলেন, “এক বিশাল দায়িত্ব নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ইতিহাস হয়ে থাকবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে মিলে-মিশে কাজ করতে হবে।”

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শিক্ষকদের দায়িত্ব হলো ছাত্রদের চিন্তাভাবনাকে সম্মানের সঙ্গে দেখা এবং ছাত্রদের দায়িত্ব শিক্ষকদের মর্যাদার জায়গাকে সচেষ্ট রাখা। তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে দেশ ও জাতি, তাদের প্রত্যাশা পূরণ করাই এখন তোমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মনে রাখবে, এ বিশ্ববিদ্যালয় তোমাদের দ্বিতীয় পরিবার, আর এখানকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা তোমাদের পরিবারের সদস্য।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিন ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত

বর্ণাঢ্য আয়োজনে গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন (জেএমসি) বিভাগের ফল ব্যাচের (২৫২) নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নিজস্ব ক্যাম্পাসের জেএমসি বিভাগে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নবনিযুক্ত দুই জন শিক্ষককেও বিভাগে বরণ করে নেওয়া হয়। 

বিভাগীয় চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. হাবীব মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ। 

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের  সহযোগী অধ্যাপক ড.  মো. অলিউর রহমান। অনুষ্ঠানে’গেস্ট অব অনার’ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা পোস্ট এর সম্পাদক, জনসংযোগবিদ ও ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইনস এর জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সম্পাদক, একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার নাদিয়া শারমিন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেএমসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাবরিনা নওরিন লিমু। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ড. হাবীব মোহাম্মদ আলী।

বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও জেএমসি মিডিয়া ক্লাব মডারেটর প্রভাষক মঞ্জুর কিবরিয়া ভূঁইয়া, প্রভাষক মোহাম্মদ বায়েজীদ খান ও জান্নাতুল ফেরদৌস মীম। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভাগের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করেন জেএমসি ল্যাব কো-অর্ডিনেটর কাজী মাহাদী মুনতাসির।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‍সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সাংবাদিকতা কীভাবে আরো ফলপ্রসূ করা যায়- সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। শুধু পুঁথিগত পড়াশোনার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না। বর্তমান সময়ের জব মার্কেটের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাসমূহ ও ডিজিটাল টুলসগুলোর উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সময়ের সাথে সাথে নিজেকে আপডেট করতে হবে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য আরো বলেন, চার বছরে পড়াশোনা করে সাংবাদিক হিসেবে নিজের  স্বকীয়তা ধরে রাখতে হবে। নিজেকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেনাে সততা ও সত্য দিয়ে নিজের কাজের প্রতি পুরোপুরি মনোনিবেশ করা যায়। 

ঢাকা পোস্ট-এর সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, আপনি নিজের জ্ঞানকে অন্যের মাঝে বিলিয়ে দিন, অর্থাৎ আপনি যা জানেন, তা সবার সঙ্গে শেয়ার করুন। 

নবীন শিক্ষার্থীদের প্রতি কামরুল ইসলাম বলেন, পেশাগত জীবনে কখনো বাধা-বিপত্তি কিংবা বিব্রতকর পরিস্থিতি আসতে পারে। সেগুলো বুদ্ধিমত্তার সাথে অতিক্রম করেই সামনে আগাতে হবে। যত অস্থির সময়ই আসুক না কেন, সেগুলোকে ঠান্ডা মাথায় সামলে সামনে আগাতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, যেকোনো প্রতিষ্ঠানে এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন আপনি চলে যাবার পরে সে প্রতিষ্ঠান আপনার শূন্যতা অনুভব করে। জার্নালিজম পড়ে সাংবাদিকতার বাইরে জনসংযোগসহ আরো অনেকগুলো সেক্টর আপনাদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সম্পাদক, একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার নাদিয়া শারমিন বলেন, সাংবাদিকতার নেতিবাচক বিষয়গুলো পাল্টাতে হলে আপনাদের এই পেশায় আসতে হবে। আপনাদের মিডিয়া ল্যাবটি আমার কাছে খুবই সমৃদ্ধশালী মনে হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে দক্ষ হলে, আপনাদের সামনে কোনো কিছুকেই বাধা মনে হবে না। একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমাদের মধ্যে ইমোশনের জায়গাটা না থাকলে, দর্শক-পাঠকরা আগ্রহ হারাবে। দক্ষতার সাথে সৃজনশীলতার মিশ্রণ ঘটাতে পারলে তবেই আপনাদের প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির সমন্বয় ঘটবে। সাংবাদিকতায় যেতে না চাইলেও আপনাদের সামনে অনেক পথ খোলা আছে। সাংবাদিকতায় পড়াশোনা করে কেউ কর্মহীন থাকে না। 

এছাড়াও নবীনদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন জেএমসির স্টুডেন্ট-মেন্টর জুবায়ের আহমেদ, বর্তমান শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেন সাকিব আল হাসান এবং জেএমসি মিডিয়া ক্লাবের সামান্থা আলী। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন হাদিউজ্জামান ।

পরে গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

নবীনবরণ অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন শিক্ষার্থী মোমেনুল ইসলাম ও ইমু আক্তার মীম ।

পরে কেক কাটা ও গ্রুপ ফটোসেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

ঢাকা/মেহেদী/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্রিন ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত