ছাত্রসংগঠনগুলোর বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল
Published: 9th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি মনে করেন, ছাত্রসংগঠনগুলোর একটি রূপরেখা প্রণয়ন করে নিজেদের মধ্যে চুক্তি বা বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল।
আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহীর তেরখাদিয়া এলাকায় বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এ মন্তব্য করেন।
প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ-২০২৫–এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো.
সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভের পর প্রশাসন সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমার মনে হয় যে এটা এই পর্যায়ে আসত না, যদি ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেরা বসে একটা সোশ্যাল কন্ট্র্যাক্ট বা নিজেরা একটা বোঝাপড়ায় আসতে পারত। যেহেতু ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় সংস্কার হচ্ছে, ছাত্ররাজনীতির বিষয়েও ছাত্রসংগঠনগুলোর একটা নতুন রূপরেখায় একমত হওয়া উচিত ছিল।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হল ও একাডেমিক এরিয়াতে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি কীভাবে চলবে বা চলবে কি না, এটা যদি আগেই ছাত্রসংগঠনগুলো বসে একটা চুক্তিতে আসত, এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, ছাত্ররাজনীতির প্রতি যে বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা হতো না। আমাদের ছাত্রসংগঠনগুলোর এখানে আরেকটু ম্যাচিউর (পরিপক্ব) হওয়ার সুযোগ ছিল।’
বিশ্ববিদ্যালয় হলে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ব্যাপারে উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে উপদেষ্টা রাজি হননি।
রাজশাহীতে বিপিএল খেলার আয়োজনের ব্যাপারে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তিনটি স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও বিপিএলের ম্যাচগুলো হয়ে থাকে। আমরা একটু ডিসেন্ট্রালাইজ করার জন্য উত্তরবঙ্গের দিকে রাজশাহী স্টেডিয়াম, দক্ষিণবঙ্গের দিকে খুলনা কিংবা বরিশাল স্টেডিয়াম নিয়েছি। আর সামনের বছর থেকেই বিপিএল আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, সংস্কার শেষে রাজশাহী স্টেডিয়ামে বিপিএলের কিছু ম্যাচ আয়োজন করতে পারব।’
এর আগে সকালে উপদেষ্টা রাজশাহী সার্কিট হাউসে ভার্চ্যুয়ালি স্থানীয় সরকার বিভাগের ১২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। দিনব্যাপী সফরে তিনি নাটোরেও বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় সরক র উপদ ষ ট ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামানের হত্যাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি
গাজীপুরে সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজধানীতে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে সাংবাদিকেরা এ দাবি জানান। সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের পেশাগত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স ও বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ–এর ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে আসাদুজ্জামানকে হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে এই সাংবাদিকের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার দাবি জানান সাংবাদিকেরা। তাঁরা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার পাশাপাশি সাংবাদিক হত্যার ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। এই দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে। তাঁরা আসাদুজ্জামান হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান জনকণ্ঠ পত্রিকার এডিটরিয়াল বোর্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন (শিশির)। এর সঙ্গে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিহত ছয় সাংবাদিক হত্যার বিচার, সাংবাদিকদের জন্য একটি সুরক্ষা আইন এবং নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা দেশের জনগণের, সাংবাদিকের নিরাপত্তা না দিতে পারেন, সুরক্ষা না দিতে পারেন, তাহলে আপনাদের প্রয়োজন নেই।’
জনকণ্ঠের উপপ্রধান প্রতিবেদক ইসরাফিল ফরাজি বলেন, কিছু একটা ঘটলেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চিরুনি অভিযানের কথা বলেন। কিন্তু শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের খুঁজতে হবে। তিনি গাজীপুরে সাংবাদিক খুনের ঘটনায় আটক পাঁচজনের পরিচয় দ্রুত প্রকাশের দাবি জানান এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসাদুজ্জামান হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সেটি করতে না পারলে বাসন থানার ওসি, গাজীপুরের পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসককে বরখাস্ত করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকেও এ বিষয়ে আন্তরিকতা দেখাতে হবে।
নিউজ২৪–এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি যত বাড়ছে, রাষ্ট্রের দুর্বলতা যত বেশি প্রকাশ পাচ্ছে, রাষ্ট্রে তত বেশি বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এবং একের পর এক লাশ পড়ছে। সাধারণ জনগণের পাশাপাশি সাংবাদিকেরাও জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকিতে আছে। তিনি আসাদুজ্জামানসহ সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের অনেক সংগঠন থাকলেও তারা আসাদুজ্জামান হত্যার বিষয়ে কিছু বলছে না। অন্তর্বর্তী সরকার ও সাংবাদিক নেতাদের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান হত্যার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে এর সুরাহা করতে হবে। আসাদুজ্জামান তুহিনের পরিবারের দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আকতারুজ্জামানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা পোস্টের হেড অব মাল্টিমিডিয়া সাইফুল ইসলাম, কালবেলার সাংবাদিক অন্তু মোজাহিদ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের জাহিদুল ইসলাম, দেশ টিভির হাসান মাহমুদ, নিউজ টোয়েন্টিফোরের মাহমুদ হাসান, বাংলানিউজ২৪ ডটকমের সাইমুন মুবিন, বার্তা টোয়েন্টিফোরের রাজু আহমেদ, যায়যায়দিন পত্রিকার নাইম আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের আজহারুল ইসলাম, এনপিবির আকরাম হোসেন প্রমুখ।