দুই দেশের মধ্যে পাঁচ সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে
Published: 9th, August 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনের সফরে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে সোমবার (১১ আগস্ট) দ্বিপক্ষীয় সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। পরদিন মঙ্গলবার দুই দেশের সরকারপ্রধান পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই ও তিনটি নোট বিনিময় (এক্সচেঞ্জ নোট) হতে পারে।
মালয়েশিয়ার উদ্দেশে সোমবার দুপুরে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য যে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষাবিষয়ক সহযোগিতা; এলএনজি ও পেট্রোলিয়াম সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণসহ জ্বালানি সহযোগিতা; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ মালয়েশিয়ার (আইএসআইএস) মধ্যে সহযোগিতা; বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) ও চিপ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মিমোসের (এমআইএমওএস) মধ্যে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের সংগঠনের মধ্যে সহযোগিতা। সম্ভাব্য এক্সচেঞ্জ নোটগুলো হলো হালাল ইকোসিস্টেম, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি এবং উচ্চশিক্ষা খাতে সহযোগিতা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সমস্যাগুলো দূর করা এবং আরও শ্রমিক নেওয়ার মতো বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার চেষ্টা করছে। আর এ জোটের বর্তমান সভাপতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। ফলে এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল আশা করছে ঢাকা। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সম্পর্কের সার্বিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি নিয়েও আলোচনা হবে।
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রথম সরকারপ্রধান হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেন। গত অক্টোবরে প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান বাংলাদেশ সফর করেন।
সফরের মূল আনুষ্ঠানিকতা মঙ্গলবারপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে মঙ্গলবার। এদিন সকালে পুত্রজায়ায় আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন অধ্যাপক ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহিম। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারক ও এক্সচেঞ্জ নোটগুলো সই হওয়ার কথা। এদিন দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্যে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন মালেশিয়ার সরকারপ্রধান।
প্রধান উপদেষ্টা এরপর হোটেলে ফিরে একটি সেমিনারে অংশ নেবেন। এ সেমিনার শেষে হোটেলে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদা আলাদা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর বিকেলে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন অধ্যাপক ইউনূস। রাতে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী, নাগরিক সমাজ, শীর্ষ ব্যবসায়ী, আমলাদের সঙ্গে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন তিনি।
পরদিন বুধবার দেশটির ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেবে। এ জন্য আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তনে যোগ দেবেন তিনি। সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একটি বক্তৃতায় অংশ নেবেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন। দুপুরে হোটেলে ফিরে দেশটির কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাদা সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই সফরে যোগ দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সহয গ ত ব যবস য় স ম রক অন ষ ঠ সরক র সমঝ ত ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি–খুন, পুলিশ কী করছে
চট্টগ্রামে পরপর তিন দিন (গত বুধ থেকে শুক্রবার) প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি ও খুনের ঘটনার মূল আসামিদের কেউ এখনো ধরা পড়েননি। এ জন্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সন্ত্রাসীরা সক্রিয় থাকলেও পুলিশ ঘটনা রোধে আগাম কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কাজে আসছে না গোয়েন্দা নজরদারি। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের কিছু আসামিকে ধরেছে। বাকি ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, নগরের বায়োজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় জনসংযোগ চলছিল চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে মারা যান জনসংযোগের বহরে থাকা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন। বাকিরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
শুধু সরোয়ারের পরিবার নয়, এ ঘটনার পর চালিতাতলী এলাকায় সব বাসিন্দাই একরকম আতঙ্কে আছেন। গত বৃহস্পতিবার সেখানকার বাসিন্দারা প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতেও ভয় পাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে চাননি কেউ। এলাকার লোকজন বলছেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় সন্ত্রাসী দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ চলে আসছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, পুলিশেরও এটা জানার কথা। পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি কোথায় ছিল? থাকলেও তারা ঘটনার আগে ব্যবস্থা নিতে পারেনি কেন?এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বাবা আবদুল কাদের বাদী হয়ে বায়োজিদ বোস্তামী থানায় ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু মূল আসামি মোহাম্মদ রায়হান, মোবারক হোসেনসহ বাকি ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। এমনকি ভিডিওতে বাঁ হাত দিয়ে সরোয়ারের ঘাড়ে গুলি করা যুবককেও শনাক্ত করা যায়নি। কে বা কারা, কার নির্দেশে গুলি করেছে, তা জানতে পারেনি পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির বাবা আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত লোকের ভিড়ে আমার ছেলেকে একের পর এক সাতটি গুলি করে মেরেছে। তারা এত সাহস কীভাবে পায়। পুলিশ এখনো মূল আসামিদের কাউকে ধরতে পারেনি।’
শুধু সরোয়ারের পরিবার নয়, এ ঘটনার পর চালিতাতলী এলাকায় সব বাসিন্দাই একরকম আতঙ্কে আছেন। বৃহস্পতিবার সেখানকার বাসিন্দারা প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতেও ভয় পাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে চাননি কেউ। এলাকার লোকজন বলছেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় সন্ত্রাসী দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি, সংঘর্ষ চলে আসছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, পুলিশেরও এটা জানার কথা। পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি কোথায় ছিল? থাকলেও তারা ঘটনার আগে ব্যবস্থা নিতে পারেনি কেন?
সরোয়ারকে গুলি করে মারার পরদিন বৃহস্পতিবার একই এলাকায় ইদ্রিস আলী নামের একজনকে গুলি করা হয়। তিনি ‘সন্ত্রাসী’ ইসমাইল হোসেনের ভাই। তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। তাদের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যার অনুসারীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল হাফিজুর রহমান জানান। এই ঘটনায় র্যাব বুইস্যার দুই অনুসারীকেও গ্রেপ্তার করে।
ইদ্রিসকে দুপুরে যখন গুলি করা হয়, তখন ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যমকর্মীসহ লোকজনের আনাগোনা ছিল। তারপরও সন্ত্রাসীরা কীভাবে প্রকাশ্যে গুলি করার সাহস পায়, সেই প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। চালিতাতলী এলাকার বাসিন্দা আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে বাপ–দাদার ভিটে ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় চলে যেতে হবে। অস্ত্রের ঝনঝনানি চললেও পুলিশ কিছুই করতে পারছে না।
ওই দুই ঘটনা নিয়ে যখন নগরজুড়ে মাতামাতি, তখন শুক্রবার নগরের হালিশহর মাইজপাড়া এলাকায় মো. আকবর নামের এক ব্যক্তিকে রাস্তায় প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ মিনহাজুল ইসলামসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মীর কাসেমের ভাতিজা মিনহাজুল ইসলাম ওরফে সোহেলের সঙ্গে আকবরের দ্বন্দ্ব ছিল। মাদক বিক্রি ও আর্থিক লেনদেনের বিরোধ থেকে মিনহাজুলের হাতে খুন হন আকবর।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হালিশহর থানার এসআই মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত আকবরের ছোট ভাই মারুফের কাছ থেকে মিনহাজুল ইসলাম টাকা নিয়ে তা ফেরত দেননি। ঘটনার দিন মারুফ পাওনা টাকা না পেয়ে মিনহাজুলের মোটরসাইকেল আটকে রাখেন। এ খবর মিনহাজুলের চাচা মীর কাসেমকে জানানোর পর তিনটি মোটরসাইকেলে সাত থেকে আটজন ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় আকবরের পরিবারও লোকজন ডেকে আনে। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে মিনহাজুল আকবরের বুকের বাঁ পাশে ছুরি চালান। এক আঘাতেই ফুসফুস ছিদ্র হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, মিনহাজুলের বিরুদ্ধে অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। এলাকায় তিনি মার্ডার সোহেল নামে পরিচিত। মীর কাসেমের বিরুদ্ধে এর আগে আরও দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। ২০১৪ সালের মান্না হত্যা ও ২০১৬ সালের ফয়সাল ইসলাম বাঘা হত্যা মামলার আসামি তিনি। নিহত আকবরের স্ত্রী নাহিদা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার তিনটি সন্তান রয়েছে। স্বামী সুদের ব্যবসা করেন, তাই তাঁরা আমাদের কাছ থেকে চাঁদা চেয়েছেন। স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
ছাত্রদল কর্মীকে খুনের মামলার মূল আসামিরা অধরাব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে গত ২৭ অক্টোবর নগরের বাকলিয়া বগার বিলের মুখ এলাকায় ছাত্রদল কর্মী মো. সাজ্জাদকে (২২) গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১০ জন। দলীয় সূত্র বলছে, নগর যুবদলের সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহর অনুসারীদের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এমদাদুল ও সিরাজ দুজনেই সিটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। নিহত সাজ্জাদ এমদাদুলের অনুসারী ছিলেন বলে জানা গেছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় ছাত্রদল নেতা সিরাজ উল্লাহর অনুসারী বোরহানউদ্দিন ও তাঁতি লীগের নেতা নজরুল ইসলামকে আসামি করা হলেও পুলিশ তাদের এখনো ধরতে পারেনি।
তবে বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্রসহ পুলিশ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। জড়িত বাকি ব্যক্তিদের ধরার চেষ্টা রয়েছে। বর্তমানে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে রয়েছে। পুলিশ ১১ জনকে ধরলেও মূল আসামি ধরা না পড়ায় আতঙ্কে রয়েছেন বাকলিয়া এক্সেস রোডের বাসিন্দারা। মো. রাকিব নামের এক চাকরিজীবী প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় প্রায়ই গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। এর আগেও জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছিল। সিনেমার দৃশ্যের মতো সন্ত্রাসীরা প্রাইভেট কারকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিল। কিন্তু আশপাশে কোনো পুলিশ ছিল না। যার কারণে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয়।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সব কটি ঘটনায় পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করেছে। অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। জড়িত বাকি ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সম্প্রতি অস্ত্রবাজির ঘটনায় জামিনে বেরিয়ে আসা সন্ত্রাসীদের ওপর পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ রাখতে থানা-পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের বিশেষ শাখা সন্ত্রাসীসহ অপরাধীদের নজরদারিতে রাখে। এ জন্য পুলিশের সোর্সকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের সোর্স মানি যথাসময়ে দিতে হবে। পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনা ও তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সন্ত্রাসীদের পেছনে কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়–প্রশ্রয় থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।