বগুড়ার শিবগঞ্জে পাট‌খেত থে‌কে এক নারীর কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের পাকুরতলা এলাকা‌ থে‌কে কঙ্কাল‌টি উদ্ধার করা হয়।

শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খেতের মা‌লি‌ক মাঠে পাট কাট‌তে গি‌য়ে পচা গন্ধ পান। দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তিনি একটি কঙ্কাল‌টি দেখ‌তে পান। থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কঙ্কালটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।’’

আরো পড়ুন:

পিয়াইন নদীতে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

রাজশাহীতে হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

কঙ্কালটি একজন নারীর। ধারণা করা হচ্ছে, দুই-তিন মাসে আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি।

ঢাকা/এনাম/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

যে জমিতে ঘাস জন্মায় না, সেখানে আমি সোনা ফলাই

দৃঢ় মনোবল আর প্রচেষ্টা থাকলে কোনো বাধা পেরোনোই কঠিন নয়। দরকার ইচ্ছাশক্তি, আত্মবিশ্বাস আর কঠোর পরিশ্রম। আমাদের আশপাশে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিজেদের জীবনগাথায় লিখে চলেছেন অদম্য জয়ের গল্প। তাঁদের সেই সাফল্য ব্যক্তিগত অর্জনের সীমানা পেরিয়ে সমাজের নানাবিধ প্রতিবন্ধকতাকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। তেমনই কয়েকজনের গল্প নিয়ে ধারাবাহিক এ আয়োজন। আজ জানব পটুয়াখালীর কুয়াকাটার বাসিন্দা মো. আল আমিন শিকদারের জীবন-গল্প।

সাগরপাড়ের মানুষ আমি মো. আল আমিন শিকদার। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সাগরতীরে বাড়ি আমার। ছোটবেলা থেকেই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। তবে সাগরের কাছে জমিতে নোনা পানির প্রভাব এতটাই বেশি যে, কৃষিকাজে কখনো লাভের মুখ দেখা যেত না। শুধু বর্ষা মৌসুমে ধান চাষের সুযোগ পেতাম। বছর শেষে যে ফসল পেতাম তাতে খরচ উঠত না। অন্যান্য মৌসুমি ফসল যে চাষ করব, সেটিও সাহসে কুলাতো না। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অন্যান্য ফসলও এখানে ঠিকমতো জন্মায় না।  

বছরের পর বছর এ রকমই চলছে—এই দুরবস্থা শুধু আমার একার না। সাগরপাড়ের সব কৃষকই কমবেশি এ সমস্যা মোকাবিলা করছে। ফলে আমার উপার্জন দিন দিন কমে যাওয়ায় হতাশায় ডুবে যাচ্ছিলাম। একদিন গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে জানতে পারলাম, আলীপুরে ব্র্যাকের একটা অফিস আছে। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সময়োপযোগী ফসলের চাষাবাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটা শোনার পর আমার মনে আশার সঞ্চার হলো। আমরা কয়েকজন মিলে যোগাযোগ করলাম।

তারপর একদিন ব্র্যাকের কয়েকজন ভাই আমাদের গ্রামে আসলেন। সব সমস্যা শুনে আমাদের অভয় দিলেন। বললেন, লবণাক্ত জমির কারণে এই এলাকায় চাষাবাদের পদ্ধতি বদলাতে হবে। নতুন ফসল চাষ করলে লাভবান হওয়া যাবে। তারা পরামর্শ দিলেন জমিতে সূর্যমুখী ফুল আর ভুট্টা চাষের, পাশাপাশি চাষের নিয়মও দেখালেন। তাদের থেকেই জানলাম—সূর্যমুখী ফুল থেকে বীজ হয়, সেটি মণ হিসাবে বিক্রি হয়। আর বীজ থেকে তেল হয়। ভুট্টা থেকে হাঁস-মুরগি আর গরুর খাবার হয়। এগুলোর চাহিদা সারা বছরই থাকে। তাদের এসব কথায় সাহস পেলাম।

ব্র্যাক থেকে আমাদের চাষপদ্ধতি শেখানোর পাশাপাশি সারও দেওয়া হয়, এমনকি জমিতে পানি দেওয়ার জন্য সেচযন্ত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু আমার মনের মধ্যে একটু দ্বিধা কাজ করল, আসলেই কি এই চাষপদ্ধতি কাজে লাগবে? পরিশ্রম কি বৃথা যাবে? কিন্তু চেষ্টা না করলে তো ফলাফল জানা যাবে না। আল্লাহর ভরসায় জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করলাম। কিছুদিন বাদে সূর্যমুখী গাছের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমার হতাশাও কমতে থাকল। পুরো জমি সূর্যমুখী ফুলে ভরে গেল। অনেক বছর বাদে আমি আশার আলো দেখলাম। প্রথম ফলনে বেশ কয়েক মণ বীজ পেলাম।

কিন্তু কিছুদিন বাদেই নতুন সমস্যার মুখোমুখি হলাম। বীজ থেকে তেল বের করতে হবে। এতে লাভ বেশি। কিন্তু তেল ভাঙাতে যেতে হয় বাজারে। সে তো অনেক দূর। যাওয়া-আসা মিলিয়ে অনেক অসুবিধা। বাধ্য হয়ে আবার ব্র্যাক অফিসের সাহায্য চাইলাম। বললাম, আমাকে যদি একটা তেল ভাঙানোর মেশিনের ব্যবস্থা করেন, তাহলে আমার সঙ্গে গ্রামের অনেক কৃষকেরও উপকার হবে।

মো. আল আমিন শিকদারের নানা চড়াই-উতরাই পেরোনোর এ যাত্রায় পাশে ছিল তাঁর স্ত্রী। আর তাঁদের পাশে ছিল ব্র্যাক

সম্পর্কিত নিবন্ধ