মশার কয়েলের আগুনে মারা গেল ৪টি গরু, দগ্ধ আরও দুটি
Published: 11th, August 2025 GMT
টাঙ্গাইলের সখীপুরে মশার কয়েল থেকে লাগা আগুনে চারটি গরু পুড়ে মারা গেছে। এ সময় দগ্ধ হয়েছে আরও দুটি গরু। গতকাল রোববার গভীর রাতে উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামে শাহ আলম বেগ নামের এক কৃষকের গোয়ালঘরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
শাহ আলম বেগ বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল রাতে গোয়ালঘরে কয়েল জ্বালিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে প্রতিবেশীর চিৎকারে তাঁর ঘুম ভাঙে; দেখেন গোয়ালঘরে আগুন। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই চারটি গরু পুড়ে মারা গেছে। একটি গাভি দগ্ধ হয়ে গোয়ালঘর থেকে বাইরে চলে যায়। গুরুতর দগ্ধ আরেকটি গরুকে স্থানীয় লোকজন জবাই করেন। আগুন নেভাতে গিয়ে শাহ আলমও আহত হন। তাঁর দুহাত পুড়ে যায়। আনুমানিক ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
শাহ আলম আরও বলেন, মারা যাওয়া চারটি গরুর মধ্যে দুটি ষাঁড় গরু, একটি গাভি ও একটি বকনা বাছুর ছিল। তিনি কৃষি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। কীভাবে আমার সংসার চলবে, বুঝতে পারছি না।’
কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গরুকে খাওয়ানোর জন্য গোয়ালঘরে তুলা রেখেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, স্তূপ করে রাখা তুলার এক বস্তা জ্বলন্ত কয়েলের ওপরে পড়ে। সেখান থেকে গোয়ালঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শাহ আলমের পাশে দাঁড়িয়ে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার, আমরা তা করব।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ