গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা মামলায় ঢাকা থেকে আরেকজন গ্রেপ্তার
Published: 12th, August 2025 GMT
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আরমান হোসেন (৩২)। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডে মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর নগরের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খান।
গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেটের সামনে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই মো.
এ মামলায় গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন, জামালপুরের মেলান্দহ থানার মাহমুদপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে মিজান ওরফে কেটু মিজান (৩৪), তাঁর স্ত্রী পারুল আক্তার ওরফে গোলাপি (২৮), খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ময়লাপোতা এলাকার মো. হানিফের ছেলে আল-আমীন (২১), পাবনার ফরিদপুর উপজেলার সোনাহারা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে স্বাধীন, কুমিল্লার হোমনা থানার অনন্তপুর গ্রামের হানিফ ভূঁইয়ার ছেলে মো. শাহজালাল (৩২), পাবনার চাটমোহর থানার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের কিয়ামদ্দিন হাসানের ছেলে মো. ফয়সাল হাসান (২৩), শেরপুরের নকলা উপজেলার চিতলিয়া গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে সুমন ওরফে সাব্বির (২৬)।
আরও পড়ুনগাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা মামলায় ৭ আসামির দুই দিনের রিমান্ড০৯ আগস্ট ২০২৫পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে নীল শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা যাওয়া ব্যক্তির নাম মো. আরমান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাঁকে থানা–পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, নিহত তুহিনের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে বেলা তিনটায় পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলবেন।
আরও পড়ুনগাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিতের দাবি এমএসএফের০৯ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, তাহলে নিয়ে আসেন না কেন: দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রংপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের যে বিধিবদ্ধ আইন, তাতেও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একটা ব্যাপার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমরা যে অভিযোগ করব, তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়। আমরা যদি বলে থাকি, তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, কোথা থেকে করেছেন, কীভাবে করেছেন, এই অংশগুলো যদি প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনকি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’
সম্প্রতি রাজধানীতে এক সেমিনারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে। এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।
তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক বিবৃতিতে সরকার তাঁর (সাবেক সচিব) কাছে সব প্রমাণ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। সেটি আমাদের চোখে পড়েছে। এই সরকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া দরকার, এটা রাজনৈতিক সরকার নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি একেবারেই দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। এটা যদি তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের কেউ হন, সে ক্ষেত্রেও তিনি বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের এখানে কয়েকটি মামলা চলমান। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত যদি প্রমাণিত হয়, আমরা মামলা-মোকদ্দমায় চলে যাব।’
সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুদকের অভিযান প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান করছি। বিশেষ করে সেবা প্রদানকারী যেসব প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সেবা গ্রহিতাদের। আমরা অভিযান করছি, যাতে এই অভিযোগগুলো না হয়। ‘
পরে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারি কর্মকর্তাদের ও কর্মচারীদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। উপস্থিত আছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, পুলিশের রংপুরের রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, পুলিশ সুপার আবু সাইম প্রমুখ।