ইয়ামিন হত্যা মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল
Published: 12th, August 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.
আজকের শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই মামলায় মোট ১৫ জন আসামি, তাঁদের মধ্যে ৭ জন গ্রেপ্তার আছেন।
গত বছরের ১৮ জুলাই সাভারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন শহীদ হন। ওই সময় পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানের (এপিসি) ওপর থেকে তাঁকে টেনে নিচে ফেলে দেওয়ার ভিডিও তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ইয়ামিন রাজধানীর মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন এমআইএসটির ওসমানী হলে। বাসা ছিল সাভারের ব্যাংক টাউন আবাসিক এলাকায়।
আরও পড়ুন‘পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে একজন জীবন্ত মানুষকে এভাবে কোনো মানুষ ফেলে দিতে পারে না’১৪ আগস্ট ২০২৪গত ১১ মার্চ এ মামলার শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সাভারে ব্যাংক কলোনির সামনে এপিসি থেকে গুলিবিদ্ধ আশহাবুল ইয়ামিনকে টেনেহিঁচড়ে নিচে ফেলা হয়। আবার সেখান থেকে তাঁকে টেনে রাস্তার অন্য পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে তাঁকে থানায় আনা হয়। অত্যাচার করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ