চাঁদপুর সিটি কলেজের স্বীকৃতি স্থগিত করে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। ফলে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী বোর্ড অনুমোদিত যে কোনো স্কুল এন্ড কলেজে অথবা কলেজে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো.

নুরুন্নবী আলম স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্তৃক আরোপিত শর্তাবলী অনুসারে নিজস্ব জমিতে কলেজটি স্থানান্তর না হওয়া, এনটিআরসিএ সনদবিহীন শিক্ষক দ্বারা পাঠদান, অসন্তোষজনক ফলাফল, পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না থাকা এবং ভবনের বিপুল ভাড়া বকেয়া থাকায় মালিক কর্তৃক প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ রাখার বিষয়সমূহ বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন তাদের কাছাকাছি অন্য কলেজে স্থানান্তরের বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক) স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান নীতিমালা-২০২২ (সংশোধিত-২০২৩)-এর অনুচ্ছেদ ১১.০ অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পাঠদানের অনুমতি এবং একাডেমিক স্বীকৃতি স্থগিত করা হলো। 

চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস এলাকায় ২০১১ সালে চাঁদপুর সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন মো. সহিদুল ইসলাম। ২০১৫ সালে কলেজটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। 

২০২৪ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্ত করা হয়। ওই বছরের ১৮ আগস্ট কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ সহিদুল ইসলাম পদত্যাগ করেন। বর্তমান অধ্যক্ষ মোজাহারুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সহিদুল ইসলামকে জোর করে পদত্যাগ করানোর অভিযোগ ওঠে। সহিদুল ইসলাম কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহ দ ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ