বাবর–রিজওয়ানের ‘ঠেলাগাড়ি’ ওয়ানডেতেও চলছে না
Published: 13th, August 2025 GMT
প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেল! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি নেই বাবর আজমের। সর্বশেষ মুলতানে ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট এশিয়া কাপে নেপালের বিপক্ষে ১৫১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বাবর। এর পর থেকেই সেঞ্চুরিখরা শুরু। ইনিংসের হিসাবে ৭২ ইনিংস সেঞ্চুরিহীন পাকিস্তানের সাবেক এই ব্যাটসম্যান।
কাল রাতে ত্রিনিদাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে আউট হন ৯ রানে। এর আগের ইনিংসে করেছেন শূন্য। তাতে নতুন করে সমালোচনায় পড়েছেন বাবর। আর এই সমালোচনায় বাবরের সঙ্গী পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে রিজওয়ান আউট হন প্রথম বলেই, আগের ইনিংসে করেন ১৬ রান। শুধু কি তা–ই, ওয়ানডেতে দুজনের স্ট্রাইক রেট নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পরিসংখ্যানও সে পালে হাওয়া দিচ্ছে। উইজডেন জানিয়েছে, ২০২৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেট বাবর ও রিজওয়ানের।
সিলসের বলে আউট হন বাবর।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জওয় ন
এছাড়াও পড়ুন:
ব্র্যাক ব্যাংক যেভাবে মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে
ব্যাংক শব্দটি শুনলেই মনে ভেসে ওঠে ব্যস্ত ক্যাশ কাউন্টার, নানা ধরনের অ্যাকাউন্ট বা হিসাব, টাকার ভল্ট, ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ; আর সুদের যত জটিল হিসাবনিকাশ। তবে ব্র্যাক ব্যাংক এদিক থেকে কিছুটা ভিন্ন। শুধু আর্থিক লেনদেন নয়, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নত করতেও নীরবে কাজ করে যাচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক।
‘ব্র্যাক ব্যাংক অপরাজেয় তারা’ তেমনই একটি উদ্যোগ। উচ্চশিক্ষায় লিঙ্গবৈষম্য দূর করার লক্ষ্য সামনে রেখে শুধু নারী শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষাবৃত্তি দেয় ব্র্যাক ব্যাংক। ২০২৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রথম আলো ট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ব্র্যাক ব্যাংক মোট ৬৬৮ নারী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের অনেকেই সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধার মুখেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন এই বৃত্তির মাধ্যমে।
প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই সমাধান তৈরি করাও ব্র্যাক ব্যাংকের মানবিক দায়িত্ববোধের অংশ। এই বিশ্বাস থেকে স্বাস্থ্য খাতেও একাধিক অর্থবহ উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংকটি। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রতিবন্ধিতা ও প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সচেতনতা তৈরির কার্যক্রম। ব্র্যাক ব্যাংক ‘অপরাজেয় আমি’ নামে একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। তার আওতায় ঠাকুরগাঁও ও বগুড়া জেলায় গ্রামীণ হেলথকেয়ার সার্ভিসেসের সঙ্গে অংশীদারত্বে বিনা মূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের মাধ্যমে ১২ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে। এতে করে এই প্রান্তিক মানুষগুলো তাঁদের দৃষ্টির সঙ্গে ফিরে পেয়েছেন সামাজিক মর্যাদাও।
আমাদের বৃহৎ রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক খাত। পোশাকশিল্পের কারখানায় অনেক শ্রমিক দীর্ঘ সময় ধরে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা নিয়ে সেলাইয়ের কাজ করে যান। এটি তাঁদের উৎপাদনক্ষমতা ও জীবনমান কমিয়ে দেয়। এ বাস্তবতা বদলাতে ব্র্যাক ব্যাংক ‘অপরাজেয় আমি’ উদ্যোগের আওতায় ভিশনস্প্রিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি পোশাক এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানায় ১৩ হাজারের বেশি শ্রমিকের চোখের পরীক্ষা করিয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৮০০ শ্রমিক বিনা মূল্যে পেয়েছেন জীবনের প্রথম চশমা।
কিডনির অসুখ একটি যন্ত্রণাদায়ক ও ব্যয়বহুল রোগ। এ রোগে আক্রান্ত দরিদ্র রোগীদের পাশে দাঁড়াতে ব্র্যাক ব্যাংক ২০২৪ সাল থেকে সিলেটের কিডনি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ৪ হাজার ৭৮৮টি ডায়ালাইসিস সেবা দিয়েছে। পাশাপাশি সেখানে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টও স্থাপন করতে অর্থায়ন করেছে। ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেইস সেন্টারের মাধ্যমে ৩২৫ জন মানুষকে দেওয়া হয়েছে কৃত্রিম অঙ্গ বা ব্রেইস।
ব্র্যাক ব্যাংক বিশ্বাস করে, অন্তর্ভুক্তি মানে শুধু সহানুভূতি নয়, সুযোগ তৈরি করা। এই বিশ্বাস থেকে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন) ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ডেফের (বিএনএফডি) সঙ্গে অংশীদারত্বে কাজ করছে ব্র্যাক ব্যাংক। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ, শ্রবণপ্রতিবন্ধী নারীদের সেলাই ও পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বার্তা দিচ্ছে—সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ থেকে কেউই আর বাদ যাবে না।
গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের, বিশেষ করে নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসা ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। দেশে এসএমই ব্যাংকিংয়ের পথপ্রদর্শক হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে মিলে এক লাখ নারী উদ্যোক্তাকে অর্থায়ন ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে। এই নারীরাই এখন ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট চালাচ্ছেন, নিচ্ছেন ডিজিটাল ঋণ, প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এবং নিজেরাই গড়ে তুলছেন টেকসই ব্যবসা।
ব্র্যাক ব্যাংকের কৃষিকেন্দ্রিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের ২৬টি জেলায় ৩ হাজার ৩৩৫ জন কৃষক এখন সহজে ঋণ পাচ্ছেন। উইগ্রো ও আইফার্মারের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সহযোগিতায় ব্যাংকটি জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি কার্যক্রমকেও বাস্তব করে তুলছে। বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদা নিয়েও নতুনভাবে ভাবছে ব্র্যাক ব্যাংক। এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য চালু করা হয়েছে সাশ্রয়ী হোম লোন ‘ঠিকানা’। এর মাধ্যমে বড় শহরের বাইরের ২৯০ জন উদ্যোক্তা নিজেদের জন্য একটি স্থায়ী আবাস গড়ে তুলতে পেরেছেন।
ব্র্যাক ব্যাংক বিশ্বাস করে, সফলতার প্রকৃত মাপকাঠি সম্পদের পরিমাণে নয়; বরং দেশের ও মানুষের সমৃদ্ধির জন্য অবদানের মাধ্যমেই সফলতা নির্ধারিত হয়। জীবন বদলে দেওয়ার এমন অসংখ্য গল্প নিয়েই ২৪ বছর ধরে ব্যাংকিং খাতের শীর্ষস্থানে পৌঁছেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ইকরাম কবীর
হেড অব কমিউনিকেশন, ব্র্যাক ব্যাংক