Prothomalo:
2025-08-13@15:08:47 GMT

সাসপেন্সের কবি আলফ্রেড হিচকক

Published: 13th, August 2025 GMT

আমরা যেসব দিন পার করে এগোই, সেসব দিন সব সময় হারিয়ে যায় না। কিছু দিন আমরা হারিয়ে ফেলি বা আমরা হারাতে চাই বলে হারিয়ে যায়। সময়গুলো স্মৃতি হয়ে বিরাজ করে, ইতিহাস হয়ে জ্বলজ্বল করতে থাকে। মানুষ হিসেবে দিনের পর দিন আমাদের বর্তমানের মধ্যেও সেই অতীতকে তাই আমাদের বহন করতে হয়। আসলে যেই দিন আমাদের গেছে, তা একেবারে যায়নি। কিছু না কিছু রয়েই গেছে।

প্রতিনিয়ত কাজ করতে করতে মানুষ যেসব ধারা বা ডিসিপ্লিন দাঁড় করায়, সেসবও মুহূর্তের খেলা নয় কেবল। কালের ধারাবাহিকতায় সেসব ধারা আমাদের পর্যন্ত পৌঁছায়। তার ওপর ভিত্তি করেই নিজেদের সময়ে দাঁড়িয়ে সৃজনশীলতার মাধ্যমে আমরা বর্তমানকে নির্মাণ করে থাকি। যেমন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক স্যার আলফ্রেড জোসেফ হিচকক। তিনি চলচ্চিত্র ইতিহাসের প্রথম দিকের নির্মাতা। আমাদের বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্রে তিনি কীভাবে বিরাজ করেন? বোঝাই যায় যে কী প্রবলভাবে এখনো তাঁর কাজ আমাদের সময়ে প্রভাব রেখে যাচ্ছে। হিচকক শুধু আমাদের সাধারণ অভিজ্ঞতার সাদা–কালো বা কম রেজল্যুশনের সিনেমাগুলো না কিন্তু! তো বুঝতেই পারছেন, হিচকক আমাদের একজন সেই সব দিন, যেসব দিন সব সময় হারিয়ে যায় না।

হিচকককে ‘মাস্টার অব সাসপেন্স’ বলা হয়ে থাকে। তবে তাঁর সিনেমা কেবলই থ্রিল বা সাসপেন্স তৈরির হাতিয়ার ছিল না। তাঁর সিনেমায় দর্শক অন্য রকম এক মনস্তাত্ত্বিক যাত্রার মধ্যে ঢুকে পড়েন এবং সেই যাত্রার প্রধান সহযাত্রী আলফ্রেড হিচকক স্বয়ং।

আলফ্রেড হিচকক অত্যন্ত প্রভাবশালী ও স্মরণীয় একজন চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৮৯৯ সালের ১৩ আগস্ট লন্ডনে তাঁর জন্ম। পরিচালক হিসেবে ৫০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি ৫৩টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। প্রথম ২৩টি সিনেমা তিনি যুক্তরাজ্যে থেকে বানিয়েছেন, এরপর ১৯৩৯ সালে তিনি হলিউডে চলে যান। সেখানেই তিনি ৩০টি সিনেমা বানান এবং সর্বোচ্চ খ্যাতি অর্জন করেন।

আলফ্রেড হিচকককে ‘মাস্টার অব সাসপেন্স’ বলা হয়ে থাকে। তবে মোটাদাগে এই এক বাক্যে হিচকককে ধরে ফেলা একটু মুশকিলের ব্যাপার। তাঁর সিনেমা কেবলই থ্রিল বা সাসপেন্স তৈরির হাতিয়ার ছিল না। সচেতনভাবে লক্ষ করলে টের পাওয়া যায় যে তাঁর সিনেমায় দর্শক অন্য রকম এক মনস্তাত্ত্বিক যাত্রার মধ্যে ঢুকে পড়েন এবং সেই যাত্রার প্রধান সহযাত্রী আলফ্রেড হিচকক স্বয়ং। নিশ্চয়ই একটা দৃশ্য আপনাদের মনে পড়বে, ‘নর্থ বাই নর্থওয়েস্ট’–এ (১৯৫৯) একদম শুরুর দিকেই, টাইটেল সিকোয়েন্সে একটা লোক হন্তদন্ত হয়ে বাস ধরতে ছুটে যাচ্ছিলেন। মনে পড়ে, তাঁর মুখের ওপরই বাসের দরজা বন্ধ হয়ে যায়? এই ব্যর্থ বাসযাত্রীটিই আসলে হিচকক, যিনি আমাদের সঙ্গে রয়ে গেলেন তাঁর কাহিনি বলার জন্য; তাঁর সিনেমার দর্শক হিসেবে আমাদের নিজেদের ভয়, অনিশ্চয়তা ও নিয়ন্ত্রণহীনতার অনুভূতির মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য।

ব্যর্থ বাসযাত্রী হিচককের সেই দৃশ্য.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র সব দ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাসপেন্সের কবি আলফ্রেড হিচকক

আমরা যেসব দিন পার করে এগোই, সেসব দিন সব সময় হারিয়ে যায় না। কিছু দিন আমরা হারিয়ে ফেলি বা আমরা হারাতে চাই বলে হারিয়ে যায়। সময়গুলো স্মৃতি হয়ে বিরাজ করে, ইতিহাস হয়ে জ্বলজ্বল করতে থাকে। মানুষ হিসেবে দিনের পর দিন আমাদের বর্তমানের মধ্যেও সেই অতীতকে তাই আমাদের বহন করতে হয়। আসলে যেই দিন আমাদের গেছে, তা একেবারে যায়নি। কিছু না কিছু রয়েই গেছে।

প্রতিনিয়ত কাজ করতে করতে মানুষ যেসব ধারা বা ডিসিপ্লিন দাঁড় করায়, সেসবও মুহূর্তের খেলা নয় কেবল। কালের ধারাবাহিকতায় সেসব ধারা আমাদের পর্যন্ত পৌঁছায়। তার ওপর ভিত্তি করেই নিজেদের সময়ে দাঁড়িয়ে সৃজনশীলতার মাধ্যমে আমরা বর্তমানকে নির্মাণ করে থাকি। যেমন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক স্যার আলফ্রেড জোসেফ হিচকক। তিনি চলচ্চিত্র ইতিহাসের প্রথম দিকের নির্মাতা। আমাদের বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্রে তিনি কীভাবে বিরাজ করেন? বোঝাই যায় যে কী প্রবলভাবে এখনো তাঁর কাজ আমাদের সময়ে প্রভাব রেখে যাচ্ছে। হিচকক শুধু আমাদের সাধারণ অভিজ্ঞতার সাদা–কালো বা কম রেজল্যুশনের সিনেমাগুলো না কিন্তু! তো বুঝতেই পারছেন, হিচকক আমাদের একজন সেই সব দিন, যেসব দিন সব সময় হারিয়ে যায় না।

হিচকককে ‘মাস্টার অব সাসপেন্স’ বলা হয়ে থাকে। তবে তাঁর সিনেমা কেবলই থ্রিল বা সাসপেন্স তৈরির হাতিয়ার ছিল না। তাঁর সিনেমায় দর্শক অন্য রকম এক মনস্তাত্ত্বিক যাত্রার মধ্যে ঢুকে পড়েন এবং সেই যাত্রার প্রধান সহযাত্রী আলফ্রেড হিচকক স্বয়ং।

আলফ্রেড হিচকক অত্যন্ত প্রভাবশালী ও স্মরণীয় একজন চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৮৯৯ সালের ১৩ আগস্ট লন্ডনে তাঁর জন্ম। পরিচালক হিসেবে ৫০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি ৫৩টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। প্রথম ২৩টি সিনেমা তিনি যুক্তরাজ্যে থেকে বানিয়েছেন, এরপর ১৯৩৯ সালে তিনি হলিউডে চলে যান। সেখানেই তিনি ৩০টি সিনেমা বানান এবং সর্বোচ্চ খ্যাতি অর্জন করেন।

আলফ্রেড হিচকককে ‘মাস্টার অব সাসপেন্স’ বলা হয়ে থাকে। তবে মোটাদাগে এই এক বাক্যে হিচকককে ধরে ফেলা একটু মুশকিলের ব্যাপার। তাঁর সিনেমা কেবলই থ্রিল বা সাসপেন্স তৈরির হাতিয়ার ছিল না। সচেতনভাবে লক্ষ করলে টের পাওয়া যায় যে তাঁর সিনেমায় দর্শক অন্য রকম এক মনস্তাত্ত্বিক যাত্রার মধ্যে ঢুকে পড়েন এবং সেই যাত্রার প্রধান সহযাত্রী আলফ্রেড হিচকক স্বয়ং। নিশ্চয়ই একটা দৃশ্য আপনাদের মনে পড়বে, ‘নর্থ বাই নর্থওয়েস্ট’–এ (১৯৫৯) একদম শুরুর দিকেই, টাইটেল সিকোয়েন্সে একটা লোক হন্তদন্ত হয়ে বাস ধরতে ছুটে যাচ্ছিলেন। মনে পড়ে, তাঁর মুখের ওপরই বাসের দরজা বন্ধ হয়ে যায়? এই ব্যর্থ বাসযাত্রীটিই আসলে হিচকক, যিনি আমাদের সঙ্গে রয়ে গেলেন তাঁর কাহিনি বলার জন্য; তাঁর সিনেমার দর্শক হিসেবে আমাদের নিজেদের ভয়, অনিশ্চয়তা ও নিয়ন্ত্রণহীনতার অনুভূতির মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য।

ব্যর্থ বাসযাত্রী হিচককের সেই দৃশ্য

সম্পর্কিত নিবন্ধ