নেত্রকোনার বারহাট্টায় পারিবারিক কলহের জেরে ইঁদুরের বিষ পান করে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। তারা আড়াই বছর বয়সী এক শিশু সন্তান রয়েছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) এ আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান। 

নিহত রিয়া মনি (২৫) বারহাট্টা উপজেলার জয়কৃষ্ণ নগর গ্রামের সোহেল মিয়ার স্ত্রী এবং জয়পতাকা গ্রামের কমল মিয়ার মেয়ে।

আরো পড়ুন:

ময়মনসিংহ মেডিকেলের হোস্টেল থেকে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, চিরকুট জব্দ

জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যা: অভিযোগপত্রে নেই সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে স্বামী সোহেল মিয়ার সঙ্গে রিয়া মনির ঝগড়া হয়। পরে স্বামী মাছ ধরতে গেলে রিয়া মনি পূর্ব থেকে ঘরে রাখা ইঁদুরের বিষ পান করেন। বিষক্রিয়ায় অস্থির হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা প্রথমে তাকে টক জাতীয় খাবার খাওয়ায়। পরে বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা কমল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়েকে তার স্বামী সোহেল ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা আমার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছিল। আমার মেয়েকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে তারা। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।”

এ বিষয়ে রিয়া মনির স্বামী সোহেল মিয়া বলেন, “গতকাল রাতে আমার স্ত্রী আমাদের আড়াই বছরের ছেলেকে মারধর করে। তখন আমি তাকে বকাঝকা করি। সকালে মাছ ধরতে চলে গেলে সে ঘরে রাখা ইঁদুরের বিষ পান করে। পরে আমি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি, কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারিনি।”

বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, “ঘটনার পর রিয়া মনির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইবাদ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ই দ র র ব ষ প ন কর আম র ম য় ব রহ ট ট

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ