বাকি না দেওয়ায় গুলি করা সেই যুবক ছিলেন আ. লীগের সাবেক এমপির পিএস
Published: 13th, August 2025 GMT
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে বাকি না দেওয়ায় হোটেল মালিকের ছেলে ও এক নারীকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত গোলাপ প্রামাণিক (৩৬) ছিলেন গাইবান্ধা-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলছুম স্মৃতির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)। তবে, তিনি সরকারিভাবে নিযুক্ত পিএস ছিলেন না।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘‘গোলাপ আমার ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দিনমজুর তয়েজ উদ্দিনের ছেলে। গোলাপের বয়স যখন ৭ থেকে ৮ বছর, তখন সাবেক এমপি উম্মে কুলছুম স্মৃতি গোলাপকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। পরে এমপির বাড়িতেই বড় হন গোলাপ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গোলাপ এমপির বাড়িতেই বসবাস করতেন এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।’’
আরো পড়ুন:
প্রিজন সেল থেকে পালানোর ৬ দিন পর গ্রেপ্তার
গোপালগঞ্জে এনসিপির পথসভায় হামলা মামলায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা গ্রেপ্তার
আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘গোলপকে সন্তানের মতো লালন-পালন করতেন উম্মে কুলছুম স্মৃতি। গোলাপকে আমাদের গ্রামে একটি বাড়িও করে দিয়েছেন তিনি।’’
আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সম্প্রতি গোলাপ মাদক-চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের পাশাপাশি আমরাও তাকে ধরতে সব জায়গায় লোকজন প্রস্তুত রেখেছি। কোনোভাবে যেন তিনি পালিয়ে যেতে না পারেন।’’
এর আগে, বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের নাপিত বাজারে গুলির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- ওই বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চকদাড়িয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক আকন্দের ছেলে ওয়াসিম আকন্দ (২৮) এবং একই গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩০)। তারা গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একই এলাকার গোলাপ প্রামাণিক দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে আবু বক্করের হোটেলে যান। সেখানে চা-সিঙ্গারা খেয়ে দাম না দিয়ে চলে যেতে চাইলে তাদের বাধা দেন ওয়াসিম। এ সময় বাকি দেওয়া যাবে না বলে ওয়াসিম তাকে জানান। সেই সঙ্গে গোলাপের কাছে আগের বাকি টাকাও চান ওয়াসিম। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে গোলাপ তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে ওয়াসিমের পায়ে গুলি করেন। তাকে উদ্ধার করতে সেলিনা এগিয়ে গেলে তাকেও গুলি করেন গোলাপ। তাৎক্ষণিক এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে ফাঁকা গুলি ছুড়ে গোলাপ ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান।
সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘‘গোলাপকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনার সময় তিনি পিস্তল, বন্দুক নাকি অন্য অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া তার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি-না তা তদন্ত করা হচ্ছে।”
ঢাকা/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিটিভিতে আবার শোনা যাবে, ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি...’
প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ফিরছে নতুন কুঁড়ি। গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজস্ব পেজে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এই খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়েছেন—কারও মনে পড়েছে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার স্মৃতি, কারও মনে ভেসে উঠেছে শৈশবের প্রিয় অনুষ্ঠানটির দৃশ্য। ফেসবুকে অনেকে ছবিও শেয়ার করেছেন।
১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। অনুষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছিল কবি গোলাম মোস্তফার ‘কিশোর’ কবিতা থেকে। যার প্রথম ১৫ লাইন অনুষ্ঠানের সূচনাসংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় আবার শুরু হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। সে সময় বিটিভির অন্যতম আলোচিত এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চ। নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসা তরুণেরা গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্পবলা, কৌতুকসহ বিভিন্ন শাখায় নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। পরে নানা কারণে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় বিটিভি। ২০২০ সালে অনুষ্ঠানটি আবার শুরু করার খবর শোনা গিয়েছিল। কিন্তু পরে বলা হয়, কোভিড মহামারির কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি।
তিন দশকে নতুন অনেক তারকার জন্ম দিয়েছে নতুন কুঁড়ি। অনেকে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যাঙ্গন ও সংগীতজগতে নিজস্ব অবস্থান গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ আরও অনেকে। এ তালিকায় আছেন সামিনা চৌধুরীসহ অনেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীও।