সকল বৈষম্য দূর করা ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান র্ধমঘট পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক অবরোধ করে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন তারা। এ সময় শিক্ষকরা দুই ঘণ্টা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন।

পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোয়ার্টার সংস্কারসহ প্রাতিষ্ঠানিক সব সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

আরো পড়ুন:

রাকসুতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের প্যানেল ঘোষণা

রাবি উপাচার্যের বাসভবনে সাবেক ছাত্রদল নেতার তালা

অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেছেন, “আমাদেরকে জিম্মি করে অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা পোষ্য কোটাসহ প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পাচ্ছেন। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঞ্চিত। আজ আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটি নির্দিষ্ঠ সময় দেব। সে সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে যাব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড.

আব্দুল আলীম বলেছেন, “আজ ক্লাসরুমে থাকার কথা, কিন্তু আমাদের দাবি আদায়ের জন্য আজকে এখানে দাঁড়াতে হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আমাদের অধিকার। সেই অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে নিয়ে আমাদের আজকের এ আন্দোলন।”

প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেছেন, “সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বহাল থাকলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাতিল করা হয়েছে। এসব সুবিধা কার্যকর করা এখন সময়ের দাবি এবং এগুলো বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা অনড় থাকব। প্রয়োজন হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আমরা ফিরিয়ে আনব।”

১৭ আগস্টের মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়ে বেলা ১২টায় কর্মবিরতি স্থগিত করেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা- কর্মচারীরা অবস্থান ধর্মঘটে অংশ নেন।

ঢাকা/ফাহিম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ