আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি করে পালানো আল-আমিন গ্রেপ্তার
Published: 15th, August 2025 GMT
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি চালিয়ে বহুবার হাতছাড়া হওয়া মো. আল-আমিন (৩৮) এবার দুই সহযোগীসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়েছে। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা হলেন-রাজিব হোসেন (৩৮), মো.
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিষয়টি র্যাব-৪ থেকে জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে স্বাধীন: র্যাব
সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ৫
র্যাব সূত্রে জানা যায়, সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে সাভার থানার বালিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আল-আমিন এবং দেওয়নবাড়ী এলাকা থেকে জুয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজিব হোসেনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়।
অতীতে আল-আমিনকে গ্রেপ্তারে একাধিকবার অভিযান চালানো হলেও তিনি প্রতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তার ৩ জনই আন্তঃজেলা সন্ত্রাসী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দেশি-বিদেশি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি, বাড়ি চিহ্নিত করে হামলা এবং মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহনে ডাকাতি করে আসছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তাদের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইমাম শাফেয়ি (রহ.): আলেম কবি, তত্ত্বজ্ঞানী ইমাম ও উসুল শাস্ত্রের পথিকৃৎ
ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল-শাফেয়ি। কুরাইশ বংশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। তাঁর বংশধারা মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রপিতামহ আবদে মানাফের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চার মহান ইমামের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর আগে রয়েছেন ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালিক (রহ.)।
তিনি এক অসামান্য প্রতিভার অধিকারী, যিনি ফিকহ তথা ইসলামের আইনশাস্ত্রকে সুশৃঙ্খল রূপ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকের ‘মুজাদ্দিদ’ বা সংস্কারক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি ‘আর-রিসালা’ গ্রন্থ লিখে ‘উসুলে ফিকহ’ বা ইসলামি আইনশাস্ত্রের মূলনীতিগুলো লিপিবদ্ধ করেন।
তিনি ছিলেন ফিকহ, হাদিস ও তাফসির শাস্ত্রের ইমাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন উঁচু দরের সাহিত্যিক ও কবি। যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাঁর জ্ঞান ও প্রভাব আজও অম্লান।
জন্ম ও শৈশব১৫০ হিজরি সনের রজব মাসে (৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দ) ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই তাঁর বাবা ইন্তেকাল করেন। বাবার চেহারাটুকুও তাঁর স্মৃতিতে ছিল না।
তাঁর মা ফাতিমা বিনতে আব্দুল্লাহ ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। ছেলের বংশপরিচয় যেন হারিয়ে না যায়, সেই আশঙ্কায় তিনি দুই বছরের শিশু মুহাম্মদকে নিয়ে মক্কায় ফিরে আসেন। যেখান থেকে ইসলামের আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, মক্কার সেই পবিত্র ভূমিতেই তিনি বেড়ে ওঠেন।
জ্ঞানার্জন ও নিজেকে গড়ে তোলাকিশোর বয়সেই তাঁর জ্ঞানতৃষ্ণা প্রকাশ পায়। প্রচণ্ড দারিদ্র্য সত্ত্বেও তাঁর মা তাঁকে শিক্ষকের কাছে পাঠান। মাত্র সাত বছর বয়সেই তিনি সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে ফেলেন।
সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলতেন, ‘আমি এতিম ছিলাম, আমার মায়ের কোনো অর্থকড়ি ছিল না। শিক্ষক যখন কোথাও যেতেন, আমি তাঁর স্থানে অন্যদের পড়াতাম, আর তাতেই তিনি সন্তুষ্ট থাকতেন।’
অসাধারণ মেধা আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির ছটা তাঁর মধ্যে ছোটবেলা থেকেই দেখা যায়। তাঁর মা তাঁকে পবিত্র কাবার শাইখদের কাছে কোরআনের তাফসির শিখতে পাঠান। এরপর তিনি হাদিস শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়েন। তাঁর স্মরণশক্তি ছিল প্রবাদতুল্য।
ভাষার প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল প্রবল। তিনি আরবের বেদুইনদের কাছ থেকে বিশুদ্ধ আরবি ভাষা ও প্রাচীন কবিতা শিখতে আগ্রহী হন। কারণ, কোরআনের প্রকৃত অর্থ ও মর্ম বুঝতে হলে ভাষার অলংকার ও কাব্যশাস্ত্র জানা প্রয়োজন। তৎকালীন মিসরের ইমাম লাইস ইবনে সা’দ তাঁকে এই পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুনইমাম তাবারি: জ্ঞানী, দুঃসাহসী, মর্মান্তিক জীবন০২ নভেম্বর ২০২৫ইসলামি ক্যালিগ্রাফিতে লেখা ইমাম শাফেয়ির নাম