একটি প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে গলা টিপে হত্যা করার জন্য যা যা দরকার ছিল, স্বৈরাচার সরকার তাই করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা মো. নূরুল হক। তিনি বলেন, ‘‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় দেশে হাজার হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই সময়ে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পাশাপাশি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। আগের সরকারের আমলে সকল রেজিস্টার্ড স্কুল সরকারি হয়েছে। আর ইবতেদায়ী মাদ্রাসার অবস্থা কী তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’’

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল দাখিল মাদ্রাসার হলরুমে সদর উপজেলার মাদ্রাসা শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। 

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘বিগত সরকার চিঠি দেয়, নতুন করে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার কোড নম্বর দেয়া যাবে না। মাদ্রাসা বন্ধ। এর কারণ ছিল,  ইবতেদায়ী হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষার সাপ্লাই লাইন। সাপ্লাই লাইন যদি বন্ধ হয়, তাহলে উপরের লাইনটিও বন্ধ হয়ে যাাবে। বিভিন্ন জায়গায় বিল্ডিং দিয়েছে, এটা লোক দেখানো। উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে ছাত্র থাকবে না, তখন এই বিল্ডিং স্কুলে রূপান্তরিত করা হবে।’’ 

আরো পড়ুন:

যৌন হয়রানির তদন্ত: খুবি শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা

শহীদ সাজিদের শাহাদাতবার্ষিকীতে জবি শিবিরের আলোচনা সভা

তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের সন্তানেরা জীবন দিয়ে পরিবর্তন ঘটালো। যাকে আমরা বিপ্লব বলছি। আসলে আমরা কি বিপ্লব করেছি? আমাদের চিন্তাজগতে, ভাবনার জগতে, কর্মের জগতে আমাদের কোনো পরিবর্তন এসেছে? তাহলে তো বিপ্লব হয়নি। বিপ্লব মানেই পরিবর্তন। আপনি চব্বিশের আগস্টের আগে যা ভাবতেন, যা করতেন; এখনো যদি তা ভাবেন, আর করেন, তাহলে তো কোনো পরিবর্তন হয়নি।’’ 

পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবীর মো.

কামরুল হাসান, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীর মাওলানা ইকবাল হোসাইন, পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামিল মাদ্রাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ মাওলানা মো. মফিজউদ্দীন প্রমুখ। 

ঢাকা/নাঈম/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদর উপজ ল ইবত দ য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ